file-1

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৭ জুলাই: নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল,সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।এদিকে নদী উত্তাল থাকায় দেশের বেশিরভাগ নৌ-পথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করাহয়েছে।সদরঘাট নৌ-বন্দর,মাওয়া-চরজানাজাত,কাওরাকান্দি,পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া নৌ-পথসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বেশীর নৌ-পথে রোববার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ।আবহাওয়া অনুকূলে না আসা পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে। সন্ধ্যা ৭টায় বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। উপকূলীয় এলাকায় মৌসুমী নি¤œচাপটি অবস্থান করছে

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত মৌসুমী নি¤œচাপটি সামান্য পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।এটি সোমবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৮০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার পশ্চিম-উত্তরপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থান করছিল।এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এটি আরও ঘণীভূত হতে পারে। সোমবার আবহাওয়ার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

এতে বলা হয়, নি¤œচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নি¤œচাপ কেন্দ্রের নিকটে সাগর মাঝারি ধরনের উত্তাল রয়েছে।চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর সমূহকে ৩ (তিন) নম্বর পুনঃ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে অতি সত্তর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র রোববার জানিয়েছে, সুরমা, কুশিয়ারা, কপোতাক্ষ, হালদা, সাংগু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এবং নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর মাঝারি ধরনের উত্তাল রয়েছে।অপরদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি দ্রুত ঘনীভূত হয়ে মৌসুমী নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম-পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সন্ধ্যার পর থেকে সদরঘাট নৌ-টার্মিনাল থেকে লঞ্চ চলাচল করেনি।

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অনুকূলে না আসা পর্যন্ত যাত্রীবাহী নৌ যান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানান।বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের সহকারী পোর্ট অফিসার সাজ্জাদুর রহমান জানান, পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঝড়ো হাওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।অপরদিকে বিআইডব্লিউটিএ’র মাওয়া ঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, বিকেল থেকেই নদীতে প্রচণ্ড ঢেউয়ের সৃষ্টি হচ্ছে।

বরগুনা :বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার থেকে সাগর উত্তাল রয়েছে। সাগরে বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে।মাছধরা ট্রলারগুলো উপকূলের নিরাপদ আশ্রয় ও মৎস্য বন্দরগুলোতে ফিরে আসছে।আবহাওয়া বিভাগ সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করেছে।

সব মাছধরা নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।বন বিভাগের পূর্ব সুন্দরবন রেঞ্জের কর্মকর্তা (এসিএফ) কামাল আহম্মেদ জানান, বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় শনিবার সকাল থেকে কয়েকশ মাছধরা ট্রলার ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিরাপদ আশ্রয়ে সুন্দরবনের ছোট ছোট খালে নোঙর করেছে।বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানিয়েছেন, এখনো মাছ ধরা ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরছে। মত বন্ধ

মুন্সীগঞ্জবৈরি আবহাওয়ায় পদ্মা উত্তাল হয়ে ওঠায় শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে যাত্রীবাহি লঞ্চ ও স্পীডবোট চলাচল দ্বিতীয় দিনের মত বন্ধ রয়েছে।সোমবার শিমুলিয়া ঘাট থেকে এসব ছোট নৌযান ছেড়ে যায়নি এবং কাওড়াকান্দি থেকেও ছেড়ে আসেনি। তবে ডাম্প ফেরিসহ সকল ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ৩টি রো রো সহ ১৪টি ফেরি দিয়ে পারাপার চলছে।লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ফেরিতেই পারাপার হচ্ছে। তাই ফেরিতে ভিড় বেশি। শিমুলিয়ায় ২০টি বাস এবং ১শ’ ট্রাক পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। কাওড়াকান্দিতেও শতাধিক যান পারাপারের অপেক্ষায়।

শিমুলিয়া নদী বন্দরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তোফাজ্জল হোসেন জানান, বৈরী আবহাওয়ায় পদ্মা নদীর পানিতে উত্তাল ঢেউ ও তীব্র স্রোত দেখা দেয়। এতে দুর্ঘটনা এড়াতে উভয় ঘাট থেকে লঞ্চ, সিবোট, ট্রলারসহ ছোট ছোট নৌযানগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।তিনি জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় বন্ধ রাখা নৌযানগুলো চালু করা হবে।

ভোলা:দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মেঘনা নদীর ঢেউয়ের আঘাতে ভোলায় সোমবার ভোররাতে ইলিশা ফেরিঘাটের সংযোগসড়ক সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে।এ কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরি চলাচল এবং এই রুট দিয়ে চলাচলকারী বরিশাল,খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলীয় ২১টি জেলার যানবাহন বন্ধ হয়ে গেছে ।বিআইডব্লিউইটিসি সূত্র জানায়,গত ২দিনের দুর্যোগপূর্ন আবহাওয়ার কারণে ভোলা-লক্ষীপুর রুটের ইলিশা পাকার মাথা নামক স্থানটি মেঘনা নদীর ঢেউয়ের আঘাতে বিলীন হয়ে যায়।

অপরদিকে ঘাটে ফেরি ভিড়ানো থাকলেও রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় গাড়ী নামতে পারছে না।ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ঈদে নাড়ীর টানে বাড়ি আসা এবং এখন কর্মস্থলে ফিরে যাওয়া শত শত মানুষ। একই সাথে বিলিন হয়ে যায় পাকার মাথা নামক স্থানে থাকা একটি মাছঘাটের অর্ধশত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। নদীর ভাঙ্গন তীব্র হওয়ায় এলাকার মানুষ দ্রুত ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে।বিআইডব্লিউইটিসির ঘাট ম্যানেজার মো: আবু আলম জানান, উত্তাল মেঘনা নদীর ঢেউয়ের আঘাতে ভোলা ইলিশা ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে ভোলা-লক্ষীপুর রুটের ফেরি চলাচল। কবে নাগাদ চালু করা সম্ভব তা বলা যাচ্ছে না।