04-02-16-Babul Matubbar Death By Police_Mirpur-6

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬:  চাঁদা না পেয়ে পুলিশের ছোড়া তেলের চুলার বিস্ফোরণে দগ্ধ চা- দোকানি বাবুল মাতুব্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার মারা গেছেন।বেলা সোয়া একটার দিকে তিনি মারা যান।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবুল কালাম বাবুল মাতুব্বরের মৃত্যুর এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।বাবুলের মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে স্বজনেরা আহাজারি করছেন। এ বাবুল মাতুব্বরের ছেলে রাজু বলেন, পুলিশ আমার বাপটাকে মারল। আমাদের এখন কী হবে?বুধবার রাত ১০টার দিকে মিরপুর-১ নম্বর গুদারাঘাট এলাকায় নিজের দোকানে স্টোভের আগুনে দগ্ধ হন বাবুল মাতুব্বর (৪৫)। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তখন হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জহিরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, বাবুলের শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।

এদিকে, চুলার ছিটকে পড়া তেলের আগুনে দগ্ধ হয়ে চা বিক্রেতার মৃত্যুর পর রাজধানীর শাহআলী থানার চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।পুলিশের মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জসিম উদ্দীন মোল্লা জানান, চারজনের মধ্যে দুইজন এসআই, একজন এএসআই ও একজন কনস্টেবল।তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম জানা যায়নি।দগ্ধ চা বিক্রেতা বাবুল মাতুব্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আগুনে তার শরীরে ৯০ ভাগ পুড়ে গিয়েছিল। বাবুলের পরিবারের অভিযোগ, বুধবার রাত ৯টায় মিরপুর ১ নম্বর গুদারাঘাটে চাঁদা না পেয়ে পুলিশ চা বিক্রেতা বাবুল মাতব্বরের কেরোসিনের চুলায় বাড়ি মারে। এতে কেরোসিন ছিটকে বাবুলের গায়ে লাগে এবং আগুন ধরে যায়।তারা বলছেন, চাঁদা না দেওয়ায় পুলিশ বাবুলের ওপর চড়াও হয়েছিল।

অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে থানা থেকে বলা হয়েছে, পুলিশ নয়, সোর্স দেখে পালাতে গিয়ে বাবুল দগ্ধ হন।বাবুল নিজেও মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন বলে পুলিশের অভিযোগ।বুধবার রাতে রাজধানীর মিরপুরে চাঁদা না পেয়ে পুলিশের ছোড়া তেলের চুলার বিস্ফোরণে চা- দোকানি বাবুল মাতুব্বর দগ্ধ হন। দগ্ধ বাবুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তাঁর শরীরের ৯৫ ভাগ পুড়ে গিয়েছিল।এই অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ বলেছে, থানার সোর্স দেলোয়ার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। পুলিশ জানিয়েছে, সোর্স দেলোয়ারকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হবে।গত রোববার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রতন কুমারের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে করা মামলার বিচার বিভাগীয় তদন্তেরও আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া গত জানুয়ারিতে দুই এসআইয়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দাসকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে।এদিকে, রাজধানীর মিরপুরে পুলিশের হামলায় অগ্নিদগ্ধ চা দোকানি বাবুল মাতুব্বরের (৪৫) মৃত্যুর ঘটনায় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশের বাড়াবাড়ি সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এদের চিহ্নিত করে রোখা দরকার।বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ৩টার দিকে বাবুল মাতুব্বরের মৃত্যুর খবর শুনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।রক্ষক এখন ভক্ষকের ভূমিকায় উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনে পুলিশ অবহেলা করছে।

তিনি বলেন, পুলিশের এসব কর্মকাণ্ড আগের মতো এবারও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে। তারা যদি ব্যবস্থা না নেন, তবে মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে।বাবুল মাতব্বরের কাছে কোনো চাঁদাবাজ বা সন্ত্রাসী চাঁদা চাইতে যায়নি। পুলিশ ও পুলিশের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে নির্যাতনের ঘটনায় মানবাধিকার কমিশনের এ চেয়ারম্যান বলেন, রাব্বীকে নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করা হাইকোর্টের আদেশ ছিল। এই আদেশের বিরুদ্ধে সরকারের রিট দুঃখজনক। কোনো রাষ্ট্র অপরাধীর পক্ষ নিতে পারে না।বুধবার রাত ১০টার দিকে মিরপুর-১ নম্বর গুদারাঘাট এলাকায় নিজের দোকানে স্টোভের আগুনে দগ্ধ হন বাবুল মাতুব্বর (৪৫)। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তখন হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জহিরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, বাবুলের শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।বাবুলের পরিবারের অভিযোগ, চাঁদা চাইতে এসে দোকানের কেরোসিনের স্টোভে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন মিরপুর শাহ আলী থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এ সময় স্টোভের আগুনে দগ্ধ হন বাবুল। পরে বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।অন্যদিকে, আমার বাবার হত্যার বিচার চেয়েছি, দিলেন লাশ- ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে বাবা বাবুলের মরদেহের পাশে এমনই আহাজারি করছিলেন বড় ছেলে রাজু।রাজধানীর শাহ আলী থানা পুলিশের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন চা বিক্রেতা বাবুল মাতব্বর। বাবুলের পরিবারের অভিযোগ, শাহ আলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শ্রীধাম চন্দ্র হাওলাদারের নেতৃত্ব পুলিশ সদস্য ও পুলিশের সোর্স গায়ে আগুন দিয়ে তাকে হত্যা করেন।

বুধবার রাত ১০টার দিকে মিরপুর-১ নম্বর গুদারাঘাট এলাকায় নিজের দোকানে স্টোভের আগুনে দগ্ধ হন বাবুল মাতুব্বর (৪৫)। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তখন হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জহিরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, বাবুলের শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।বুধবার বার্ন ইউনিটে ভর্তির পর থেকে এসআই শ্রীধামসহ অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ও সোর্সের বিচারের দাবিতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবুলের পরিবারের লোকজন।বাবুলের দুই ছেলে তিন মেয়ে। বৃহস্পতিবার মরদেহের পাশে বড় ছেলে রাজু চিৎকার করে বলতে থাকে, আমার বাবাকে মেরে ফেলেছেন শাহ আলীর পুলিশ ও পুলিশ সোর্সরা। আমার বাবার কি অপরাধ? ফুটপাতে চা বিক্রি করেন, পুলিশকে চাঁদা দিতে পারেননি?কান্নাজড়িত কন্ঠে রাজু বলেন, মাদক ব্যবসায়ী পারুল ওরফে পারুলী। আমরা পাশাপাশি থাকি। পারুলীর অনেক কাস্টমার আমাদের বাসায় এসে গাঁজা কিনতে চান। জিজ্ঞেস করেন, গাঁজা দেন, পারুলী কই? এতে আমরা ক্ষিপ্ত হয়ে পারুলীর ব্যাপারে থানায় মৌখিকভাবে অভিযোগ করি। এ অভিযোগের সূত্র ধরে ও ক্ষিপ্ত হয়ে শাহ আলী থানার এসআই শ্রীধাম চন্দ্র হাওলাদার আরো দুই পুলিশ কনস্টেবল ও পুলিশ সোর্স দেলোয়ারকে নিয়ে গতরাত সাড়ে নয়টার দিকে আমার বাবার দোকানে যান।

রাজু বলেন, এগুলো আমাদের কথা নয়, আমার বাবা মৃত্যুর আগে আমাদের বলে গেছেন। তখন এসআই শ্রীধাম আমার বাবাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। বলেন, ফুটপাতে দোকান করিস, চাঁদা দে। পুলিশ সোর্স দেলোয়ার এ সময় আমার বাবার হাত ধরে টানছিলেন। অপর এক পুলিশ কনস্টেবল জলন্ত স্টোভের চুলায় লাঠি দিয়ে বাড়ি দেন। তখন স্টোভের চুলা ফেটে আমার বাবার গায়ে আগুন ধরে যায়। আগুন ধরা অবস্থায় আমার বাবা এক পুলিশ কনস্টেবলের কলার ধরে বলেন, ‘তুই আমার গায়ে আগুন দিলি’। তখন কনস্টেবল বলেন, আমি আগুন দেইনি, এটা একটা দুর্ঘটনা। এ বলে সবাই সেখান থেকে দ্রুত সটকে পড়েন’।এ বিষয়ে শাহ আলী থানার এসআই শ্রীধাম চন্দ্র হাওলাদারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি সম্পূর্ণ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ওখানে যাইনি। শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শাহীন মন্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, এসআই শ্রীধাম ঘটনার সময় ছিলেন না। ঘটনার পর গিয়েছেন। তিনি আরো জানান, মাদক ব্যবসায়ী পারুলীকে আমরা আটক করেছি। একটি মামলা হয়েছে। পারুলীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হবে।