ভোটাররা আতঙ্কে, সবার নিরাপত্তার গ্যারান্টি চায় বিএনপি

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫: সারাদেশে ক্ষমতাসীনরা সন্ত্রাস চালাচ্ছে অভিযোগ করে পৌর ভোটের দিন বিএনপি প্রার্থীদের এজেন্টদের নিরাপত্তা এবং নির্বিঘেœ ভোট দেওয়ার গ্যারান্টি’ চেয়েছে দলটি।রাজধানী থেকে ভারাটে সন্ত্রাসী নিয়ে বিভিন্ন পৌর এলাকায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর সরকার দলের লোজন তাণ্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন,পৌর নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের মারপিট ও তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা। মারপিট ও হামলা করে ক্ষ্যন্ত হননি তাদের নানা ধরনের ভয়ভীতি দেওয়া হচ্ছে। পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির যে সকল নেতাকর্মীরা কথা বলছেন বা ভোট চাইছেন তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। নানা ভাবে হয়রানী করা হচ্ছে তাদের। মূল পৌর নির্বাচন নিয়ে সরকার নোংরামির খেলায় মেতেছে।তিনি বলেন, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা বলতে কিছু নেই। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভয় পাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সাতক্ষীরা, বিরামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সাভার, খাগড়াছড়ি, ময়মনসিংহ, গৌরীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির প্রার্থী সমর্থকদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তারা যাতে কোনো ভাবে ভোটারদের কাছে না যেতে পারে।

বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকদের মারপিট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রুহুল কবির রিজভী। নির্বাচন আদৌ সুষ্ঠু হচ্ছে কিনা সন্দেহ করছেন রিজভী। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সরকারের আলালের দুলাল। তাদের নির্দেশনা কেউ মানছে না। সন্ত্রাসীদের ভয়ে সাধারণ ভোটাররাও আতঙ্কে রয়েছেন।তিনি বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন একাকার হয়েছে গেছে। ক্ষমতাসীনরা বেপরোয়াভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলতে চাই, সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করবেন না, প্রশাসনযন্ত্রকে নিরপেক্ষ রাখতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করুন।রিজভী বলেন, ভোটের দিন নির্বাচনী কেন্দ্রে বিরোধী দলের প্রার্থীর এজেন্টদের নিরাপত্তা দিতে হবে। ভোটাররা যাতে তাদের ইচ্ছামতো ভোট দিতে পারেন, তার গ্যারান্টি দিতে হবে।নইলে মিরজাফরের মতো বিশ্বাসঘাতকতার তকমা দীর্ঘকাল নির্বাচন কমিশনকে বহন করতে হবে বলে তিনি হুঁশিয়ার করেন। রিজভী বলেন, পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তীব্রতম করা হয়েছে সন্ত্রাস। ধানের শীষের প্রার্থীর প্রচারের মাইক ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে, পথসভার স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ করে হামলা চালানো হচ্ছে, মুখোশ পরে ধানের শীষের প্রার্থী ও তার কর্মীদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা বা হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করা হচ্ছে।

কেবল তাই নয়, বিভিন্ন পৌর এলাকায় শাসকদলের নেতারা বলে বেড়াচ্ছেন- যে ভোট গ্রহণই হোক না কেন, গণনা হবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখাতে নানা ধরনের হুমকি ও উসকানিমূলক বক্তব্য তারা দিচ্ছে।সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর থেকে উদ্ধৃত করে রিজভী বলেন, রাজধানীর বেশ কয়েকটি পেশাদার সন্ত্রাসী গ্র“পকে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ভাড়ায় নিয়োজিত করা হয়েছে। সংবাদপত্রে এমন খবরও প্রকাশিত হয়েছে যে, জেলখানায় বসে কোনো কোনো শীর্ষ সন্ত্রাসী চুক্তি করছে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের সঙ্গে।নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে এই বিএনপি নেতা বলেন, কমিশন সরকারের আদরের দুলালের ন্যায় ভূমিকা পালন করছে। তাদের নির্লিপ্ত আত্মার বন্ধন মোচন করতে পারছে না। যার কারণে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে রক্তঝরা সন্ত্রাস-সংঘাতের ক্রমবর্ধমান বিস্তার রোধ করতে পারছে না।আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে জনমনে আস্থা সৃষ্টির জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, রফিক শিকদার ও তাইফুল ইসলাম টিপু সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।