image_23337.emajuddimn-21-600x330_733611

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৫ মার্চ: বিএনপি মনে করে স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও দেশে আজ পরাধীন। গণতন্ত্র, বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য ৭১ সালে যে বুকভরা আশা নিয়ে বাঙালি জাতি যুদ্ধ করেছিল এবং লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল মহান স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতা আজ শকুনের নখে ক্ষতবিক্ষত।বুধবার সন্ধ্যায় বরকত উল্লাহ বুলু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীনতা দিবসে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হবে।বিবৃতিতে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। এই দিনে তৎকালীন সেনাবাহিনীর মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তার সেই ঐতিহাসিক ডাকে সাড়া দিয়ে সমগ্র জাতি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অংশগ্রহণের মাধ্যমে মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে প্রাণপণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, জাতির সঙ্গে প্রতারণা করে তামাশার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যারা মানুষের ভোট ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের মাধ্যমে জোরজবরদস্তিমূলকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে পারে তারা ক্ষমতা ধরে রাখা ছাড়া কখনোই জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে না এটাই স্বাভাবিক। নাগরিকের বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণকারী এবং উৎপীড়ক ও লুটেরা আওয়ামী স্বৈরশাসনের কবল থেকে জাতিকে উদ্ধার করতে দেশবাসীকে সাথে নিয়ে ২০ দলীয় জোট যখন আন্দোলন সংগ্রামে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত, ঠিক তখনই মহাচক্রান্তের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকার আন্দোলন সংগ্রামের গতিধারাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে রাজধানীর বিভক্ত দুই সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ডিঙ্গিয়ে যেদেশে কোনো সংস্থা নির্বাচন কমিশনকে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারণ করে দিতে পারে সেদেশের নির্বাচন কমিশন কতটুকু স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও ক্ষমতাবান হতে পারে তা বুঝতে মহাজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে বিএনপিসহ অন্যান্য দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হলেও নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিময় পরিবেশ নিশ্চিতের কোনো লক্ষণ এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়।

বিএনপির নেতা বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ডিঙ্গিয়ে যেদেশে কোন সংস্থা নির্বাচন কমিশনকে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারণ করে দিতে পারে সেদেশের নির্বাচন কমিশন কতটুকু স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও ক্ষমতাবান হতে পারে তা বুঝতে মহাজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে বিএনপিসহ অন্যান্য দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হলেও নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিময় পরিবেশ নিশ্চিতের কোন লক্ষণ এখনও পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়।বুলু বলেন, সকল দল, নগরবাসী তথা দেশবাসীর নিকট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করার মতো ইচ্ছা নির্বাচন কমিশনের থাকলে তড়িঘড়ি করে পুলিশ মহাপরিদর্শকের পরামর্শে এপ্রিল মাসেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের তফসিল ঘোষণা করা হতো না।

নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন ঠুটো জগন্নাথ বলেই আজ কোন প্রার্থীই নির্বাচনী আচরণবিধির তোয়াক্কা করছে না। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পূর্বে কোন নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবি বা সুশীল সমাজের সাথে পরামর্শ করা হয়নি। সরকারের নীল নকশা অনুযায়ী তফসিল ঘোষণা করে ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় আরেকটি প্রতারণামূলক নির্বাচনী নাটক মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন তথা সরকার। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন দিয়ে যে তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে তা গোটা দেশবাসীর ইচ্ছার সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।

তিনি বলেন, সারাদেশে বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, নাগরিক ও সাংবাদিক সমাজের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ অগণিত বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্ঠে বন্দী রাখা হয়েছে। তাদেরকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। অথচ আইনি বিধি-বিধান মোতাবেক তাদেরকে জামিনও দেয়া হচ্ছে না। জামিন পাওয়া একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার, কিন্তু সেই অধিকারটুকুও আজ ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভরশীল।২০ দলীয় জোট আশা করে-সরকার অবিলম্বে বিএনপি ও বিরোধী দলগুলোর শীর্ষ নেতৃবন্দসহ সকল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপ্রসূত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করবে এবং কারান্তরীণ নেতা-কর্মীদের মুক্তি দেবে।

প্রত্যাশা অনুযায়ী সরকার দেশকে সংঘাত ও হানাহানির করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যথাযথ উদ্যোগ নিবে। আর তাতে নেতিবাচক মনোভাব দেখালে সরকারকে এরজন্য চরম মূল্য দিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলমান অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি আগামীতে দেশবাসীকে সাথে নিয়ে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে ২০ দলীয় জোট দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। ২০ দলীয় জোট আশা করে সরকারের শুভচেতনা ও শুভবুদ্ধির উদয় হবে।এসময় ২০ দলীয় জোটের চলমান আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে শান্তিপূর্ণভাবে আজ সারাদেশে ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে যে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে সেজন্য জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০ দলীয় জোটের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।