DRU-13

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ আগস্ট ২০১৫: কথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহত হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. আরজু মিয়াকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে র‌্যাবই হত্যা করেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।বুধবার সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে কথিত বন্দুক যুদ্ধের হোতা র‌্যাব-২ এর কর্মকর্তাদের ফাঁসি চাই’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ অভিযোগ করেন হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।গত সোমবার রাতে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরজু মিয়া নিহত হয়েছে বলে দাবি করে র‌্যাব।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক হামিদ সাজু।

তিনি বলেন, ঘটনার দিন বিকেল ৩টার দিকে র‌্যাব-২ এর একটি দল রাজু মিয়াকে হাজারীবাগ পার্কের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর রাত ৩টার দিকে তাকে আসামি গ্রেপ্তারের কথা কথা বলে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে নিরীহ আরজুকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে।তিনি বলেন, এ ঘটনায় র‌্যাবের পাশাপাশি সরকারেরও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা, মোকদ্দমা এমনকি জিডি পযর্ন্ত নেই। তিনি ছিলেন এলাকার জনপ্রিয় তরুণ ছাত্রনেতা।এঘটনার যথাযথ তদন্ত করে এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন এলাকার স্বীকৃত মাদকসেবী রাজা মিয়াকে মোবাইল চুরির অভিযোগে এলাকাবাসী গণপিটুনি দিলে সে নিহত হয়। এ ঘটনায় আরজুর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়। যা বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।আরজুর স্বভাব-চরিত্র বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আরজু ছিলো ক্রীড়াপ্রেমী। খেলার প্রতি ছিলো তার অগাধ টান। এলাকার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। পাঞ্চায়েত কমিটিরও নেতা তিনি। এমন ব্যক্তিকে হত্যা করা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না কেউ।

সংবাদ সম্মেলনে হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহায়মেন রায়হান বলেন, ‘আরজু মিয়াকে জামায়াত-বিএনপি ও যুদ্ধাপরাধীদের দোসররা র‌্যাবকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।এলাকায় আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য র‌্যারিস্টার তাপসের যে সুনাম রয়েছে তা ক্ষুন্ন করতেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।থানা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইয়াফেজ আহমেদ সামি বলেন, ‘আজ (বুধবার) জোহর নামাজের পর আরজুর জানাজা সম্পন্ন হবে। এরপর আমরা মহানগর ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উদ্যোগে এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করবো। এরইমধ্যে আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।নিহত ছাত্রলীগ নেতা আরজুর বড়ভাই মাসুদ রানা বলেন, র‌্যাব আমার ভাইকে সন্ত্রাসী বানিয়েছে। আমার ভাই সন্ত্রাসী নয়। তার আপরাধ সে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। গভীর রাতেও ছাত্রদের সমস্যায় সে এগিয়ে যেতো।তিনি অভিযোগ করে বলেন, একদিন রাত ১২টার দিকে হাজারীবাগের বটতলার এক চা দোকানদারের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডা হয়। দোকানদার আরজুকে ফোন করলে আরজু সেখানে গেলে পুলিশ আরজুর সঙ্গেও হাতাহাতি করে। এ ক্ষোভেই পুলিশ তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে সন্ত্রাসী বানিয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে আমার মা নিষেধ করেছেন মামলা না করতে। তিনি আমাকে ডেকে বলেছেন- তোর ভাইতো ছাত্রলীগের নেতা ছিলো সে রক্ষা পায়নি। আর তুইতো সাধারণ মানুষ। আমার এক ছেলেকে হারিয়েছি আর তোকেও হারাতে চাই না। তারা তোকেও মেরে ফেলবে।তিনি বলেন, এর পরেও আমরা আলাপ আলোচনার পর র‌্যাবের বিরুদ্ধে মামলা করবো।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিরল হাজী তরিকুল ইসলাম সজিব, হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম রাজিব হোসেন, ১৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলজাহান ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন খোকন, ২২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মো. আখতার হোসেন প্রমুখ।প্রসঙ্গত, হাজারীবাগে মোবাইল চুরির অভিযোগে কিশোর মো. রাজাকে (১৬) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ডধান আসামি থানা ছাত্রলীগ সভাপতি আরজু মিয়া র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গত মঙ্গলবার নিহত হন।