35315_129

দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ২ জুলাই: গাজীপুরে প্রেম করে বিয়ের পর যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে পতিতালয়ে বিক্রি করেছে তার স্বামী। বৃহস্পতিবার দৌলতদিয়া পতিতালয় থেকে ভিকটিম আয়েশাকে উদ্ধার করেছে সরকারের নব গঠিত গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এসময় আয়েশার স্বামী ও তার দু’ভাইসহ পতিতালয়ের সর্দারনীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, ভিকটিমের স্বামী আজগর আলী রানা (২৩), রানার দু’ভাই মোঃ আশরাফূল ইসলাম (২৫) ও আব্দুল আলী (৩২) এবং পতিতালয়ের সর্দারনী বৃষ্টি আক্তার (২০)। এদের মধ্যে বৃষ্টি আক্তার রাজবাড়ি জেলার দৌলতদিয়া এলাকার রিপনের স্ত্রী এবং অপর তিন সহদোরের বাড়ি গাজীপুর জেলার ভবানীপুর এলাকার লটিয়ারচালা গ্রামে। বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আস্ শামস্ জগলুল হোসেন গ্রেফতারকৃতদের জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। পিবিআই গঠনের পর গাজীপুরের এ প্রথম মামলার তদন্তে দায়িত্ব পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে সফলতা পেয়েছে সরকারের নব প্রতিষ্ঠিত এ তদন্ত সংস্থাটি।

মামলার বাদী আয়েশার ভগ্নিপতি আব্দুল বাতেন জানান, গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার সিএনএ পোশাক কারখানায় চাকুরী করার সময় আয়েশার সঙ্গে স্থানীয় শিরিরচালা গ্রামের রমিজ উদ্দিনের ছেলে রানার পরিচয় হয়। এরপর তারা একে অপরকে ভালবেসে পরিবারের অমতে প্রায় আড়াই বছর আগে বিয়ে করে। এক পর্যায়ে আয়েশার পরিবার এবিয়ে মেনে নেয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মাদকাসক্ত স্বামী রানা যৌতুকের জন্য আয়েশাকে চাপ দিতে থাকে। যৌতুক না দেয়ায় রানা গত ৩জুন স্বপন নামের এক দালালের মাধ্যমে রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া পতিতালয়ে আয়েশাকে সর্দারনী বৃষ্টি আক্তারের কাছে ৬৩ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। এঘটনায় গত ২১ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কোর্ট পিটিশন মামলা দায়ের করলে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুরকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক খোন্দকার শওকত জাহান জানান, পিবিআই প্রতিষ্ঠার পর গত ২৪ জুন প্রথম এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে গাজীপুর অফিসের পুলিশ কর্মকর্তারা ষাঁড়াশি অভিযান করে। এক পর্যায়ে সোর্সের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে রাজবাড়ি জেলার দৌলতদিয়া পতিতালয় অভিযান চালিয়ে ভিকটিম আয়েশাকে উদ্ধার করা হয় এবং পতিতা সর্দার বৃষ্টি আক্তারকে আটক করা হয়। এঘটনায় ভিকটিম আয়েশার স্বামী রানা, তার দু’ভাই আশরাফুল ইসলাম ও আব্দুল আলীম এবং পতিতা সর্দার বৃষ্টি আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হলে গাজীপুরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আস্ শামস্ জগলুল হোসেন সকল আসামীদের জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।

পিবিআই’র জেলা প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ জানান, সরকারের নব গঠিত তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুর অফিস আদালতের দেয়া প্রথম মামলায় সফলতা অর্জন করেছে। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে রাজবাড়ি জেলার একটি পতিতালয় থেকে মামলার ভিকটিমকে উদ্ধার করে ভিকটিমের স্বামী সহ ৪জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।