unnamed.jpg8

দৈনিকবার্তা-গোপালগঞ্জ, ২৭ ডিসেম্বর: বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করে যারা ইতিহাস বিকৃত করেছে তাদেরকে কুলাঙ্গার বলে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা পার পাবে না জনগণই তাদের বিচার করবে৷ বিএনপি-জামাত বিশ্বব্যাংকের কাছে আওয়ামীলীগকে দুর্ণীতিবাজ বানাতে চেয়েছিল তা তারা পারেনি৷ বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মনত্মব্যকারীদের কুলাঙ্গার আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জাতির জনকের বিরুদ্ধে এ ধরনের মনত্মব্যকারীদের ছাড়া হবে না৷

শনিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিকালে বঙ্গবন্ধু ভবনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন৷প্রধানমন্ত্রী এখানে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ এবং টুঙ্গিপাড়া ও কোটালিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক শেষে এ কথা বলেন৷

তিনি এখানে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিসৌধে পুষ্পসত্মবক অর্পণ এবং ফাতেহা পাঠ ও মুনাজাত শেষে বঙ্গবন্ধু ভবনে এসব বৈঠক করেন৷বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করেন৷

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা গণতন্ত্র,সংবিধান ও উন্নয়ন নস্যাত্‍ করতে চায় তাদের প্রতিহত করতে হবে৷দেশে দারিদ্র্যের হার অনেক কমেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের চলমান উন্নয়নের ধারা যাতে বাধাগ্রসত্ম না হয় সেদিকে আওয়ামী লীগ নেতা-কমর্ীদের অবশ্যই নজরদারি বজায় রাখতে হবে৷তিনি নেতাকমর্ীদের জেলার বিভিন্ন পর্যায়ে যেসব জায়গায় আওয়ামীলীগের কাউন্সিল এখনও হয়নি, সেগুলো দ্রুত শেষ করে বই আকারে তাঁর কাছে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন৷

তিনি বলেন, অসাংবিধানিক পথে যারা ক্ষমতা দখল করতে চায় ওই সব গণতন্ত্র বিরোধী শক্তি যাতে দেশে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে৷প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি গণতন্ত্র, সংবিধান ও উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে পারি তাহলে দেশে দারিদ্র্য থাকবে না৷শেখ হাসিনা দলকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখার জন্যও তৃণমূল নেতাদের প্রতি নির্দেশ দেন৷বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মনত্মব্যকারীদের কুলাঙ্গার আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, জাতির জনকের বিরম্নদ্ধে এ ধরনের মনত্মব্যকারীদের ছাড়া হবে না৷তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখন এ জাতির প্রকৃত ইতিহাস জানেন৷ যারা বঙ্গবন্ধুর বিরম্নদ্ধে অসম্মানজনক মনত্মব্য করেন তারা কুলাঙ্গার৷ এ ধরনের মনত্মব্যকারীারা ছাড়া পাবে না৷ তাদের বিচার করবে জনগণ৷

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন কাজের খোঁজ-খবর নেন এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেন৷আওয়ামী লীগ সভাপতি তৃণমূল নেতাদের যত দ্রম্নত সম্ভব দল ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহের কাউন্সিল সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন৷তিনি বলেন, গণতন্ত্র, সংবিধান ও উন্নয়ন ধারা বজায় রাখতে আওয়ামী লীগকে আরো শক্তিশালী করতে হবে৷এর আগে শনিবার দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে টুঙ্গিপাড়ায় পৌছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ এরপর তিনি বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধের বেদীতে পুস্পসত্মবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা জানান৷

mp gpljpg

পরে তিনি ছোট বোন শেখ রেহানা, চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, শেখ সালাউদ্দীন জুয়েল ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করে বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফেরাত কামনা করেন৷ শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কিছুক্ষণ রীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন৷

এ সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের আনত্মর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারম্নক খান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ কবীর হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, প্রেস-সচিব একেএম শামীম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, যুব-মহিলালীগ সভনেত্রী নাজমা আক্তার এমপি, উম্মে রাজিয়া কাজল এমপি, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সিকদার নূর মোহম্মদ দুলু ও শেখ রম্নহুল আমীন, সাধারণ-সম্পাদক চৌধুরী এমদাদুল হক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দীন পান্না, জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন সভাপতি শেখ নাদির হোসেন লিপু, জাতীয় মহিলা সংস্থা গোপালগঞ্জ এর চেয়ারম্যান ও মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী নাছিমা আক্তার রুবেল, আওয়ামীলীগ নেতা শেখ আব্দুল হালিম, এ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র জয়ধর, শেখ মোঃ ইউসুফ আলী, আবুল বশার খায়ের, সোলায়মান বিশ্বাস, বদরম্নল আলম বদর ও বিএম হাসান কবির সানু, সদর কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুত্‍ফর রহমান বাচ্চু, মুজিবর রহমান হাওলাদার ও গাজী গোলাম মোসত্মফা, পৌর-মেয়র এইচ এম অহেদুল ইসলাম, সরদার ইলিয়াস হোসেন ও রেজাউল হক সিকদার (রাজু), জেলা যুবলীগ সভাপতি জিএম সাহাবউদ্দিন আজম, ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল হামিদসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন৷

মোনাজাত শেষে মাজার-কমপ্লেঙ্রে বঙ্গবন্ধু ভবনে তিনি ডেকে নেন কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া সহ সদর, কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলার দলীয় নেতৃবৃন্দদের৷ তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পৃথক পৃথক ভাবে৷ পরে মধ্যাহ্ন-বিরতি, নামাজ ও বিশ্রাম শেষে বিকেল ৪ টা ২০ মিনিটে তিনি রওনা হন ঢাকার উদ্দেশ্যে৷

এসময় কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের আনত্মর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্ণেল (অব.) ফারুক খান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন৷ এছাড়া সমাধি সৌধ কমপ্লেঙ্রে বঙ্গবন্ধু ভবনে মধ্যাহৃ বিরতি, নামাজ ও বিশ্রাম করে বিকাল ৩ টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবার কথা রয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রীর আগমনে সড়কের বিভিন্ন স্থনে নির্মাণ করা হয় তোড়ন৷ সাগানো হয় সড়ক গুলো৷এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে টুঙ্গিপাড়াসহ পুরো জেলায় রেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷ জেলার গুরুত্তপূর্ণ স্থান গুলোতে বসানো হয় টহল পুলিশ৷ এর আগে সকাল ১০ টায় প্রধানমন্ত্রীর টুঙ্গিপাড়া পৌছানোর কথা থাকলেও ঘনো কুয়াশার কারনে তিনি দেরী করে আসেন৷