অন্তবর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহসিকতা ও দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আনসার বাহিনীর সদস্যরা থানাসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের ক্রান্তিকালে সড়ক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে বাহিনীর সদস্যরা শতভাগ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করেছে। দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ১৬টি আনসার ব্যাটালিয়ন সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৬ হাজার আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য এবং ১৩ হাজার হিল আনসার ও হিল ভিডিপি সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
তিনি বুধবার গাজীপুরের সফিপুর আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৪৫তম জাতীয় সমাবেশ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আনসার বাহিনীর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ ও আকস্মিক বন্যার সময় উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে আনসার সদস্যরা বিশেষ অবদান রেখেছেন। এছাড়া, বঙ্গবাজার ও নিউ মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের সময়ও তারা তৎপর ছিলেন। এছাড়াও তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানেও ভূমিকা রাখছে আনসার বাহিনী। ইতোমধ্যে ডিজিটাল ডাটাবেস তৈরি, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আধুনিকায়ন এবং বিটাকের সহায়তায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বাহিনীর মৌলিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে আধুনিক ও যুগোপযোগী নীতিমালার আওতায় আনা হয়েছে, যা তরুণদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সদস্যদের কল্যাণের জন্য নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে। বাহিনী প্রধানের নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আনসার ব্যাটালিয়নের ফ্রেশ রেশন ভাতা বৃদ্ধি, অঙ্গীভূত আনসারদের রেশন স্কেল উন্নয়ন এবং ভিডিপি সদস্যদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাহিনীর ১৫৬ জন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সদস্যকে ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন পদকে ভূষিত করা হয়। প্রধান অতিথি বাহিনীর চলমান সংস্কার কার্যক্রমের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে দক্ষতা বৃদ্ধির আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠাণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমুল গনি, বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদসহ সামরিক বেসামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাহিনীর বিভিন্ন পদবীর কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।