জীবনের ঝুকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,৪অক্টোবর : মহাসড়কে যানজট ও ধীরগতি,ট্রেনের সময়সূচিতে বিপর্যয়, লঞ্চ টার্মিনালে পৌঁছানো ও লঞ্চে ওঠার আগ পর্যন্ত ভোগান্তি্ত এসব সঙ্গী করে ঈদে ঘরমুখী মানুষ শনিবার রাজধানী ঢাকা ছেড়েছে৷ যাত্রা-পূর্ব ও পথের কষ্ট- ভোগান্তি সত্ত্বেও তাঁরা বাড়ি যাচ্ছেন আনন্দ নিয়ে৷ প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে৷সড়কপথে আগের পাঁচ দিনের মতো শনিবার ও সবচেয়ে দীর্ঘ যানজট ছিল ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে৷ ফলে উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েক জেলা, টাঙ্গাইল ও বৃহত্তর ময়মনসিংহের একাংশের যাত্রীদের ভোগান্তি-কষ্টও বেশি৷ ছিল পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া ও মাওয়া ঘাটকেন্দ্রিক যানজট৷ ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়৷ অবশ্য ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এমন ভোগান্তি ছিল না৷ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে কিছু ধীরগতি থাকলেও জট ছিল না৷

আগের দিনও প্রায় ঠিক থাকা ট্রেনের সময়সূচিতে শনিবারও বিপর্যয় ঘটে৷ ট্রেনগুলো ছেড়েছে নির্ধারিত সময়ের দুই থেকে ছয় ঘন্টা পর্যন্ত বিলম্বে৷ ট্রেনগুলোর যাত্রীতে গাদাগাদি থাকা বগির ছাদেও ছিল অনেক যাত্রী৷ লঞ্চে অবস্থা এর চেয়ে ভালো হলেও যাত্রীদের জিরো পয়েন্টের সামনে থেকে তীব্র যানজট ঠেলে পৌঁছাতে হয়েছে সদরঘাট টার্মিনালে৷ এরপর ঝক্কি পোহাতে হয় লঞ্চে উঠতে৷ এত কিছুর পরও অধিকাংশ মানুষের মুখে ছিল হাসি-আনন্দ৷

বিপুল মানুষ ঢাকা ছাড়ায় ফাঁকা হয়ে গেছে রাজধানী৷ টার্মিনাল, পশুর হাট ও বিপণিবিতানমুখী সড়ক ছাড়া নগরের অন্য সড়কগুলো এখন যানজটমুক্ত৷পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে ঘরমুখী মানুষের মূল চাপ শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে৷ মহাসড়কগুলোতে বেড়েছে যানবাহনের চাপ৷ গতকাল এই চাপ আরও বেড়েছে৷ মহাসড়কে জটের প্রভাবে যাত্রার সময়েও বিলম্ব ঘটেছে৷ কোনো কোনো বাস নির্ধারিত সময়ের দুই-আড়াই ঘন্টা পরে পছড়েছে৷ এতে বাস টার্মিনাল ও কাউন্টারগুলোতে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে যাত্রীদের৷ পরিবহনমালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা গেছে৷

সদরঘাট: রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও ভিড় করেছেন ঘরমুখো মানুষ ৷ যাত্রী বোঝাইয়ের সাথে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন লঞ্চ৷ শনিবার সকাল থেকে সদরঘাট টার্মিনালে বাড়তে থকে ঘরমুখো মানুষের চাপ৷ টার্মিনালে অনেকেই অপেক্ষা করেন ভোর থেকেই৷ এদিকে যাত্রী বোঝাইয়ের সাথে সাথেই ছেড়ে যাচ্ছে লঞ্চগুলো ৷ আর যাত্রী বেশী থাকায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস৷ প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়ছে মানুষ৷ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম লঞ্চ৷ বৃহস্পতিবার সকালে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ছিল ঘরমুখো মানুষের ভিড়৷ লঞ্চঘাটে হকার ও কুলিদের দৌরাত্ম্য এবং লঞ্চে কাঙি্ক্ষত আসন না পাওয়ায় কিছুটা দুর্ভোগ পোহালেও প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করবেন সেই আনন্দে উদ্বেলিত সবাই৷

বিআইডবি্লউটিএ সূত্রে জানা যায়, সকাল থেকেই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ভিড় লক্ষ করা যায়৷ লঞ্চ ছাড়ার নির্ধারিত সময় রাতে হলেও অনেকে কাক্ষিত আসন পেতে সকাল থেকেই সদরঘাটে এসেছেন৷দক্ষিণাঞ্চলগামী এসব লঞ্চে ছাদে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হয়৷ অনেক লঞ্চে মাঝপথে নৌকা থেকে যাত্রী তোলা হয়৷ এ ছাড়া আমতলী, ভোলা ও বরগুনাসহ বেশ কয়েকটি রুটে লঞ্চ-সংকটের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা৷পটুয়াখালীগামী এমভি বাগেরহাট-২ লঞ্চের যাত্রী শাহ আলম মিয়া জানান, সকাল থেকে যানজট উপেক্ষা করে টার্মিনালে এসেছেন৷ টার্মিনালে এসে যাত্রীদের ভিড় দেখে লঞ্চে উঠতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন তিনি৷ তবে লঞ্চে উঠতে পেরেই সন্তুষ্ট তিনি৷

এদিকে, অন্যদিকে,লঞ্চগুলো যাতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করতে পারে সেজন্য আইন শৃংখলা বাহিনী রয়েছে সর্তক৷পবিত্র ঈদুল আজহা ও শারদীয় দূর্গোত্‍সব উপলক্ষে বৃহস্পতিবার থেকে বরিশাল-ঢাকা নৌ-পথে শুরম্ন হচ্ছে লঞ্চের বিশেষ সার্ভিস৷ এবারে প্রধান দুটি উত্‍সব কাছাকাছি হওয়ায় এই রুটে ১৮টি লঞ্চ চলাচল করবে৷ এই বিশেষ সার্ভিস চলবে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত৷বরিশাল বিআইডবি্লউটিএর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ পরিচালক আবুল বাসার মজুমদার জানান, পূজা এবং কোরবানী একত্রে হওয়ায় এবারে বরিশাল অঞ্চলে ৪ লাখের বেশী যাত্রী কর্মস্থল থেকে ঘরে ফিরবেন৷ তাদের কথা বিবেচনা করে নিয়মিত ৪টি লঞ্চ মিলিয়ে মোট ১৮টি লঞ্চের ব্যাবস্থা করা হয়েছে৷

টার্মিনালে যাত্রীদের অপেক্ষা: মহাসড়কে যানজটের কারণে বাস আটকে থাকায় গাবতলী, মহাখালী বাস টার্মিনাল ও বিভিন্ন বাসের কাউন্টারে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে যাত্রীদের৷ যাত্রীর তুলনায় বাস কম থাকায় অপেক্ষা দেখা গেছে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ও এর আশপাশের কাউন্টারগুলোতে৷সায়েদাবাদে সকাল ১০টার দিকে বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রী সায়মা রহমান বললেন, তিনি যাবেন চট্টগ্রামে৷ তাঁর বাস ছাড়ার কথা ছিল সকাল সোয়া নয়টায়৷ এখনো বাস আসেনি৷সায়েদাবাদে এস আলম কাউন্টারের কর্মী রাশেদ বললেন, বাসগুলো ধীরগতিতে আসছে৷ এ জন্য সময়সূচি সামান্য এদিক-ওদিক হচ্ছে৷এর পরও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রীরা ছিলেন স্বস্তিতে৷ কারণ, বাস ছাড়তে দেরি হলেও পথে যানজট ছিল না৷ ধীরগতি ছিল৷

মহাখালীতে ময়মনসিংহগামী এনা পরিবহনের চালক শামসুল ইসলাম বললেন, উত্তরা পর্যন্ত কোনো যানজট নেই৷ তবে আবদুল্লাহপুর থেকে গাড়ির গতি খুব কম থাকে৷ এ জন্য ওই পথের গাড়িগুলোর গন্তব্যে আসতে অতিরিক্ত সময় লাগছে৷ওই পথের কয়েকজন চালক জানান, গাজীপুর- কোনাবাড়ী রোড ও গাজীপুর চৌরাস্তা পেরোতেই সময় বেশি লাগে৷উত্তরবঙ্গের এসআর পরিবহনের এক চালক বললেন, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল৷ এ কারণে তাঁর আসতে অতিরিক্ত তিন ঘন্টা লেগেছে৷শ্যামলী পরিবহনের উত্তরবঙ্গ (বগুড়া অঞ্চল) ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার জানান, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের ৬০টির মতো কোচ যানজটে আটকে পড়ায় সকালেও বগুড়ায় পৌঁছেনি৷ পবিত্র ঈদুল-আজহা আসতে আর মাত্র একদিন বাকি৷ তবুও শনিবার সায়েদবাদ বাস টার্মিনালে ভিড় দেখা গেছে ঘরমুখো মানুষের৷ তবে এদিন ঢাকার আশে পাশের জেলার যাত্রীদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা যায়৷সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা যাতায়াত করে থাকেন৷ এই টার্মিনালের পরিবহণ সংশ্লিষ্টরা জানায়,রোববার সকাল থেকে কিশোরগঞ্জ,কুমিল্লা,ফেনী, নোয়াখালী,মৌলভীবাজার ও সিলেটের যাত্রীদের যাতায়াত ছিল বেশি৷অন্যদিকে, চট্টগ্রাম ও দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের ভিড় তেমন নেই বলেও জানান তারা৷ এসব এলাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ গাড়ি রয়েছে বলেও জানান বাস কাউন্টারে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা৷

একটি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানীর টিকেট বিক্রেতা মো. ফারুক বলেন, ঢাকার আশেপাশের জেলার যাত্রীদের যাওয়ার সংখ্যা বেশি৷ অনেকেই পরিবারের একাধিক সদস্যদের নিয়ে সকাল থেকে ভিড় করছেন টার্মিনালে৷গাড়িও পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে জানিয়ে তিনি জানান, তবে চট্টগ্রাম, কঙ্বাজার, বান্দরবান ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীদের সংখ্যা কম৷ নোয়াখালী যাওয়ার উদ্দেশ্যে সায়েদাবাদ টার্মিনালে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জলিল আহমেদ৷তিনি বলেন, বাড়িতে ইতোমধ্যে গরু কেনা হয়েছে৷ আমরা যারা ঢাকায় বসবাস করি ব্যবসায়িক কর্মব্যস্থতার কারনে ঈদের আগ মূহুর্তে যেতে হচ্ছে৷ঈদের এক দিন বাকি থাকলেও বাস কাউন্টারে এসে গাড়ি পেতে কোন ভোগান্তি পোহাতে হয়নি বলেও জানান তিনি৷

মহাখালী:শনিবার সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করে দেখা যায়, কয়েক’শ যাত্রী টার্মিনালটিতে বাসের জন্য অপেক্ষা করেছেন৷ তবে কাউন্টার কর্তৃপক্ষের দাবি টার্মিনালটিতে যাত্রীদের চাপ অনেক কমে েেগছে৷

তারা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই রাজধানীর এই বাস টার্মিনালটি থেকে দল বেধে ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নেত্রকনা, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে ফেরা শুরু করে রাজধানীবাসীর একটি বড় অংশ৷তবে সব থেকে বেশি মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন শুক্রবার৷ এ দিনই দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ গ্রামের উদ্দেশ্যে রাওনা হন৷ ফলে স্বাভাবিকভাবেই শনিবার যাত্রীদের চাপ কমে যায়৷ তবে সকালের দিকে যাত্রীদের বেশ চাপ ছিলো৷ সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের এ চাপও কমতে থাকে৷ নেত্রকোনা কাউন্টারের সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, তাদের কাউন্টার থেকে মহনগঞ্জের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে৷

শুক্রবারই অধিকাংশ মানুষ ঢাকা ছেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ (শনিবার) সকালের দিকে যাত্রীদের কিছুটা চাপ ছিলো৷ কিন্তু ১১টার পর থেকেই যাত্রীদের চাপ কমে গেছে৷জামালপুরগামী এসএ এন্টারপ্রাইজের হেলপার সামাদ বলেন, যাত্রীদের চাপ কমার কারণে ভাড়াও কিছুটা কমে গেছে৷ শুক্রবার যাত্রী প্রতি ৬’শ থেকে ৭’শ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু শনিবার যাত্রীদের কাছ থেকে ৫’শ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে৷ তবে কিছু যাত্রীদের কাছ থেকে এখনো ৬’শ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে৷

অন্য সময় জামালপুরের ভাড়া কত জানতে চাইলে সামাদ বলেন, অন্য সময় ৩’শ ৭৩ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়৷ কিন্তু এখন আসার সময় গাড়ি খালি আসছে৷ যে কারণে ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে৷এদিকে সকাল ১১টার দিকে টার্মিনালটিতে কয়েক’শ যাত্রীর আনাগোনা দেখা যায়৷ দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে তা অর্ধেকে নেমে আসে৷ তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত টার্মিনালটিতে শতাধিকের উপর মানুষ দেখা গেছে৷

বরাবরের মতো, টার্মিনালটিতে বেশি ভিড় দেখা গেছে ময়মনসিংহগামী এনা পরিবহনের কাউন্টার ও নেত্রকনাগামী হযরত শাহজালাল (র.) এঙ্প্রেস কাউন্টারে৷মহাখালী টার্মিনালে নরসিংদী থেকে আসা সেলিনা বেগম জানান, তিনি ময়মনসিংহ শশুর বাড়ি যাবেন৷ এনা পরিবহনের টিকিট কেটেছেন৷ কতো ভাড়া নিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্য সময় যা ভাড়া নেয় তাই নিয়েছে৷ ঈদ উপলক্ষ্যে কোন বেশি ভাড়া নেয়নি৷

এদিকে যাত্রী ও কাউন্টার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হলেও তা নিয়ে যাত্রী ও কাউন্টার কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব দেখা দিচ্ছে না৷হযরত শাহজালাল (রা) এঙ্প্রেস কাউন্টার থেকে নেত্রকনার টিকিট কাটেন মো. সাগর৷ তিনি বলেন, ৫ বছর ধরে ঢাকাতে আছি৷ প্রতিবারই ঈদের সময় গ্রামে যাই৷ ভিড় বেশি হবে এই ভেবে শুক্রবার যায়নি৷ আজ গ্রামে যাচ্ছি৷ পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে চাই৷সাগর জানান, অন্য সময় নেত্রকনা যেতে কাউন্টার থেকে ভাড়া নেয় আড়াই’শ টাকা৷ কিন্তু ঈদ উপলক্ষে এখন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে তিন’শ টাকা৷৫০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে হযরত শাহজালাল (রা) এঙ্প্রেস কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা নিজেকে আমিনুল পরিচয় দিয়ে বলেন, ঈদ উপলক্ষে সবাই অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে৷ শুধু আমরা একা না৷ কারণ এখন নেত্রকনা থেকে সব গাড়িই প্রায় খালি আসছে৷

অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কথা স্বীকার করে ঝটিকা পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা মিলন বলেন, ঈদের সময় সবারই ইচ্ছা থাকে কিছু বাড়তি আয়ের৷ তাছাড়া ঈদে যাত্রীদের বাড়তি চাপও থাকে৷ এ জন্য সব পরিবহন ঈদের সময় কিছুটা অতিরিক্ত ভাড়া নেয়৷ তাছাড়া ঈদের সময় টার্মিনাল থেকে একবারে সিটিং করে যাত্রী নেওয়া হয়৷ সিটের অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হয় না, আবার পথের মাঝেও যাত্রী তোলা হয় না৷
গাবতলী :যানজটের কারণে ঈদে ঘরমুখী মানুষদের গাবতলী বাস টার্মিনালে পৌঁছাতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে৷ তবে গাবতলী থেকে ঢাকার বাইরে যেতে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না তাদের৷শনিবার ভোর থেকে সোয়া ৮টা পর্যন্ত দেখা গেছে গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকার মাজার রোড ও টেকনিক্যাল মোড়ে যানজট সৃষ্টি হয়েছে৷ এ কারণে নির্দিষ্ট সময়ে যাত্রীরা বাস টার্মিনালে পৌঁছাতে পারছেন না৷অনেকেই টার্মিনালের আগে গাড়ি থেকে নেমে হেটে যাচ্ছেন৷

এদিকে টার্মিনালে পৌঁছাতে বেশ কষ্ট হলেও সেখান থেকে ঢাকার বাইরে যেতে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না যাত্রীদের৷গত দিনগুলোর চেয়ে শনিবার যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম৷ টার্মিনাল থেকে বাসগুলো সিডিউল অনুযায়ী ছাড়ছে৷ যাত্রীদেরও বাসের জন্য খুব একটা অপেক্ষা করতে হচ্ছে না৷

হানিফ এন্টারপ্রাইজে করে খুলনা যাবেন রাকিবুল হাসান৷ সাড়ে ৭টায় তার বাস ছাড়ার কথা ছিল৷ মাত্র ১৫ মিনিট পরেই তিনি তার বাস পেয়ে যান৷বাস পেয়ে খুশি রাকিবুল হাসান বলেন, গতকাল (শুক্রবার) যে অবস্থার কথা শুনেছি তাতে এত তাড়াতাড়ি বাস পেয়ে যাব এটা কল্পনাও করতে পারিনি৷

কমলাপুর: ট্রেনের শিডিউলে চরম বিপর্যয় ঘটেছে৷ শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা থেকে বিভিন্ন ট্রেন নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘন্টা পরে ছেড়েছে৷এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ঘরমুখো যাত্রীরা৷শনিবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাটগামী রংপুর এঙ্প্রেস সকাল সাড়ে ৮টায় ছাড়ার কথা থাকলেও এ প্রতিবেদন লেখাকালীন দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশনেই পৌঁছেনি৷স্টেশনথেকে জানানো হয়েছে,ট্রেনটি ২টা ৪০মিনিটে কমলাপুরে পৌঁছাবে৷চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী এঙ্প্রেস সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও তা সাড়ে ১০টায় ছেড়েছে৷ সকাল ৬টায় খুলনাগামী সুন্দরবন এঙ্প্রেস ছেড়েছে ৯টা ২০ মিনিটে৷

এছাড়া সকাল ৬টার ঢাকা-দিনাজপুর রুটে চলাচলকারী দ্রুতযান এঙ্প্রেস ছেড়েছে সাড়ে ৯টায় এবং রাজশাহীগামী ধুমকেতু সকাল ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তা ছেড়েছে সকাল ৯টায়৷কমলাপুর স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার খায়রুল বশীর বলেন, যাত্রীদের ওঠানামায় বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন থামছে৷ এতে সময় বেশি বেশি লাগছেকমলাপুর স্টেশনের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, বিকেল ও রাতের অন্যান্য ট্রেনও নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে ছাড়তে পারে৷এদিকে, ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঘরমুখো মানুষ৷ বিশেষ করে নারী ও শিশুরা শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন৷

ঈদে ঘরমুখি মানুষদের ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের জন্য বিএনপিকে দুষলেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক৷ তিনি বলেছেন, শিডিউল বিপর্যয় সবসময় ঘটে না৷ কিছু সময় ঘটে৷ তার মূল কারণ হচ্ছে, বিএনপির আমলে রেলপথ উন্নত হয়নি৷ কোনোরকম সংস্কার করা হয়নি৷ জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল বাংলাদেশের রেলপথ৷শনিবার বিকেলে কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী৷

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের জন্য পঙ্গু ও বয়স্ক নারীদেরও দায়ী করেন মন্ত্রী৷ তিনি বলেন, কিছু কিছু পঙ্গু-বয়স্ক মা-বোনদের ট্রেনে উঠতে আধা থেকে এক মিনিট করে দেরি হয়৷ এ কারণেও ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয় হয়৷’বিএনপির আমলে জীর্ণশীর্ণ রেলপথ মেরামত করা হয়নি- এমন অভিযোগ করে মুজিবুল হক বলেন, ‘আমরা অনেক রেলপথ সংস্কার করেছি৷ নতুন রেললাইন করে যাচ্ছি৷ প্রধানমন্ত্রীর কথায় আমরা যাত্রীদের রেলপথে সেবা দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি৷’মুজিবুল হক আরও বলেন, জীর্ণশীর্ণ রেললাইনে যাতে গতি কমিয়ে ট্রেন চালানো হয় আমরা তার নির্দেশ দিয়েছি৷ আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশে কোনো জীর্ণশীর্ণ রেললাইন থাকবে না৷ আমরা সেগুলো সংস্কার করবো৷ সংস্কার শেষ হলে আর শিডিউল বিপর্যয় হবে না৷শিডিউল বিপর্যয়ের জন্য মন্ত্রী অতিরিক্তি যাত্রীর চাপকেও দায়ী করেন৷ মন্ত্রী বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী, উপচে পড়া ভিড়ের কারণেও সামান্য বিপর্যয় ঘটে৷ ভিড়ের কারণে শিডিউল ঠিকমতো মেইনটেইন করা যায় না৷ আশাকরি ভবিষ্যতে আর সমস্যা থাকবে না৷

মহাসড়কে দুর্ভোগ: পরিবহনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, পুলিশ ও অন্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়৷ এতে উত্তরাঞ্চলের ১৭ জেলার যাত্রীদের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়৷ ওই মহাসড়ক দিয়ে টাঙ্গাইল, বৃহত্তর ময়মনসিংহের একাংশ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলার যানবাহনও চলাচল করে৷বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে মহাসড়কের মির্জাপুরের নাটিয়াপাড়া ও জামুর্কি এলাকায় গরুবাহী দুটি ট্রাক বিকল হয়ে পড়ে৷ এতে মহাসড়কের এক পাশ দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে যানজট হতে থাকে৷ ভোর চারটার দিকে মির্জাপুরের শুভুল্যা এলাকায় বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘষের্র পর যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়৷ জট বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে৷ যানজটের কারণে ভোর চারটা থেকে সকাল নয়টা পর্যন্ত মহাসড়ক প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে৷ এতে ঘরমুখী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়ে ৷

শনিবার দুপুর পর্যন্ত মির্জাপুর থেকে চন্দ্রার মধ্যবর্তী বিভিন্ন এলাকায় থেমে থেমে প্রায় ২৫ কিলোমিটারের মতো যানজট ছিল৷ তবে সন্ধ্যার আগেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷গাজীপুর হাই য়ে পুলিশের পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, দুই লেনের মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলছে৷ দুর্ঘটনাকবলিত যান সরিয়ে নিতেও সময় লাগছে৷ এসব কারণে জট লাগছে৷ তবে পুলিশ যানজট নিরসনে আপ্রাণ চেষ্টা করছে৷অবশ্য ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ে যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক৷ যানবাহনের চাপ বেশি থাকলেও গাজীপুর অংশে কোনো যানবাহনকে জটের কারণে থেমে থাকতে হয়নি বলে জানান গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন৷ চন্দ্রাসহ আশপাশের প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটে দুর্ভোগে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ৷

মহাসড়কে দায়িত্বরত পুলিশ বলছে, শুক্রবার রাত থেকে একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা, গরুবোঝাই ট্রাক ও ঈদ-উল আযহার আগে বাড়ি ফেরা মানুষের চাপে মহাসড়কে যানজট কমছে না৷ এতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন মূলত উত্তরবঙ্গগামী মানুষ৷এদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও চাপ বেশি থাকায় গাড়ি চলছে অত্যন্ত ধীর গতিতে৷কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা মোড়ে দায়িত্বরত গাজীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, শনিবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর, নারিন্দা ও সিরাজগঞ্জের কড্ডা এলাকায় বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটায় যানজটের শুরু৷

একই স্থান থেকে সালনা মহাসড়ক থানার ওসি শাহরিয়ার হাসান জানান, বেলা ১১টা পর্যন্ত গাজীপুরের কড্ডা থেকে কোনাবাড়ি, সফিপুর, চন্দ্রা হয়ে গোড়াই পর্যন্ত এবং কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়ক মিলিয়ে ২৫ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি রয়েছে৷মহাসড়ক পুলিশের টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা ফাঁড়ির সার্জেন্ট কামরুজ্জামান রাজ বলেন, মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন সরাতে সময় লাগছে৷ গরু ভর্তি ট্রাক খালি করে সরাতে হচ্ছে৷ এছাড়া অন্য সময়ের চেয়ে যাত্রী পরিবহনের চাপও বেশি থাকায় যানজট দেখা দিয়েছে৷

চান্দনা চৌরাস্তা মোড় থেকে গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সেখানে গাড়ির চাপ বেশি থাকলেও গাড়ি চলাচল অব্যাহত রয়েছে৷ ভোগড়া বাইপাস মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালিংয়ের জন্যে সময় সময় গাড়ির চাপ বেড়ে যায়৷মাওনা মহাসড়ক থানার ওসি মো. সানোয়ার হোসেন জানান, গাজীপুরের ওই অংশে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ফোর লেনের কাজ চলায় যানবাহন অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে৷

এদিকে ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়িতে বসে থেকে ত্যক্ত-বিরক্ত যাত্রী ও পরিবহন চালকরা যানজটের জন্য সড়ক ব্যবস্থাপনায় গাফিলতিকে দায়ী করছেন৷জামালপুরগামী হানিফ পরিবহনের বাসের যাত্রী কামাল হোসেন ফোনে বলেন, শনিবার ভোরে ঢাকা থেকে বাসে উঠেছি৷ ৩ ঘন্টায়ও শ্রীপুর পৌঁছাতে পারিনি৷ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা সাখাওয়াত জানান, যানজট নিরসনে গাজীপুরের ৪২টি পয়েন্টে ৪২টি টিম কাজ করছে৷ তার মধ্যে ১৯টি মোটরসাইকেল ও ৬টি গাড়ির টিম কাজ করছে৷

কালিয়াকৈর, মাওনা, চন্দ্রা ও চান্দনা চৌরাস্তায় ১৪টি আইপি ক্যামেরা এবং টঙ্গী, ভোগড়া ও চন্দ্রা এলাকায় তিনটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে৷এছাড়া আট শতাধিক পুলিশের বাইরে আরো কয়েকশ কমিউনিটি পুলিশও কাজ করছে বলে জানান তিনি৷

মাওয়ায় তীব্র যানজট : ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগমুন্সীগঞ্জ : মাওয়ায় প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে৷ এতে দক্ষিণাঞ্চলগামী ঈদে ঘরমুখো মানুষদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে৷ লৌহজং উপজেলার মাওয়া থেকে শ্রীনগরের সমষপুর পর্যনত্ম আশেপাশের এলাকায় এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে৷৩টি রো রো ফেরিসহ ১৭টি ফেরি সচল থাকলেও গাড়ির অতিরিক্ত চাপ থাকায় প্রায় ৪ শতাধিক গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে৷ এদিকে মাওয়া থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে শ্রীনগরের ছনবাড়ি এলাকায় পণ্যবাহী পাঁচ শতাধিক ট্রাক পারাপারের অপেৰোয় রয়েছে৷ দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার মাওয়া ঘাটে ভোর থেকেই ঈদে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে৷ যানজটের কারণে অনেকে মাওয়া পর্যনত্ম গাড়িতে এসে লঞ্চ বা স্পিডবোটে নদী পার হয়ে কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে আবার বাসে চড়ছেন৷

এছাড়া ঢাকা-মাওয়া রুটের অনেক যানও আটকা পড়ছে এখানে৷ পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির পরও আজ শনিবার আগের চিত্রই দেখা গেছে৷ লঞ্চগুলো কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে৷ এ ব্যাপারে বিআইডবি্লউটিএ’র বন্দর কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, লঞ্চগুলোতে ধারণ ক্ষমতা অনুয়ায়ী যাত্রী নেয়ার চেষ্টা চলছে কিন্তু যাত্রীর চাপ বেশি থাকায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে৷মাওয়ায় বিআইডবিস্নউটিসি’র ম্যানেজার সিরাজুল হক জানান, নাব্যতা সংকট থাকলেও ড্রেজিংয়ের কারণে ফেরি চলাচলে এখনও কোন সমস্যা হচ্ছে না৷ কিন্তু যানবাহনের চাপ রয়েছে৷

পুলিশ সুপার বিপস্নব বিজয় তালুকদার জানান, সুশৃঙ্খলভাবে যানবাহন পারাপারে নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে৷ পণ্যবাহী ট্রাকগুলো নিরাপদ দূরুত্বে রাখা হয়েছে৷ বাস ও কার আগে পার করা হচ্ছে৷তিনি জানান, যাত্রী নিরাপত্তা এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও চাঁদাবাজি রোধে ৪ শতাধিক পুলিশ কাজ করছে৷ এর মধ্যে সাদা পোশাকে পুলিশের তত্‍পরতা রয়েছে৷ এছাড়া র্যাব, আনসার, কোস্টগার্ড, রোভার স্কাউটসহ সেচছাসেবক দল কাজ করছে৷জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল বলেন, মাওয়ায় সার্বক্ষনিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে৷ যাত্রীদের বিড়ম্বনা লাঘব করতে সবরকম চেষ্টা চলছে৷