দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১০ মে: ভারতের লোকসভায় ‘সীমান্ত চুক্তি’ পাস হওয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন খালেদা জিয়া্। শনিবার রাতে গুলশান কাযার্লয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি এই ধন্যবাদ জানান।তিনি বলেন, ‘‘৪০ বছর ধরে ঝুলে থাকা পর সীমান্ত চুক্তি ভারতের লোকসভায় পাস হয়েছে। এজন্য মোদী সরকারকে আমি ধন্যবাদ দেবো। মোদী সাহেব বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্পর্ক তৈরি করতে তিনি এটি করেছেন। তিনি (ভারতের প্রধানম্ন্ত্রী) আরো বলেছেন, আমি প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই। কোনো দলের সঙ্গে নয়, জনগনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।বিএনপিরও এটাই চায়।’’
খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ কংগ্রেস সরকারের সঙ্গে অনেক দালালী করেছে। তাদের বলব, কংগ্রেসের দালালী করেছেন। কংগ্রেসের কাছ থেকে কিছুই আনতে পারেনি, শুধু দিয়েছে।’’রাতে গুলশান কাযার্লয়ে ঢাকা কর আইনজীবী সমিতির নবনিবার্চিত সভাপতি অ্যাডভোকেট মাজম আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাফর উল্লাহ‘র নেতৃত্বে ১৭ জন নিবার্চিত কর্মকর্তাসহ জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ উপলক্ষে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়।গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা কর আইনজীবী সমিতির নিবার্চনে ২২ সদস্যের কাযর্করী কমিটির মধ্যে জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরামের ১৭ জন প্রার্থী বিজয়ী হন। দলের পূর্নগঠনের ইংগিত দিয়ে বলেন, ‘‘ আমাদেরকে দলের পূর্ণগঠনে যেতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা প্রক্রিয়াও শুরু করেছি। যারা ত্যাগী-পরীক্ষিত, যারা দলের বিপদের সময়ে কাজ করেছেন, তাদের কমিটিতে আনা হবে। তাদের মূল্যায়ন করা হবে।’’কমিটি পূর্নগঠনের সময়ে কর আইনজীবীদের মধ্য থেকে প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে কাজ করার সুযোগ দেয়ার কথাও বলেন তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘ দলের যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদকে র্যাবের লোকজন তুলে নিয়ে গেছে। সে র্যাবের কাছেই আছে। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, তাই এখনো বলছি, সালাহউদ্দিনকে দ্রুত তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিন। পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে না পারলে যেখান থেকে তাকে তুলে নেয়া হয়েছে, সেখানেই তাকে ফিরিয়ে দিন।’’‘‘ অন্যথায় সালাহউদ্দিনের কিছু হলে এর পরিণতি ভালো হবে না। আমি বলতে চাই, বন্দুক দিয়ে সব কিছু হয় না।’’গত ১০ মার্চ উত্তরার একটি বাসা থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে।র্যাবের তৎপরতার ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘ এরা মানুষ খুন করে। নারায়নগঞ্জের ঘটনা দেশবাসী জানে। এই র্যাবকে ব্যান্ড করা দরকার।’’
নারায়নগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনায় জড়িত র্যাব সদস্যদের কারাগারে ‘জামাই আদরে’ রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া।তিন সিটি নিবার্চন প্রসঙ্গেখালেদা জিয়া বলেন, ‘‘ আজ দেশে গণতন্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই। কারণ দেশে জনগনের ভোটে কোনো নিবার্চিত সরকার নেই। একে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যায় না। এটি একটি পুলিশি স্টেট হয়ে গেছে। পুলিশরাই বলছে, তারাই এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে। তারা (পুলিশ) যতদিন চাইবে, ততদিন তাদের রাখবে।’’তিনি বলেন, ‘‘সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। সিটি নিবার্চনে তারা ভোট ডাকাতি করেছে। পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা নিয়ে তারা নিবার্চন করেছে, জিতেছে।।’’ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি নিবার্চনে ভোট কারচুপির ঘটনাবলী গণমাধ্যম সঠিকভাবে উপস্থাপন করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
ভোট কারচুপির মাধ্যমে ঢাকা ও চট্টগ্রামের নিবার্চিত মেয়রদে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘ ভোট ডাকাতি করে ওরা তিন সিটি দখল করেছে। এখন কাজের কাজ কিছুই হবে না। টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী হবে। সর্বত্র চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসীর দৌরাত্ম চলছে।’’যুক্তরাজ্যে গতকাল অনুষ্ঠিত নিম্ন কক্ষ হাউজ অব কমন্সের নিবার্চন প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ সেখানে কি সুন্দর নিবার্চন হয়েছে। এটা চিন্তাই করা যায় না। ভারতেও সুষ্ঠু নিবার্চন হয়েছে। ওইসব নিবার্চনে নিবার্চন কমিশন কোনো পক্ষ নেয় না। আমরা কি ওইসব নিবার্চন দেখে কিছু শিখতে পারি না।