30-01-16-PM_Ctg-1

দৈনিকবার্তা-চট্টগ্রাম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬: আওয়ামী লীগ দেশে অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দেবে মন্তব্য করে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।দেশের উন্নয়ন কাজ চালিয়ে নিতে ব্যবসায়ীদের সময়মতো ট্যাক্স দেওয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়নের ৯০ ভাগ কাজ এখন নিজেদের বাজেটে হচ্ছে। উন্নয়ন করবো, কিন্তু কারও কাছে হাত পাততে পারবো না।তাই আপনাদের ট্যাক্স ঠিকমতো দিতে হবে।শনিবার বিকেলে নগরীর আগ্রাবাদে দেশের একমাত্র ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উদ্বোধন করেন তিনি।প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। রাজস্ব হিসেবে প্রাপ্ত অর্থ দেশের উন্নয়ন কাজে ব্যয় হচ্ছে। সরকারের একমাত্র লক্ষ্য দেশের উন্নয়ন।তিনি বলেন, চট্টগ্রামের এসব উন্নয়ন ভবিষ্যতে আরও উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করে দিবে। চট্টগ্রামের জন্য সাধ্য অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ ম্যুরাল, কদমতলী ফ্লাইওভার, বাইপাস সড়ক এবং রিং রোডের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ মানেই উন্নয়ন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে উন্নয়ন হয়। আর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকলে কোন উন্নয়ন হয়না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকলে লুটপাট, দুর্নীতি আর মানিলন্ডারিং করে। তারা এতিমদের টাকা মেরে খায়। আমরা ক্ষমতায় এলে জনগণ কিছু পায়। বাংলাদেশ একমাত্র দেশ যেখানে বেতন শতভাগ বাড়ানো হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশ গড়ব। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ প্রতিষ্ঠা করব। বলেন হাসিনা।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দেবে। জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ব। প্রধানমন্ত্রী সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ।

এদিকে, শনিবার চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর কুয়াইশ অংশে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সংযোগস্থলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ ছয়টি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ দেশে অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দেবে মন্তব্য করে বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গীকার করেন ।প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা শান্তি ও উন্নয়নে বিশ্বাস করি। আর বিএনপি আন্দোলনের নামে বাংলাদেশের মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে।চট্টগ্রামের কর্ণফুলী রক্ষায় বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ বিভিন্ন নেতাকর্মী ও প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।এর আগে সকালে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ইবিআরসি এর নবম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানযোগে ঢাকায় ফিরে আসেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে নগরীর রাজপথে নেমে আসেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন উৎসুক জনতাও। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে নগরীর বিভিন্ন স্থানে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।

শনিবার চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের নবম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শেষে বিকেল তিনটায় প্রধানমন্ত্রী অক্সিজেন থেকে কাপ্তাই রাস্তা পর্যন্ত সিডিএ নির্মিত বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ ম্যুরাল, কদমতলী ফ্লাইওভারের উদ্বোধন এবং একই সময়ে বাইপাস সড়ক এবং রিং রোডের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন।এছাড়া লালখানবাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেল সাড়ে তিনটায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উদ্বোধন এবং আগ্রাবাদে দি চিটাগং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর একটা থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে অক্সিজেন মোড়ে অবস্থান করেন নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে বড় ধরনের জাগরণের সৃষ্টি হয়েছে। সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী যতবারই চট্টগ্রামে আসেন ততবারই চট্টগ্রামবাসীকে নতুন নতুন উন্নয়ন উপহার দেন। এবারও তিনি পাঁচ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে এসেছেন। চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নেয়ার যে ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছিলেন তা তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন। সিডিএ’র বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য অনন্যা আবাসিক এলাকা ও কুয়াইশের সংযোগ সড়কে বড় একটি মঞ্চ স্থাপন করা হয়। সেখানে প্রায় এক হাজার মানুষের বসার জায়গা করা হয়। অনন্যা আবাসিক এলাকার ভেতরে প্রায় দশ হাজার মানুষের বসার জন্য আরেকটি বড় প্যান্ডেল করা হয়।সেখানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনানোর জন্য মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বসানো হয়।

দুপুর দেড়টার মধ্যেই নগরীর অক্সিজেন মোড় থেকে অনন্যা আবাসিক এলাকা হয়ে কুয়াইশ সংযোগ সড়ক পর্যন্ত স্থানটি লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড, ইউনিট ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ঢোলবাদ্য বাজিয়ে, মিছিল নিয়ে সেখানে হাজির হন। জয় বাংলা, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে উঠতে দেখা গেছে।