স্টেশনে ঘরমুখী মানুষের ঢল-দূর্ভোগে চরমে,টিকেটে বাড়তি ভাড়া

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৫ জুলাই ২০১৫: ফাঁকা হতে শুরু করেছে রাজধানী বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবস হলেও বুধবারই লাইলাতুল কদরের ছুটি থাকার পর একদিন হাতে রেখেই বাড়ির পানে ছুটছে সবাই। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে ইতোমধ্যে অনেকেই ঢাকা ছেড়েছেন।আর ঈদের ছুটিতে যারা রাজধানীতে থাকছেন ও থাকবেন তারা কয়েকদিনের জন্য যানজট, কোলাহল মুক্ত, ফাঁকা নগরীর স্বস্তি উপভোগ করবেন।বুধবার লাইলাতুল কদরের ছুটি থাকলেও কারখানা শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়ার সুবিধার্থে শুধুমাত্র শিল্পাঞ্চলের ব্যাংকগুলো খোলা আছে।শুধুমাত্র দুই ঈদেই রাজধানী ফাঁকা হয়ে যায়। তখন চিরচেনা এ নগরীকে চেনা মুশকিল।এ সময়ে যারা ঢাকা থাকেন তারাই দেখেন ঢাকার ফাঁকা ও অচেনা চেহারা।বছরঘুরে আবারো ঈদ এসে পড়ল ইতোমধ্যে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন অনেকেই। এখনও যাচ্ছেন অনেকে আরো যাবেন।শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবারের পর থেকে রাজধানী প্রায় ফাঁকা হয়ে যাবে বলেই মনে করেন অনেকেই।এদিকে, ঈদে ট্রেনে করে রাজধানী ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ। সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে ছিল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। এবার ট্রেন ছাড়তে কিছুটা বিলম্ব হলেও তা স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নিয়েছেন যাত্রীরা। তাই কোনো ভোগান্তি ছাড়াই ঘরে ফিরতে পারছেন মানুষ।

কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার জানান, এবার শিডিউল বিপর্যয়ের কোনো আশঙ্কা নেই ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়তি চাপ সামলাতে বিশেষ সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।এছাড়াও গাবতলী ও সায়দাবাদ বাসস্টেশনের একই অবস্থা সেখানেও ঘরমুখো মানুষের ভীড়। সদরঘাটেও গিয়ে দেখা দেখা গেছে উপচে পড়া মানুষের ভীড়। একটাই উদ্দেশ্য প্রিয়জনের জন্য সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করা। টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই প্রিয়জনে সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন রাজধানীর বাসিন্দারা। শুক্রবার ঈদের ছুটি শুরুর আগে কেবল বৃহস্পতিবার অফিস খোলা। এ কারণে একদিন বাড়তি ছুটি নিয়ে অনেকেই বুধবার শবে কদরের ছুটির দিনে পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন।কিন্তু বৃষ্টির কারণে সকালে বাসা থেকে বাস বা লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাতে ভুগতে হয়েছে তাদের।কল্যাণপুর ও গাবতলীতে দেশের উত্তর ও দক্ষিণমুখী বিভিন্ন বাসের টিকেটে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ কয়েকজন যাত্রী করলেও বাড়ি ফেরার টিকেট পেয়েই সবাই খুশি।রেল কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত সূচি মেনেই যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে। তবে লঞ্চ মালিকরা বলেছেন যাত্রীর অভাবের কথা।

দক্ষিণ ও উত্তর জনপদের যে যাত্রীরা বাসের আগাম টিকেট কিনেছিলেন, সকাল থেকেই তারা বৃষ্টি মাথায় নিয়ে শ্যামলী, কল্যাণপুর ও গাবতলী বাস টার্মিনালে বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টারে হাজির হতে থাকেন।
তবে বৃষ্টির কারণে অতিরিক্ত ভিড় দেখা যায়নি বলে কল্যাণপুরের গোল্ডেন লাইনের কাউন্টারের ব্যবস্থাপক খান ফরিদ জানান।

শ্যামলী কাউন্টারের সামনে চাপাইনবাবগঞ্জের যাত্রী শফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম অভিযোগ করেন, টিকিটের গায়ে ৫৬০ টাকা দাম লেখা হলেও তাদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ৭০০ টাকা করে।তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্টার ম্যানেজার সুমন বলেন, তারা সরকারের বেঁধে দেওয়া হারেই টাকা নিচ্ছেন।সূচি বিপর্যয় যাতে না হয় সেজন্য টিকিট বিক্রির হার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।হানিফ পরিবহনের ব্যবস্থাপক কাজী আখতারুজ্জামান জানান, ঈদে রাজশাহী, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ আরও কয়েকটি জেলায় প্রতিদিন তাদের ৪০টি করে বাস যাচ্ছে।অধিকাংশ টিকিট আগাম বিক্রি হয়ে যাওয়ায় কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড় কম বলে জানান তিনি। দেশ ট্রাভেলসের কর্মী সোহাগ জানান, দুপুর পর্যন্ত মহাসড়কের কোথা যানজটের খবর পাননি তারা।সুন্দরভাবে নির্বিঘ্নে ঈদে মানুষ বাড়ি ফিরতে পারছে।উত্তরবঙ্গে যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেশি মনে হলেও মাগুরা, ঝিনাইদহ, খুলনা, যশোর, গোপালগঞ্জ, পিরোজপুরসহ দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলার যাত্রীদের ভিড় এখনো ততোটা বাড়েনি।গাবতলী এলাকায় কয়েকটি পরিবহনের কর্মীদের দেখা গেছে যাত্রীদের ডাকাডাকি করতে।গতবছর ঈদযাত্রায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে যাত্রীদের ব্যাপক ভোগান্তি হলেও বুধবার সকাল থেকে সব ঠিকঠাক চলছে বলেই জানিয়েছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী।তিনি বলেন,সকাল থেকে সবগুলো ট্রেন সময়মত ছেড়ে গেছে। শুধু চট্টগ্রামগামী তূর্ণা নিশীথা এক ঘণ্টা চল্লিশ মিনিট লেট হয়েছে।ঈদ উপলক্ষে বুধবার থেকে বিশেষ ট্রেন চালাচল শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

ঈদে মোট চারটি বিশেষ ট্রেন চালাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ১৫ থেকে ১৭ জুলাই এবং ২০ থেকে ২৬ জুলাই দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল, চাঁদপুর স্পেশাল, পার্বতীপুর স্পেশাল ও খুলনা স্পেশাল চলবে।বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকালে কিছু যাত্রী ঢাকার সদরঘাটে হাজির হলেও যাত্রীর অভাবে লঞ্চ ছাড়াতে বিলম্ব হয়েছে।টিপু লঞ্চ কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বলেন, এমভি ফারহান হাতিয়ার ছেড়ে গেছে সকালে কিন্তু যাত্রী পাওয়া যায়নি। আরও তিনটি লঞ্চ পন্টুনে রয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে যাত্রী পাচ্ছি না।সুন্দরবন লঞ্চের মহাব্যবস্থাপক আবুল কালামও যাত্রী কথা থাকার কথা বলেছেন।এমভি ঈগলের কর্মচারী সবুজ বলেন, ২৭ রমজানে যে রকম যাত্রী পাওয়া কথা, এবার তার অর্ধেকও নেই বৃষ্টি কমলে সন্ধ্যায় যাত্রী বাড়তে পারে বলে আশা সবুজের।বিআইডব্লিউটিসিরসহ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহনেওয়াজ মো. খালেদ জানান, মঙ্গলবার থেকে তাদের বিশেষ সেবা চালু হয়েছে।মঙ্গলবার বরিশাল ও মোড়লগঞ্জের উদ্দেশ্যে তিনটি স্টিমার ছেড়েছে। বুধবার এমভি মধুমতি ও অষ্ট্রিচ স্টিমার ছাড়ার কথা। রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে ঈদযাত্রার শুরুতেই বিপত্তিতে পড়েছেন ঘরমুখো যাত্রীরা। এদিকে মেঘনা সেতু এলাকায় সড়ক মেরামত এবং গোমতী সেতুতে ট্রাক বিকল হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে রাত থেকে বিচ্ছিন্নভাবে যানজট চলছে।শুক্রবার ঈদের ছুটি শুরুর আগে কেবল বৃহস্পতিবার অফিস খোলা। এ কারণে অনেকেই একদিন বাড়তি ছুটি নিয়ে শবে কদরের ছুটির দিন বুধবার পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন। সকালে ঢাকার বাসস্ট্যান্ডগুলোতে ভিড়ের দুর্ভোগ পোহাতে না হলেও বৃষ্টির কারণে ঠিকই নাকাল হতে হয়েছে ঘরমুখো যাত্রীদের। এর মধ্যে রাজধানী থেকে উত্তর ও দক্ষিণের পথে দুই মহাসড়কে যানজট ও জলজটের কারণে তাদের গাড়িতে বসে থাকতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়।সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাসন, সাইনবোর্ড, মালেকের বাড়ি, বড়বাড়ি, চান্দনা- চৌরাস্তা মোড়ের পশ্চিম অংশ এবং ভোগড়া বাইপাস সড়কের বিভিন্ন স্থানে হাঁটু পানি জমে থাকতে দেখা যায়।দুপুরের দিকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও পানি জমে থাকায় চালকরা ধীর গতিতে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন । গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, মহাসড়কর থেকে বৃষ্টির পানি সরাতে আমাদের কর্মীরা কাজ করছে।আষাঢ়ের শেষ দিনে টানা বর্ষণে গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় মহাসড়কে পানি জমে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা।আষাঢ়ের শেষ দিনে টানা বর্ষণে গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় মহাসড়কে পানি জমে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা।ঢাকা-গাজীপুর পথে চলাচলকারী ছালছাবিল পরিবহনের বাসচালক সুজন বলেন, সিটি করপোরেশনের বড়বাড়ি থেকে শুরু করে ভোগড়া বাইপাস মোড় পর্যন্ত পানি জমে থাকায় গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না। মাঝে মাঝে গাড়ি জমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

নাওজোর মহাসড়ক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. বাহার আলম বলেন, এলাকায় মহাসড়ক কিছুটা নিচু হওয়ায় এবং আশপাশের এলাকার পানি দ্রুত সরতে না পারায় তা মহাসড়কের ওপর চলে আসে। এতে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।তবে চান্দনা- চৌরাস্তার উত্তর পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চারলেন হওয়ায় এবং সেখানে জলাবদ্ধতা না থাকায় যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে না বলে জানান এসআই বাহার।গাজীপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান জানিয়েছেন, ভোগড়া বাইপাস এলাকার পানি সরানোর জন্য রাস্তার পাশে নালা করে দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টি থামলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে না বলে তার আশা।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, বৃষ্টির কারণে গাড়ি চলাচলে ধীরগতি থাকলেও কোথাও যানজট হয়নি। মহাসড়কে গাড়িতে চাঁদাবাজি যানজটের অন্যতম কারণ। চাঁদাবাজি বরদাস্ত করা হবে না।কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এতে জড়িত থাকলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হোসেন জানান, মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে তারাও রোববার থেকে কাজ শুরু করেছেন। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে মোবাইল কোর্ট করা হচ্ছে। এজন্য ১২জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিআরটিএ’র একজন সহকারী পরিচালক ও দুইজন পরিদর্শক সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাজ করছেন। একই স্থানে যাতে দীর্ঘসময় গাড়ি দাঁড়িয়ে না থাকে সেজন্য মাইকিংও করা হচ্ছে।আষাঢ়ের শেষ দিনে টানা বর্ষণে গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় মহাসড়কে পানি জমে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা।আষাঢ়ের শেষ দিনে টানা বর্ষণে গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় মহাসড়কে পানি জমে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা।এদিকে রাস্তা মেরামত ও দুর্ঘটনার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও ধীর গতিতে যানবাহন চলে । দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি জুবায়ের আলম জানান, মেঘনা সেতু এলাকায় রাতে রাস্তা মেরামতের কারণে দুই ঘণ্টা একপাশ বন্ধ থাকে। এ কারণে যানজট সৃষ্টি হয়।এদিকে গোমতী সেতুর ওপর একটি ট্রাক বিকল হওয়ায় এক পাশের লেইনে দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ থাকে। ভোরে ট্রাক সরিয়ে নেওয়া হলেও ততক্ষণে গাড়ির জট তৈরি হয়।ঈদে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া এবং শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌপথে বন্ধ রাখা হয়েছে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার।বুধবার সকাল থেকে এই ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে বলে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জিল্লুর রহমান জানিয়েছেন।মাওয়া বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীমও পণ্যবাহী ট্রাক পারপার বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন।তবে শিমুলিয়া ও কাওড়াকন্দিতে যাত্রাবাহী বাসের কম থাকায় মাঝে মাঝে ট্রাকও পারাপার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।ঈদের আগে-পরে তিন করে ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে এ সময়ে কাঁচামাল, শিশুখাদ্য ও জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করা হবে।দুই নৌপথেই বর্তমানে ১৮টি করে ফেরি চলছে। দুটি বহরে আরো একটি করে ফেরি যুক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা।

শব-ই-কদরের রাত পেরুলো। ঈদ একেবারে দুয়ারে। এবার ধরতে হবে বাড়ির গাড়ি। ঢাকার বাস টার্মিনালগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না এসময়। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে কালো মেঘে ঝুম বৃষ্টি বাধ সাঁধছে ঈদযাত্রায়। উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় যেতে প্রতিদিনের মতো মহাখালী বাস টার্মিনালে ভিড় জমাচ্ছেন ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। অন্য দিনের তুলনায় ভিড়ও বেশি। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই খুশি মনে যাত্রীরা পাড়ি জমাচ্ছেন গন্তব্যে।একই অবস্থা গাবতলী বাস টার্মিনালেও। তবে বৃষ্টির কারণে কমবেশি সিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে বলে জানালেন যাত্রীরা।সিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়ে হানিফ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার এম রানা লেন, আজ সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে যাত্রীদের কাউন্টারে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে, ফলে কিছুটা বিলম্ব করেই ছাড়তে হচ্ছে।

যাত্রীদের সাথে কথা বলেও জানা যায় বৃষ্টি বিড়ম্বনার কথা। মাগুড়ার যাত্রী মো. রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার বিকাশ পরিবহনের টিকিট নিয়েছি আগেই। আজ সকালে বৃষ্টির কারণে বাসা থেকে বের হতে পারছিলাম না। এরমধ্যে সুপারভাইজর ফোন করেছে। তাই ভিজেই চলে এসেছি।এদিকে যাত্রীদের ভোগান্তি, বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কি-না সরেজমিন দেখতে গাবতলী টার্মিনালে আসেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আশাকরি এবার স্বস্তিতেই মানুষ বাড়ি ফিরতে পারবে। মহসড়কে কোনো সমস্যা নেই। রাস্তা ভালো, এছাড়া এখন পর্যন্ত কেউ অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।মহাখালী টার্মিনালে দেখা গেলো, একহাতে ব্যাগ, অন্যহাতে সন্তানকে টেনে নিয়ে কাকভেজা হয়ে কোনো রকমে বাস কাউন্টারে পৌঁছেছেন তাহমিনা। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর যাবেন তিনি।বলেন, বৃষ্টির মধ্যেই সিএনজি নিয়ে এখানে এসেছি। বাস ধরতে পারলে আশা করছি আর কোনো সমস্যা হবে না। এখন যেকোনোভাবে বাড়ি পৌঁছানোটাই লক্ষ্য। পরিবারের সবাই আমাদের অপেক্ষায়। তাদের কাছে পৌঁছানো মানেই তো ঈদ।এদিকে বাসের কাউন্টারম্যানরা বলছেন, বৃষ্টির কারণে যাত্রী কিছুটা কম। এছাড়া উত্তরাঞ্চেলের বেশিরভাগ যাত্রী ট্রেনে যাতায়াতের কারণে বাসগুলোতে যাত্রীর চাপ কম থাকে। তবে যাত্রী যাই হোক না কেন দু’এক মিনিট পরপরই মহাখালী থেকে ছাড়ছে কোনো না কোনো কোম্পানির বাস।কাউন্টারম্যানদের দাবি বৃহস্পতিবার থেকেই ঈদের ‘আসল ভিড়’ শুরু হবে।

নওগাঁগামী শাহজালাল এক্সপ্রেসের কাউন্টারম্যান কুতুব বলেন, অফিস ছুটি হতে বাকি আরও একদিন। এখন তো সেই অর্থে কোনো ভিড়ই নেই। আসল ভিড় শুরু হবে বৃহস্পতিবার অফিস ছুটির পর থেকে।এনা পরিবহনের কাউন্টারম্যান মাহবুব বলেন, মহাখালী এলেই টিকিট মিলছে। যারা আসছেন কাউকেই টিকিটের জন্য হাহাকার করতে হচ্ছে না। প্রতি মুহূর্তে গাড়ির ব্যবস্থা আছে। বৃষ্টি কিছুটা বিঘ্ন ঘটালেও আশা করছি বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চাপও বাড়বে।

এদিকে যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে মহাখালী বাস টার্মিনালের চারদিকে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া প্রহরা। একদিকে র‌্যাব, অন্যদিকে ডিএমপির সার্বিক নজরদারি।র‌্যাবের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের ঈদযাত্রা যেন সহজ হয়, তারা যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন সেসব বিষয় দেখভাল করতেই আমরা তাদের পাশে আছি।পুরো মহাখালী টার্মিনালে যেটা সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় বাড়ি যাত্রা নিয়ে কারো খুব বেশি আক্ষেপ নেই। কষ্ট হবে যেনেও সবাই ছুটে চলেছেন বেদনাহীন প্রশান্তি নিয়ে।তবে বাস ভাড়া নিয়ে অভিযোগ আছে কারও কারও।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া অভিযোগ পেলে তারা ব্যবস্থা নেবেন। তবে এখনো পর্যন্ত তাদের কাছে এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসেনি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ঈদে নৌপথে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তায় কোনো প্রস্তুতি নেই। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে চরম উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছ বলে অভিযোগ করেছে সাধারণ যাত্রীরা। এবার ঈদের আগে থেকেই দুর্যোগপূর্ণ আবহওয়ার আভাস দিলেও এখনো কোনো প্রস্তুতির কথা জানাতে পারেনি কেউ। তাই ঈদে লঞ্চে বাড়ি ফেরার ঝুঁকি বাড়লো দ্বিগুণ।প্রতি ঈদের আগে সরকারের তরফ থেকে প্রতিটি নৌযানে পর্যাপ্ত বয়া, নৌপথে বাতি, মার্কিং, লাইফ জ্যাকেটসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখার নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এমনকি এসব মানা হচ্ছে কি না তারও মনিটরিং হচ্ছে না। এবারও যদি একই অবস্থা বিদ্যমান থাকে তবে ফি বছরের মতো বড় ধরণের নৌ দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন যাত্রীরা।

খবর নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন ঈদ ও বর্ষায় লঞ্চডুবি রোধে ( নৌ-নিরাপত্তায়) সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বা কোনো পূর্ব প্রস্তুতি নেই। মেয়াদোত্তীর্ণ নৌযান, ধারণক্ষমতা চেয়ে বেশি যাত্রী বহন, মাঝ নদীতে পাল্লা দিয়ে নৌযান চালানো ইত্যাদি কারণে যেসব দুর্ঘটনা ঘটে তা বন্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে না। এমনকি এসব দুর্ঘটনার পেছনের কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও কর্মকর্তাদের দুর্নীতির যে বিষয়টি জড়িত তার বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।প্রতিবছর ঈদের আগে নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর, নৌযান মালিক সমিতিসহ নৌ সেক্টরের সব সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে ঈদ পূর্বপ্রস্তুতি সভা হয়। এবারও সে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৪ জুন বিআইডব্লিটিএ ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় ঈদ উপলক্ষে লঞ্চ, ফেরি, স্টিমারসহ বিভিন্ন জলযান সুষ্ঠুভাবে চলাচলের জন্য বেশ কিছু জরুরি সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে যাত্রী সেবা নিশ্চিতকরণ, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, নৌরুট ব্যবস্থাপনা, নৌযান বৃদ্ধি বিষয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে আনফিট লঞ্চ চলতে দেয়া হবে না। ছাদে বা অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা যাবে না। এছাড়া চলাচলকারী সকল নৌযানে পর্যাপ্ত বয়া, নৌপথে বাতি, মার্কিং, লাইফ জ্যাকেট পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত কেবল সিদ্ধান্তই থেকে যায়। প্রতি বছরই এরকম সিদ্ধান্ত হয় কিন্তু তার বাস্তবায়ন হয় না। এরই মধ্যে ঈদ সার্ভিস শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে দেখা যাচ্ছে না কাউকে। ফলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নৌ দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রসঙ্গত, অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে প্রতিবছরই লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটছে। গত বছর ৪ আগস্ট ঈদ ফেরত যাত্রায় মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়া ঘাটে আসার পথে পদ্মায় এমভি পিনাক-৬ নামের একটি লঞ্চ ডুবে যায়, যাতে প্রাণহানি ও নিখোঁজের মোট সংখ্যা ছিল শতাধিক। বেপরোয়া চলাচলসহ অতিরিক্ত যাত্রী বহনকে ওই দুর্ঘটনার কারণ বলে দায়ী করা হয়।ভারি বর্ষণ মওসুমেই এবারের ঈদ পড়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়েছে। তাই ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাত্তায় এবং নৌ দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এখনই সতর্কতামূলক বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ বলে মনে করেন জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক।ঈদ পূর্বপ্রস্তুতি সভার সিদ্ধান্ত কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে, ঠিকমতো লঞ্চে মনিটরিং হচ্ছে কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বাদল বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে অন্য প্রসঙ্গে বলেন, লঞ্চ দুর্ঘটনা রোধ না হলে নৌপথ হবে বিপন্ন। এখন থেকেই নৌদুর্ঘটনা রোধে স্থায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে। দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটি করে দুর্ঘটনা রোধ করা যাবে না।

বৃৃষ্টির বাধা পেরিয়ে বুধবার সকাল থেকেই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে আসতে শুরু করে ঈদে ঘরমুখী মানুষের ঢল। কিন্তু ভোগান্তি নিয়ে পৌঁছেও শান্তি তে নেই যাত্রীরা। রয়েছে নানান অভিযোগ।লঞ্চ পূর্ণ হয়ে গেলেও না ছাড়ায় বাড়তি ভোগান্তির অভিযোগ যাত্রীদের। তবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বলছে, সব যাত্রী না আসায় লঞ্চ ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না। সেহরির পর থেকেই টার্মিনারে আসতে শুরু করেন যাত্রীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সহকারী পরিচালক সামশুল আরেফীন জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুরসহ বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গিয়েছে ১৮টি লঞ্চ।তিনি আরও জানান দুপুর ২টা পর্যন্ত কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই লঞ্চগুলো পন্টুন ত্যাগ করতে সক্ষম হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পন্টুন স্বল্পতার কারণে ময়ূর-২ ও ৭ সহ বেশ কয়েকটি লঞ্চ রাখা হয়েছে অন্য লঞ্চের পিছনে। যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়েই অন্য লঞ্চের পাশের বাড়তি জায়গা দিয়ে হেঁটে লঞ্চে উঠছে। যেকোনো সময়ই পড়ে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। আবার কোনো কোনো লঞ্চে লাগানো হয়নি সিঁড়ি। ফলে বৃষ্টি ভেজা টার্মিনাল থেকে লঞ্চে উঠতে বেগ পেতে হচ্ছে যাত্রীদের।

অন্যদিকে কর্ণফুলী-১০, শ্রীনগর-৩ সহ বেশ কয়েকটি লঞ্চ যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে গেলেও ছাড়া হয়নি। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ভোলাগামী শ্রীনগর-৩ এর এক কর্মচারী। পরবর্তীতে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। মো. ইব্রাহীম নামে এ লঞ্চের এক যাত্রী বলেন, সকাল ৬টায় লঞ্চে উঠেছি, যাত্রী দাঁড়ানোরও জায়গা নেই। কিন্তু তারা দুপুর দুইটায়ও লঞ্চ ছাড়ছে না। লঞ্চ ছাড়তে বলায় উল্টো তারা যাত্রীদের গায়ে হাত তুলছে।শ্রীনগর-৩ এর ইনচার্জ রুহুল আমিন বলেন, ডেকের যাত্রী সকালে এসে উঠে বসে আছে। কিন্তু এখনও কেবিনের অর্ধেক যাত্রী আসেনি। তাছাড়া লঞ্চ ছাড়ার কথা ৭টায়। আমরা পড়েছি উভয় সংকটে। যাত্রী রেখে চলে গেলেতো তারা আবার আমাদের ধরবে। আমরা এখন কী করব?লঞ্চ টার্মিনালে আইন-শৃংখলা রক্ষায় ৠাব, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও বিএনসিসি সদস্যদের ততপরতা চোখে পড়ার মতো।

যাত্রীরা যে করেই হোক ঈদে ফিরতে চায় স্বজনের কাছে। সবাই মিলেমিশে একসাথে ভাগাভাগি করে নেবে ঈদের আনন্দ। কোনো বাধাই এখন তাদের কাছে বাধা নয়।ঈদ উপলক্ষে বাড়তি যাত্রী পরিবহনে বুধবার রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে বিশেষ ট্রেন চালু হচ্ছে।কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন খুলনা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রামের পথে বিভিন্ন সময়ে ৬৩টি ট্রেন ছেড়ে যায়।ঈদ উপলক্ষে বুধবার থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর, খুলনা ও দেওয়ানগঞ্জের উদ্দেশ্যে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করা হচ্ছে বলে কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী জানিয়েছেন।বিকাল ৩টার দিকে খুলনাগামী ট্রেনটি ছেড়ে যাবে বলে জানান তিনি।ঈদের কয়েকদিন আগ থেকে রেলপথে অতিরিক্ত ভিড়-ঠেলাঠেলি কিংবা সূচি বিপর্যয়ের ভোগান্তি হয়ে থাকলেও মঙ্গলবার অনেকটা নির্বিঘেœ কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছেন ঘরমুখো মানুষ।

আগাম টিকিট কিনে ভ্রমণের সুযোগ থাকলেও মঙ্গলবার সকালে এসেই দুপুরের টিকিট কিনে ঈদযাত্রা করতে পেরেছেন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, পাবনা সিলেটসহ বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা।চলতি জুলাইয়ের ১৮ কিংবা ১৯ তারিখে ঈদুল ফিতর সামনে রেখে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঈদের ছুটিতে গ্রামে ছুটিছে শহুরে মানুষজন।ঈদের আগে প্রতিবছর বাস ও রেল স্টেশন এবং লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। মঙ্গলবার পর্যন্ত সেরকম ভিড় চোখে পড়েনি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী রিয়া ও মিতা তাদের ক্লাস থ্রিতে পড়ুয়া ছোট ভাই অয়নকে নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পাবনার চাটমহরের উদ্দেশ্য রওয়ানা হন।রিয়া জানান, ঈদের ভিড় শুরু হওয়ার আগেই গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের কাছে পৌঁছাত চান তারা।আর সে কারণেই একটু আগেভাগে বাড়িতে যাচ্ছেন।কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ঈদ সামনে রেখে সকাল থেকে নির্ধারিত যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে নির্বিঘেœ ছেড়ে যাচ্ছে।