অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তি কারও করুণার বিষয় নয় বলে জানালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় রংপুর অঞ্চলের তিস্তাপাড়ের ১১টি স্থানে অবস্থান কর্মসূচিতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজকে সারা বিশ্বের মানুষ দেখে রাখুক, তিস্তাপাড়েরর এই মানুষগুলো পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত। আর সে কারণে আজ তারা এইখানে। মানুষের যে পানির অধিকার, সেই অধিকার দাবিতে এই সব মানুষ আজকে ‘‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’’ স্লোগানে গত দুই দিন ধরে আপনারা সবাই এখানে সমবেত হয়েছেন। ’

তিনি বলেন, ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের আয়োজন আজকে দুই দিনব্যাপী আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমাদের মূল নেতা, অনুষ্ঠানের সভাপতি আসাদুল হাবিব দুলুসহ বিএনপির অগণিত, লাখো নেতাকর্মীসহ, গণতন্ত্রের পক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ এই সমগ্র এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্ট মানুষ-জন, বিশেষ করে এই উত্তরাঞ্চলের সংগ্রামী জনগণের প্রতি রইল আমার অভিনন্দন। ’

তারেক রহমান বলেন, ‘প্রিয় ভাইয়েরা, উত্তরাঞ্চলের পানির ন্যায্য হিস্যা বঞ্চিত এই মানুষেরা আজকে সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চায় যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে ৫৪টি অভিন্ন নদী, এই নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তি, এটা কারও কোনো করুণার বিষয় নয়। এটি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রাপ্য। এটি বাংলাদেশের মানুষের প্রাপ্য। অথচ আমরা কি দেখছি, আন্তর্জাতিক নদী আইন তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য আজকে আমাদেরকে আন্দোলন করতে হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষকে তথা উত্তরাঞ্চলের মানুষকে আজ আন্দোলন করতে হচ্ছে। এই পানিবণ্টন নিয়ে আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে অপ্রতিবেশীমূলক আচরণ করেই চলেছে। ‘

তিনি বলেন, ‘আপনাদের সবার জানা আছে। আজকে প্রায় ৫০ বছর হলো ফারাক্কার অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পায় নাই। এখন আবার তিস্তা বাংলাদেশের জন্য আরও একটি অভিশাপ হিসেবে দেখা দিয়েছে। সব আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে আমাদের প্রতিবেশী (দেশ) উজানের গজলডোবায় একটি বাঁধ নির্মাণ করেছে, করে তিস্তার এই পানিপ্রবাহ তারা নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে। তাদের এই অপ্রতিবেশীমূলক আচরণের কারণে আজকে উত্তরাঞ্চলের লাখো-কোটি জনগণ বন্যায়, খরায় দুর্বিষহ জীবন পার করছে। ’

তারেক রহমান বলেন, ‘পানির অভাবে তিস্তার বুকে আজ ধুঁ ধুঁ বালুচর। একদিকে পানির অভাবে নষ্ট হচ্ছে হাজা হাজার কোটি টাকার ফসল, আবার কখনো হঠাৎ করেই, এই দেখুন, দুই দিন আগেও যেমন হয়েছে, হঠাৎ করেই উজান থেকে ছেড়ে দিচ্ছে পানি। আর সে পানিতে বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের ঘর-বাড়ি। কৃষকের আবাদি ফসল ভাসিয়ে দিচ্ছে। প্রত্যেক বছরে বন্যায়, কত বছর দুই-তিন বার বন্যা হয়েছে এই অঞ্চলে। বন্যার জন্য প্রতি বছর ভাঙন তো আছেই, নদীর ভাঙন। শস্যের যে ক্ষতি আছে, বছরে লক্ষ কোটি টাকার ফসল ক্ষতি হয়।’