mokka

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫: সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরের হারাম শরিফে ক্রেন ভেঙে পড়ার ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ১০৭ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন ২৩৮ জন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৪০ বাংলাদেশি রয়েছেন। শনিবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, মক্কার স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিশালাকারের ক্রেনটি নির্মাণকাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। সৌদি আরবের বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রচণ্ড ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মাগরিবের নামাজের আগে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার সময় হারাম শরিফ মুসল্লিতে পরিপূর্ণ ছিল। তাঁদের অধিকাংশই হজ পালনের উদ্দেশে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে সমবেত হওয়া মুসল্লি বলে ধারণা করা হচ্ছে। পবিত্র হজ শুরুর অল্প কয়েক দিন আগে এ দুর্ঘটনা ঘটল। বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষের প্রধান জেনারেল সুলেইমান আল-আমর বলেন, হতাহত সবাইকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলে আর কোনো হতাহত ব্যক্তি নেই।

রাত সাড়ে ১২টায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ্ বলেন, দুর্ঘটনায় ৪০ জন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে পাঠানোর পর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ গুরুতর আহত হননি। এ ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব ও ক্ষয়ক্ষতির আনুষ্ঠানিক তথ্য এখন পর্যন্ত জানায়নি সৌদি কর্তৃপক্ষ। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পড়ে থাকতে দেখা যায় বিশাল ক্রেনের অংশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, হারাম শরিফের চতুর্থ তলায় আছড়ে পড়ে ক্রেনটি। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, দুর্ঘটনার পর অনেকের রক্তাক্ত দেহ হারাম শরিফের মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। কারও কারও দেহ চাপা পড়ে আছে ধ্বংসস্তূপের নিচে। দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়। জুমার দিন হওয়ায় হারাম শরিফে মুসল্লিদের ভিড় স্বাভাবিকভাবেই অন্য দিনের তুলনায় বেশি ছিল। হজের উদ্দেশে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লাখো হাজিও এরই মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন সেখানে। অধিক সংখ্যক মুসল্লি যাতে পবিত্র হজ সম্পাদন করতে পারেন, এ জন্য হারাম শরিফ কমপ্লেক্সের আয়তন বৃদ্ধির পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ চলছে। নির্মাণকাজের জন্য হারাম শরিফের চারপাশে অনেক ক্রেন বসানো হয়েছে। দুর্ঘটনার আগে ২০০৬ সালে হজের সময় পদদলিত হয়ে শতাধিক হাজির মৃত্যু ঘটে।

এদিকে, মক্কায় মসজিদ আল হারামে কিভাবে একটি ক্রেন ভেঙ্গে পড়লো তা নিয়ে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।এই দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত অন্তত ১০৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো কয়েকশো মানুষ।আহতদের মধ্যে ৪০ জন বাংলাদেশিও রয়েছে।মসজিদ আল হারাম বা কাবা শরিফ মুসলমানদের কাছে পবিত্রতম স্থান।শুক্রবার প্রচন্ড- ঝড়ের মধ্যে একটি ক্রেন ভেঙ্গে পড়ে। দুর্ঘটনাটি ঘটে এমন সময় যখন মক্কা শহরে বাৎসরিক হজ্জের প্রস্তুতি চলছে।এই মাসে পবিত্র হজ্জ পালনের জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সৌদি আরবের এই শহরে আসবেন।মসজিদ আল-হারাম-এ নামাজিদের সংখ্যা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছর সৌদি কর্তৃপক্ষ মসজিদ সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে।শুক্রবারে যে ক্রেন মসজিদের ছাদ ভেঙ্গে পরে সেটা সম্প্রসারণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল।ইসলাম ধর্মের সব চেয়ে পবিত্র এই মসজিদের কেন্দ্রস্থলে কা’বা অবস্থিত, যার দিকে মুখ করে মুসলমানরা নামাজ পড়েন।