বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের চিতলমারীতে জমি সংক্রান্ত পূর্বশত্রুতার জেরে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে একদল দুর্বৃত্ত। স্থানীয়রা ওই শিক্ষার্থীকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। এ ঘটনায় ৬ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে চিতলমারী উপজেলার রায়গ্রামের বাঁশতলী খালের পূর্বপাশের একটি মৎস্য ঘেরে।
ভুক্তভোগী দীপক মণ্ডল (৫০) জানান, কয়েক যুগ ধরে তিনি ওই ঘেরটি ভোগদখল করে আসছেন। তবে মৃত কিরণ মৃধার ছেলে ননী গোপাল মৃধার পরিবারের সঙ্গে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মামলাকর্যক্রম চলছিল। সর্বশেষ একটি মামলায় প্রতিপক্ষের অনুকূলে রায় আসার পর তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করেন এবং জমির ওপর স্থগিতাদেশ পান।
এরপরও প্রতিপক্ষ ঘের দখলের চেষ্টা চালায় এবং হুমকি দিতে থাকে বলে দাবি করেন দীপক মণ্ডল। এ বিষয়ে বাগেরহাটের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) পুলিশ সার্কেল এএসপি উভয় পক্ষকে ডেকে বৈঠক করেন এবং আদালতের স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে বলে জানান।
এর পরদিনই আদালতের আদেশ ও পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে অভিযুক্ত অসীম মৃধার নেতৃত্বে ননী গোপাল মৃধা (৬০), বিকাশ মৃধা (৩৫), বিনয় মৃধা, সাগরিকা মৃধা (২৯) ও চুমকি মৃধা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘের দখল করতে যায়।
দীপক মণ্ডলের স্ত্রী ও তাদের ছেলে পল্লব মণ্ডল (১৭)—স্মৃতি ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী—ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান, ঘেরের মাছ ও গাছপালা নষ্ট করছে প্রতিপক্ষের লোকজন। তিনি মোবাইল ফোনে ঘটনার ভিডিও করতে গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে ঘেরের পাশেই মারধর করে ও খালে নিয়ে পানিতে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
স্থানীয়রা পল্লবকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
অভিযুক্ত অসীম মৃধা দাবি করেন, তার মা গীতা মৃধাকে মারধর করেছে পল্লব। তবে পল্লবের মা বলেন, তার ছেলে যখন মার খাচ্ছিল, তখন গীতা মৃধা বাধা দিতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে আঘাত পান।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”