2দৈনিক বার্তা: পুলিশের আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছেন, জামায়াত  নেতা  দেলাওয়ার  হোসাইন সাঈদীর রায়কে  কেন্দ্র করে  যে  কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি  মোকাবেলা করতে পুলিশ প্রস্তুত। তাছাড়া এ ব্যাপারে পুলিশের পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতাও রয়েছে। তিনি বলেন, হামলা করে দুর্বৃত্তরা পুলিশকে অভিযান  থেকে বিরত রাখার  চেষ্টা করেছিল। কিন্তু  দেশপ্রেমের কারণে পুলিশ  দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে।

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানার নতুন ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।হাসান মাহমুদ বলেন, আত্মত্যাগ ও দৃশ্যমান তৎপরতার কারণে জঙ্গী তৎপরতা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। বিগত এক বছরে  দেশব্যাপী সহিংসতায় পুলিশের ১৭ জন সদস্য নিহত এবং তিন হাজারের মতো সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

আইজি আরো বলেন, মাদক বিরোধী অভিযানে অল্প কিছুদিনের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে। জামায়াত নেতা  দেলাওয়ার  হোসেন সাঈদীর রায়ের পর জামায়াত-শিবির সহিংসতা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অতীতের মত কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ মহাপরিমদর্শক (আইজি) হাসান মাহমুদ খন্দকার।

পাহাড়তলী থানার নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আইজি বলেন, সাঈদীর রায়ের পর নাশকতা, সহিংসতাসহ সব ধরনের সম্ভাবনা মাথায়  রেখেই আমরা কাজ করছি। অতীতেও এ ধরনের কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় আমরা সফল হয়েছিলাম। শুধু সাঈদীর রায়ের পর নয়,  যে কোন ধরনের নাশকতা মোকাবেলায় পুলিশের যা করণীয় তা করা হবে। এক্ষেত্রে পুলিশ অতীতের মত কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করব।

অপহরণকারীরা ধরা পড়েনা  কেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অপহরণকারীরা ধরা পড়েনা এমন বিষয় সত্য নয়। অপহৃতদের উদ্ধার করা হচ্ছে, অপহরণকারীদেরও  গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।

আবু বকর সিদ্দিক এবং মৃদুল  চৌধুরীর অপহরণকারীরা ধরা পড়ছেনা  কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত টিম করে  দেয়া হয়েছে। তদন্ত টিমের সদস্যরা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন। অচিরেই সত্য উদঘাটিত হবে বলে আশা করছি।

এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার নির্বাচন পূর্বাপর বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় পুলিশ সদস্য হতাহতের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, কিছুদিন আগে  দেশে যে সহিংসতা হয়েছে, তা  মোকাবেলা করতে গিয়ে জনস্বার্থে ১৭ জন পুলিশ সদস্য আত্মাহুতি দিয়েছেন। তিন হাজার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিন’শরও  বেশি পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়ে এখনও চিকিৎসাধীন আছেন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর এতবড় আত্মত্যাগ পুলিশ বাহিনী ছাড়া আর  কোন বাহিনী কিংবা বিভাগ করেনি। এটা আমাদের জন্য একদিকে অনেক দু: খের, অনেক কষ্টের আবার অনেক গর্বের। আমরা চরম আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছি  যে, জনসেবায় পুলিশ কোন গাফেলতি করবেনা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গীবাদী তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে আছে, অনেক ক্ষেত্রে দমনেও আমরা সক্ষম হয়েছি। বর্হিবিশ্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক  মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন  চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে পুলিশের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য কোন মানসম্মত স্কুল নেই।  সেনাবাহিনীর  যেমন আছে, পুলিশকেও সেই ধরনের মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া পুলিশ সদস্যদের এবং তাদের সন্তানদের আধুনিক ও কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।

নগর পুলিশ কমিশনার মো.শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার  মো.আবদুল্লাহ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নওশের আলী, সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার  নেছার আহমেদ, চসিকের কাউন্সিলর মোরশেদ আক্তার  চৌধুরী, নারীনেত্রী আবিদা সুলতানা।