Monmohan

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১২ মার্চ: ভারতের কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধী সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের প্রতি অকুন্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন৷মঙ্গলবার উড়িষ্যার তালাবিরা কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় ভারতের সাবেকপ্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সমন জারি করে আদালত৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে সোনিয়া সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সমর্থন জানালেন৷বৃহস্পতিবার দলীয় শতাধিক নেতাকে সঙ্গে করে পায়ে হেঁটে মনমোহনের বাসভবনে গিয়ে হাজির হন সোনিয়া৷

এনডিটিভি বলছে, মনমোহনের বাসভবনের বাইরে উপস্থিত সাংবাদিকদের কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট বলেন, “তিনি (মনমোহন) শুধু ভারতেই নয় সারাবিশ্বেই ন্যায়পরায়নতা ও সততার জন্য পরিচিত৷ আমরা তাকে অকুন্ঠ সমর্থন জানাচ্ছি এবং তার সঙ্গে আছি৷ আমরা শুধু আইনিভাবেই এর বিরুদ্ধে লড়াই চালাবো না এর বিরুদ্ধে আমাদের নেতৃত্ব সবধরনের উদ্যোগই গ্রহণ করবে৷ সোনিয়া আরো বলেন, আমাদের কোনো সন্দেহ নেই, তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন৷ সোনিয়া গান্ধীর বাসভবনের কাছে কংগ্রেস নেতারা দলীয় সদরদপ্তরে মিলিত হন৷ এরপর তারা সবাই আধাকিলোমিটার দূরে মনমোহন সিংয়ের বাড়িতে হেঁটে উপস্থিত হন৷মনমোহন ও তার স্ত্রী গুরস্বর্না কাউরকে এ সময় হাসিমুখে সবাইকে অভ্যর্থনা জানাতে দেখা যায়৷

এনডিটিভিকে মনমোহন বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং আমরা আমাদের সামথ্যের্র সবটুকু দিয়ে এই মামলা লড়বো৷মনমোহন এ সময় দলের শীর্ষনেতারা তাকে সমর্থন জানাতে আসায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন৷

বিভিন্নসূত্র জানিয়েছে, সোনিয়া গান্ধী ৮২ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের প্রতি জোড়ালো ও পরিষ্কার সমর্থন ও বার্তা দিতে চেয়েছিলেন৷বিগত দুই দফায় ১০ বছর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ভারতের সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন অর্থনীতিবিদ ড. মোনমোহন সিং৷

কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় ভারতের সাবেকপ্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সমন জারির আদেশ দেয় দিলি্লর বিশেষ সিবিআই আদালত ৷

মনমোহনসহ ছয় আসামিকে আগামী ৮ এপ্রিল আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক৷আসামিদের মধ্যে ভারতের আদিত্য বিড়লা গ্রুপর হিন্দালকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান কুমার মঙ্গলম বিড়লা এবং সাবেক কয়লাসচিব পি সি পরখও রয়েছেন৷ওই কয়লা ব্লকের কাজ হিন্দালকোকে পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতি, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও জনপ্রতিনিধি হিসাবে নেওয়া শপথ ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে কংগ্রেস নেতা মনমোহনের বিরুদ্ধে, যিনি দশ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন৷

সিবিআই অভিযোগের কোনো প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানিয়ে জানুয়ারিতে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলেও আদালত তা নাকচ করে নতুন করে তদন্তের আদেশ দেয়৷

জানুয়ারিতে কয়লা খনি কেলেঙ্কারির বিষয়ে সিবিআই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল৷ ২০০৫ সালে উড়িষ্যার তালাবিরা ব্লকের একটি কয়লা খনি অ্যালুমিনিয়াম কোম্পানি হিন্দালকোকে বরাদ্দ দেয়ার বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই৷ ওই সময় কয়লা মন্ত্রণালয় সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের অধীনে ছিল৷

সূত্রগুলো জানিয়েছে, মনমোহন সিবিআই’কে বলেছিলেন, আমি অন্যদের পরামর্শের উপর নির্ভর করেছিলাম৷ আমি ফাইলে সই করলেও এতে কোনো সুপারিশ করিনি৷হিন্দালকো, ৪০ বিলিয়ন ডলারের শিল্পগোষ্ঠী আদিত্য বিড়লা গ্রুপের একটি অংশ৷ অভিযোগ ওঠার পর কয়লা খনির জন্য তদ্বির করার কথা অস্বীকার করে কোম্পানিটি৷ পরে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে তারা অন্যায় কিছু করেনি বলে দাবি করে৷

২০১২ সালে ভারতের জাতীয় অডিট প্রতিবেদনে কোল-গেট নামে পরিচিত কয়লা খনি কেলেঙ্কারির বিষয়টি ফাঁস হয়৷ এতে দেখা যায়, তত্‍কালীন সরকার কোনো প্রতিযোগিতামূলক নিলাম ছাড়াই কয়লা খনির ব্লকগুলো কমমূল্যে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর হাতে তুলে দিয়েছে৷