kill-e1412352844449

দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ৯ জুলাই: গাজীপুরে বাড়িতে ডেকে নিয়ে স্কুল ছাত্রী মেয়ের প্রেমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রেমিকার বাবা ও স্বজনদের বিরুদ্ধে। পুলিশ এ ঘটনায় নিহতের প্রেমিকাসহ চার জনকে আটক করেছে। ঘটনার পর প্রেমিকার বাবা হামিদুল ইসলাম পালিয়ে গেছে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

জয়দেবপুর থানার চক্রবর্তী ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মোঃ জাকির হোসেন জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের হাতিমারা হাইস্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী পারভীন আক্তারের সঙ্গে সম্প্রতি একই এলাকার বাসিন্দা বাদশা মিয়ার ছেলে ও একই স্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র তারেক রহমানের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের টানে গত জুন মাসের প্রথম দিকে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মেয়ের বাবা হামিদুল ইসলাম জয়দেবপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর পুলিশ তারেকের বড় ভাইকে গ্রেফতার করে। ভাইকে গ্রেফতারের খবর পেয়ে তারেক ওই ছাত্রীকে তার বাবার কাছে পৌঁছে দেয়। ঘটনাটি স্থানীয় ভাবে একটি আপোষ মিমাংসার প্রক্রিয়া চলছিল। পারভীনের প্রেমের সম্পর্ক তার মা শিরিন আক্তার মেনে নিলেও পারভীনের বাবা ওই সম্পর্ককে মেনে নেননি। এরই মধ্যে বুধবার দিবাগত রাত বারটার দিকে হামিদুল তার মেয়েকে দিয়ে মোবাইল ফোনে তারেককে বাড়িতে ডেকে আনতে বলে। মেয়ে পারভীন তাতে রাজী না হলে তাকে বিদ্যুতের শক দিয়ে ভয়ভীতি দেখায়।

একপর্যায়ে পারভীন মোবাইল ফোন করে তারেককে রাত সাড়ে ১২টার তাদের বাড়িতে ডেকে আনে। রাতে তারেক পারভীনদের বাড়িতে আসার পর পারভীন ও তার মাকে পাশের একটি রুমে আটকে রাখে। এরপর পারভীনের বাবা ও তার সহযোগীরা তারেককে রাতভর বেধড়ক মারধোর করে। নির্যাতনের একপর্যায়ে তারেক ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে তারেকের মুখে বিষ ঢেলে মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে হাতিমারা এলাকার একটি মসজিদের পাশের রাস্তায় ফেলে রেখে আসে হামিদুল ও তার লোকজন। পরে তারেকের বাবাকে খবর দেয়া হয় যে তার ছেলে তারেক রাস্তার পাশে পড়ে আছে।

খবর পেয়ে তারেকের স্বজনরা বৃহস্পতিবার সকালে তাকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তারেককে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রেমিকা পারভীন ও তার বাবার সহযোগী মমিনুল ইসলাম (৩২), প্রত্যক্ষদর্শী সুমন (৯) ও বেলাল হোসেনকে (৭) আটক করে বৃহস্পতিবার বিকেলে জয়দেবপুর থানায় নেয়া হয়। তবে ঘটনার পর থেকে পারভীনের বাবা হামিদুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আব্দুস সালাম জানান, তারেককে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।