JOBI

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,ঢাকা,২০অক্টোবর: আট বছর পেরিয়ে বিভিন্ন কর্মসচি পালনের মাধ্যমে নবম বছরে পা রাখল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়৷ বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপিত হয়েছে৷সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তলনের মধ্যে দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়৷ পরে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়৷

শোভাযাত্রাটি পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার ও বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকা ঘুরে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়৷এতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মীজানুর রহমানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘোড়ার গাড়ি চড়ে রঙ বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন, বাদ্যযন্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন৷

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী উন্নত বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় সমানতালে চলতে উচ্চশিৰার মান উন্নয়নের ওপর গুরম্নত্ব আরোপ করেছেন৷তিনি বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার ৰেত্রে দেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে তেমনি জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসার ঘটাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ও এগিয়ে চলেছে৷ নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয় রোল মডেলে পরিণত হয়েছে৷

ড. এ কে আজাদ চৌধুরী আজ সকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন৷

image_102836_0

এর আগে তিনি পুরান ঢাকার বাংলাবাজারে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’-এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন৷বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন৷বিশেষ অতিথি ছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বাবু৷ এতেবিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যৰ অধ্যাপক ড. সেলিম ভুইয়া, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: লুত্‍ফর রহমান, শিৰক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাস, ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শরিফুল, সাধারণ সম্পাদক এস. এম. সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা কামরুল ইসলাম রিপন প্রমুখ বক্তৃতা করেন ৷সভা পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান৷

অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগ পর্যনত্ম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে তত্‍কালীন জগন্নাথ কলেজ শিক্ষা, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অত্যনত্ম গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ৷মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজের শুভ সূচনার মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সমস্যা নিরূপণে একধাপ এগিয়ে গেল৷বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সমস্যা সমাধানে ভবিষ্যতেও সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলেও তিনি উলেস্নখ করেন৷
এসময় অতিথিদের ক্রেস্ট এবং কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়৷

সোমবার সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০১৪ উদ্বোধন করেন৷ এ সময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়৷উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান আকাশে নানা রঙের বেলুন উড়িয়ে দেন ও শানত্মির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত করেন৷

পরে সকাল সাড়ে ৯ টায় ড. এ. কে. আজাদ চৌধুরী এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের নেতৃত্বে ক্যাম্পাস থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়৷

ব্যান্ডদলে সুসজ্জিত র্যালিটি ক্যাম্পাস প্রদিৰণ করে পুরনো ঢাকার রায়সাহেব বাজার ও ভিক্টোরিয়া পার্ক হয়ে পুনরায় ক্যাম্পাসে ফিরে আসে৷ছাত্রছাত্রীরা রঙ-বেরঙের টি-সার্ট ও শাড়ি পরে নেচে গেয়ে র্যালিতে অংশ নেয়৷এছাড়া প্রতিটি বিভাগের শিৰক-ছাত্রছাত্রীবৃন্দ নিজস্ব বিভাগীয় ব্যানারে রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন বহন করে র্যালিতে অংশগ্রহণ করে৷

উপাচার্য বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোসহ অন্যান্য কার্যক্রম উন্নয়নে বর্তমান সরকার সক্রিয়৷ অদূর ভবিষ্যতে বিজ্ঞান অনুষদের স্থানে ৩০ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে৷আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে বিজ্ঞান ভবন চত্বরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম৷ দেশের খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়, চন্দনা মজুমদার, ফকির আলমগীর, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কন্ঠশিল্পী লাইসা আহমেদ লিসা, কন্ঠ শিল্পী অণিমা রায়, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল হোসেন, নৃত্যশিল্পী গোষ্ঠী ওহার দি রিহ্যাস অংশগ্রহণ করে৷

এছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রামা এন্ড মিউজিক বিভাগের শিৰক-ছাত্রছাত্রীবৃন্দ,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ, উদীচী-জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র-এর শিল্পীবৃন্দ সংগীত পরিবেশন করেন৷