মিজানুর রহমান/দৈনিক বার্তা –উগ্রপন্থী জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টীমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানীসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে বরগুনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে (দন্ডবিধির ২৯২/১২৪-ক ধারায়) দায়েরকৃত একটি মামলায় গতকাল সোমবার অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কাজ শুরু হয়েছে। বরগুনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবু শামীম আজাদ এ বিচারকাজ পরিচালনা  করেন। এসময় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান বাহাদুরসহ আসামী পক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। আসামী পক্ষের আইনজীবীরা তাদের জামিনের জন্য আবেদন করলে তা নাকোচ করে দেয় আদালত। পরে সকল আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আগামী ১৬ই জুন পরবর্তী সাক্ষীর তারিখ ধার্য্য করা হয়। গতকাল সোমবার সকাল ১০ টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানীসহ  তিনজনকে আদালতে হাজির করা হয়। গতকাল সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গন ও এর আশেপাশে এ উপলক্ষ্যে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করা হয়। বেলা ১১টার দিকে মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানীসহ তিনজনকে পূণরায় জেল হাজতে পাঠানো হয়।
২০১৩ সালের ১২ আগষ্ট বরগুনা শহরের উপকন্ঠে দক্ষিণ খাজুরতলা গ্রামের একটি বাড়িতে বৈঠককালে মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানীসহ ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করে বরগুনা থানার পুলিশ। মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানি মারকাজুল উলুম আল ইসলামিয়া নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। এই মারকাজুলের অধীনে তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকায় একটি মাদ্রাসা ও মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে ধর্মীয় উগ্র মত্রবাদ প্রচার করে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মুফতি জসীমুদ্দীন বরগুনা সদর উপজেলার দক্ষিণ হেউলিবুনিয়া গ্রামের মৃত নূর হাওলাদারের ছেলে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে চতুর্থ জসীমুদ্দীন বরগুনা শহরের ইসলামিয়া হাফেজী মাদ্রাসা থেকে হাফেজী পাশ করে  ঢাকার লালবাগে শায়খুল হাদিস আজিজুল হক প্রতিষ্ঠিত জামেয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে ১৯৯০ সালে প্রথম দাওড়া ( মাওলানা) পাশ করেন। এরপর তিনি ভারতের দেওবন্দে পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তীতে হায়দ্রাবাদের সাবেলুস সালাম মাদ্রাসা থেকে মুফতি (ইফতা ) পাশ করেন। এরপর তিনি ঢাকা ও বরিশালের দু’টি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। ২০০৪ সালে তিনি বরগুনা কেন্দ্রীয় সদরঘাট জামে মসজিদে প্রধান খতিব হিসেবেও চাকরি করেন।
মুফতি জসীমুদ্দীন রাহমানি একজন ধর্মীয় উগ্রবাদী বক্তা হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেন। ঢাকার লালবাগে মারকাজ মসজিদে তিনি প্রত্যেক শুক্রবারের জুমার দিনে বতৃতা (খুতবা) দেন এবং বতৃতায় ধর্মীয় জঙ্গিবাদকে উসকে দেওয়ার মতো ফতোয়া দিতেন। তিনি জমিয়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ও হরকাতুল জিহাদের চেয়েও উগ্রপন্থী আরেকটি গোষ্ঠী আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে একটি সংগঠনের    আধ্যাত্মিক নেতা ও প্রধান ।