1দৈনিক বার্তাঃ বান্দরবানে সমুদ্রপৃষ্ঠ  থেকে প্রায় ৩ হাজার ফুট উঁচু পর্বতমালার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্য নির্মিত সড়ক উদ্বোধন করলেনযোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।শুক্রবার  বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চিম্বুক পাহাড় এলাকায় নির্মিত চিম্বুক-থানচি সড়কটি উদ্বোধন কনে তিনি।বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের পাদদেশে ৯৩  কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫৩ কিলোমিটার  দৈর্ঘ্যরে সড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ  সেনাবাহিনীর ১৬ ও ১৭ ইসিবি ও সড়ক বিভাগ। অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী মুস্তফা কামাল বিশেষ অতিথি ছিলেন।

এতে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল ওহাবের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সেনা প্রকৌশল নির্মাণ কোরের প্রধান প্রকৌশলী মেজর জেনারেল আবদুল কাদির, বান্দরবান সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী,পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লা, জেলা প্রশাসক কেএম তারিকুল ইসলাম,পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য্য এবং সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এম আবদুল কুদ্দুছসহ উর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

যোগাযোাগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন,বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন কার্যক্রমকে অতিগুরুত্বের সাথেই দেখছে। এ সরকারের মেয়াদেই এ শান্তি চুক্তির পুরো বাস্তবায়ন কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।

তিনি বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের তিন জেলাকে নিবিড় সড়কযোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে অবশিষ্ট উন্নয়ন কর্মকান্ড দ্রুতবাস্তবায়নের উদ্যোগনেয়া হয়েছে।তিনি বান্দরবান-কেরানিহাট সড়কের সম্প্রসারণের মাধ্যমে ক্রমশ এশিয়ান হাইওয়েজের সাথে যুক্ত করার আশ্বাস প্রদান করেন।

সেনা প্রকৌশল নির্মাণ ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, ৫৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ, ৪২ মিটার দীর্ঘ আয়তনের ৬টি পাইপ কালভার্ট, ২৯০ মিটার দীর্ঘ আয়তনের ৫টি বেইলী সেতু এবং ২১৬ দশমিক ৪৪ মিটার দীর্ঘ একটি আরসিসি সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯৩কোটি ৮৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা। সড়ক ও জনপথ বিভাগের পরামর্শে ১৬ ও ১৭ সেনা প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়নের সৈনিকরা দেশের অন্যতম সুউচ্চ পাহাড়ের ওপর(২০০০-৩০০০ফুট উঁচুতে) এ নতুন সড়কপথ নির্মাণ করেন। এ সড়ক নির্মাণের সময় পাথর চাপায় নিহত হন সেনা সার্জেন্ট আবদুস সাত্তার। এ সড়ক পথ নির্মাণ কাজ শুর“ হয়ং ১৯৯৩ সালের অক্টোবর মাসে এবং কাজ শেষ হয় ২০১২ সালের জুন মাসে।

যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সেনা প্রকৌশল নির্মাণ ইউনিট থানছি-আলীকদম, পোয়ামুহুরী, তিন্দু, লিক্রেঝিরি, রেমাক্রি ও বড়মদক এলাকাসমুহে সড়কপথ নির্মাণ কাজ করছে।

যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ৩ হাজার ফুট উঁচুতে নির্মিত এ সড়কটি বান্দরবানের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে পাল্টে দিয়েছে। পর্যায়ক্রমে পার্বত্যাঞ্চলের সবগুলো দূর্গম এলাকার সড়ক নির্মাণ এবং বর্তমান সরকারের আমলেই দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা হবে।সড়কটির নির্মাণের ফলে এসব এলাকার অধিবাসীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সাংস্কৃতিক বিকাশসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে,কক্সবাজারের রামু উপজেলায় নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ  গৌতম বুদ্ধ মূর্তি পরিদর্শন করেছেন  যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

শুক্রবার দুপুরে একটি বিশেষ  হেলিকপ্টারযোগে রামু রাবার বাগান সংলগ্ন হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন দুই মন্ত্রী।প্রথমে তারা ১০০ ফুট দীর্ঘ  গৌতম বুদ্ধ মূতি পরিদর্শন করতে উত্তর মিঠাছড়ি বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে যান।সেখানে  বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় মন্ত্রীদ্বয় বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা  কেন্দ্রে স্থানীয়  নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

মতবিনিময়কালে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা প্রশাসক  মো. রুহুল আমিন, রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইকুল আহাম্মদ ভূঁইয়া, অধ্যক্ষ করুণাশ্রী  থের, রামু সীমা বিহারের সাধারণ সম্পাদক তরুণ বড়–য়া, বুদ্ধিস্ট  ফেডারেশনের সহ-সভাপতি দুলাল বড়–য়া,  বৌদ্ধ নেতা পলক বড়–য়া আপ্পু, নিতীশ বড়–য়া, সুরেশ বড়–য়া বাঙ্গালী, শিপন বড়–য়া, জয় বড়–য়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।পরে  যোগাযোগ মন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রী রামু  কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার প্রাক্তন সভাপতি সত্যপ্রিয় মহাথের’র সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।