3600

দৈনিকবার্তা-নীলফামারী, ৮ মে: বেশি লাভের আশায় ধানকাটা শ্রমিকরা বাইরের জেলায় গেলেও এখনো ফিরে আসেনি। ফলে নীলফামারী জেলার সর্বত্র বোরো ধান কাটার ভরা মৌসুম চললেও কৃষি শ্রমিকের অভাবে ক্ষেতের পাকা বোরো ধান কাটতে পাড়ছেন না কৃষকরা। ফলে শ্রমিক সঙ্কটে পাকা ধান ঝরে পড়ে যাচ্ছে। এই বোরো আবাদে বৃষ্টি, সার, বীজ নিয়ে কোন সমস্যা না থাকলেও বোরো ধান কাটার জন্য মজুর নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে এখানে। এ জেলার ৬টি উপজেলার অধিকাংশ কৃষি শ্রমিক অধিক লাভের আশায় জয়পুরহাট, সান্তাহার, রাজশাহী, বগুড়া, কুমিল্লা, নওগাঁ প্রভৃতি এলাকায় ধান কাটার জন্য দলবেঁধে চলে গেছেন। অবশিষ্ট শ্রমিকরা গ্রামাঞ্চলে চলমান কর্মসৃজন প্রকল্পে কাজ করছেন। ফলে এ উপজেলায় মজুরের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কৃষকদের জমির পাকা বোরো ধান কাটার লোক খুঁজতে হচ্ছে। অনেক খুঁজে দু-একজন পাওয়া গেলেও বাড়তি মজুরি গুনতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ বাড়ছে, তেমনি পিছিয়ে যাচ্ছে বোরো ধান কাটা। ফলে কৃষকরা চরম আশংকায় পড়েছে। কৃষি শ্রমিক না পেয়ে অনেক কৃষক নিজেই নেমে পড়েছেন জমিতে। এমনই একজন কছিম উদ্দিন। শহরে ব্যবসার পাশাপাশি টুকটাক আবাদও করেন কিছু। জমি তৈরির জন্য লোক খুঁজে না পেয়ে নিজেই কাস্তে হাতে নেমে পড়েছেন জমিতে।

তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক খুঁজেও লোক পেলাম না। বোরো ধান পেকে ঝরে পড়ছে। তাই শহরে দোকান বন্ধ রেখে নিজেই নেমে পড়েছি। কৃষক আমিনুর জানান, তার ১০-১২জন কৃষি শ্রমিক দরকার। কিন্ত পেয়েছেন তিনজন। অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে আদর-যতœ করে তাদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন তিনি। বোতলাগাড়ী গ্রামের সমসের আলী বলেন, জামাই আদরেও ধানকাটা শ্রমিক মিলছে না। সব শ্রমিক চলে গেছে দক্ষিণাঞ্চলে। আবার অনেকে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রামে। রিকশা চালিয়ে তারা দিনে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা আয় করছে। এদিকে তাদের পোষাচ্ছে না। এদিকে প্রতিবিঘা (৬০ শতাংশ) জমির ধান কেটে বাড়ির উঠানে আনতে খরচ পড়ছে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। এছাড়া মাড়াইকলে ধান মাড়ার জন্য আরও ৬শ’ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। সেই ধান শুকিয়ে বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ৩শ’ ৫০ টাকায়। এতে করে কৃষকের লোকসানের বোঝা আরও ভারি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেক কৃষক।