ভারত বাংলাদেশের বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করছে। বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের এত মাথাব্যথা কেন? ভারত এখন শেখ হাসিনার দোসরদের বাগানবাড়িতে পরিণত হয়েছে। ভারতের সব অপকর্ম শেখ হাসিনা মেনে নিতেন। বিশ্বের সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমান্ত বাংলাদেশ-ভারত। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশিদের পাখির মতো গুলি করে মারলেও হাসিনা সরকার নীরব থাকতো ও পররাষ্ট্রনীতি মাথানত করে চলতো। ভারত মনে করতো হাসিনা তাদের একজন বিশ্বস্ত, অনুগত। শেখ হাসিনা ছিল দস্যু দলের সর্দারনি। যখন যা ইচ্ছে করেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের হত্যা করে রক্তাক্ত করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছে, ভারত তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

যেই যাই বলুক না কেন নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে কাজ করলে এবং সরকারের সদিচ্ছা থাকলে যথাসময়ে নির্বাচন সম্ভব হলেও মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা।

শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে রাজশাহী নগরীর ভুবন মোহন পার্কে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে রাজশাহীতে আহত ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শহীদ পরিবারদের সাথে সাক্ষাৎ ও দোয়ার এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যদি সঠিকভাবে কাজ করে তাহলে ডিসেম্বর নয়, জুন-জুলাইয়ে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব। এটি নিয়ে গড়িমসি করলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জনগণের অনাস্থা আসবে।’

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা কেন কঠিন, এ প্রশ্ন তুলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এখনও ৯-১০ মাস সময় আছে। নির্বাচন কমিশন যদি চায়, তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব। কারণ, নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। সরকার সহায়তা করবে।’

রিজভী বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার মনে করি, আমরা মনে করি এই সরকারই জাতীয় নির্বাচন দেবেন। জনগণ নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে রয়েছে।’ জাতীয় নির্বাচনের আগে অন্য কোনও নির্বাচন নয় বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা।

রিজভী বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন, গণপরিষদ নির্বাচন করতে হবে। ভাই, আমরা তো এটা বুঝতে পারছি না। গণপরিষদ করতে হয় এই কারণে তার মাধ্যমে একটা সংবিধান রচনা করা হয়। আমাদের তো সংবিধান আছে। শেখ হাসিনা সংবিধানে অনেক ধরনের ফ্যাসিবাদী আইনকানুন যুক্ত করেছেন। কিন্তু এটা তো সংশোধনের বিধান আছে। অনেকবার সংশোধন হয়েছে। তো গণপরিষদ আসছে কেন? এই কথাগুলো বিভ্রান্তি তৈরি করছে।’

আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দরকার, তারপরে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। সংস্কার তো চলমান ধারা। এটা চলবে যাতে কোনোদিন কোনও ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিতে না পারে। বাপেরই জন্ম হলো না, তো সন্তান জন্ম হবে কী করে? আগে জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে হলে আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আমরা বিএনপি পরিবারের সভাপতি আতিকুর রহমান রুমন। স্বাগত বক্তব্য দেন সদস্যসচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা আবুল কাশেম, মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, আশরাফ উদ্দিন বকুল, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা প্রমুখ।