আওয়ামী লীগকে নির্মূল করতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
আজ বুধবার রাজধানীর আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে তারুণের উৎসবে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা আসিফ বলেন, ‘বিচারসহ যেই বিষয়গুলো আছে সেগুলো সমাধান হওয়ার আগ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদিদের কিংবা আওয়ামী লীগের বাংলাদেশে নির্বাচন করার প্রশ্নটাই এখন অবান্তর। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গাতেই আমরা গণঅভ্যুত্থান বা বিপ্লবের পরে নজির দেখেছি, কিভাবে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ করা যায়! সেগুলোর আলোকেই কিভাবে আওয়ামী লীগের বিষয়টি সমাধান করা যায় সে বিষয়ে সরকার কাজ করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু নিষিদ্ধ করেই এমন একটি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম বন্ধ করা যায় না। অতীতেও আমরা দেখেছি। আওয়ামী লীগ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল কিন্তু পারেনি। আমরা শুধু নিষিদ্ধ না, আমরা মনে করি এমন একটি ফ্যাসিবাদি দল- যারা নাৎসিদের মত গণহত্যা চালিয়েছে। তাদের বাংলাদেশ থেকে নির্মূল করা উচিত এবং সেটা করার জন্য শুধু ঘোষাণা দিয়ে নয়, অবশ্যই আইনি প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা উচিৎ।’
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘একটি রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যেই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার কথা বলছি, সেই নতুন বাংলাদেশ আবারও পূর্বের ফ্যাসিবাদি সময়ের মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা ইতিমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছি- যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। যারা এর সঙ্গে জড়িত দ্রুতই আইনিভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যারা বিশৃঙ্খলা করছে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটা বিশেষ সময় অতিক্রম করছি। পুলিশকে যেভাবে জনগণের বিরুদ্ধে দাড় করিয়ে দিয়ে তাদের মনোবল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ফিরে মাঠে গিয়ে কাজ করা পুলিশের জন্য অনেক বেশি কঠিন ও চ্যালেঞ্জ। তারপরও আমরা পুলিশকে জনবান্ধব করার চেষ্টা করছি।’
উপদেষ্টা আসিফ আরও জানান, তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগাতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। তাই যোগ্যতা ও দক্ষতার মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, এ বক্তব্যের পরে তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিষয়টি নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে শুধু নিষিদ্ধ নয়, রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে।
এটাই আমার ব্যক্তিগত অবস্থান। এখন সেটা করার প্রসেস কি হবে, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে এমন নজির আছে। আমার চোখের সামনে ওদের গুলিতে ভাইদের শহীদ হতে দেখেছি। গুমের শিকার হয়েছি, মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখেছি। আওয়ামী লীগের রাজনৈতীক পূনর্বাসনের চিন্তাও আসা অসম্ভব। বিস্তারিত না বলায় আমিও ঠিকভাবে বুঝাতে পারিনি, কিছু কিছু মিডিয়াতেও বক্তব্য ভিন্নভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেবার কথা বলা হয়নি। বিচারের পূর্বে এই প্রশ্নই অবান্তর।
তবে এই প্রশ্নের একটা স্থায়ী সমাধানে পৌঁছাতে হবে, তা যদি না হয় তবে আজ বা কাল আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসার সুযোগ পাবে। আওয়ামী লীগ, জামাত কে নিষিদ্ধ করেছিল, তাতে কি জামাতের রাজনীতি করা আটকাতে পেরেছে? এটা যদি ইন্টিগ্রেটেড প্রসেসের মধ্য দিয়ে না হয় তাহলে সম্ভব হবে কিনা প্রশ্ন থেকে যায়। ১৬ বছরে সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত না হয়েও আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীর সংখ্যা অনেক।