শুরুতেই মুস্তাফিজের সামনে কোহলি- গেইল

প্রথমবারের মতো আইপিএল খেলতে বুধবার বিকেল পাঁচটায় ভারতের উদ্দেশ্যে উড়াল দিয়েছেন বাংলাদেশের পেস বিস্ময় মুস্তাফিজুর রহমান। একা একা যাচ্ছেন বলেই কিছুটা ভয় নাকি কাজ করছে তার। তবে মাঠে নামলেই সব ভয় উবে যাবে নিঃসন্দেহে। উল্টো তার ভয়েই অস্থির থাকবে বিশ্বের বাঘা বাঘা সব ব্যাটসম্যান। তার ভয়ংকর সব কাটার আর সুইং সামলাতে গলদঘর্ম হতে হবে উইলোবাজদের। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে অভিষেক আসরে মুস্তাফিজ কেমন করে, তা দেখতে যেন মুখিয়ে গোটা দেশ।ধুন্ধুমার এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টে মুস্তাফিজ নাম লিখিয়েছেন নতুন দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদে। যেখানে অধিনায়ক হিসাবে মুস্তাফিজ পাচ্ছেন ভারতের ড্যাশিং ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে। আগামী নয় এপ্রিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও রাইজিং পুনে সুপার স্টার্সের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে নবম আইপিএলের আসর। তবে বাংলাদেশের মুস্তাফিজের মিশনটা শুরু হবে ১২ এপ্রিল থেকে। শুরুর ম্যাচেই অগ্নিপরীক্ষা দেয়া লাগতে পারে মুস্তাফিজকে। কারণ সামনে তখন দাঁড়িয়ে যাবে বিরাট কোহলি ও ক্রিস গেইলদের মতো বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যান।

১২ এপ্রিল বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে মুস্তাফিজের সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। মুস্তাফিজ অনুমিতভাবে সেরা একাদশে থাকবেন, এটা প্রায় নিশ্চিত। তাই বলা যায়, এই ম্যাচ দিয়েই মুস্তাফিজ মিশন শুরু করবেন আইপিএলের। এই আসরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলবেন বাংলাদেশের আরেক ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও। মুস্তাফিজের সঙ্গে সাকিবের মুখোমুখি লড়াই হবে আগামী ১৬ এপ্রিল, হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। কিন্তু শুরুর ম্যাচেই শক্ত প্রতিপক্ষ অপেক্ষা করছে মুস্তাফিজের সামনে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক হিসাবে থাকছেন গেল টি২০ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পাওয়া বিরাট কোহলি। থাকছেন ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল। এছাড়া রয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এ বি ডি ভিলিয়ার্স ও অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়াটসন। যারা ব্যাট হাতে সাক্ষাত যমদূত হয়ে যান মাঝে মধ্যে। আবার বল হাতে বেঙ্গালুরুর হয়ে মুস্তাফিজদের সামনে ঝড় তুলতে প্রস্তুত অস্ট্রেলিয়ার মিশেল স্টার্ক, নিউজিল্যান্ডের অ্যাডাম মিলনে, দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড উইজে।

তবে ভারতীয় ও বিদেশী খেলোয়াড় মিলে মুস্তাফিজের সানরাইজার্স দলটিও বেশ ব্যালেন্সড। অভিষেক আসরে দলটি চমক দেখাতেও পারে।অধিনায়ক হিসাবে মুস্তাফিজ পাচ্ছেন ভারতীয় ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে। আছেন ছক্কার রাজা যুবরাজ সিং। অস্ট্রেলিয়ার মারকুটে টি২০ স্পেশালিস্ট ডেভিড ওয়ার্নারকে সতীর্থ হিসাবে পাবেন মুস্তাফিজ।বল হাতে সঙ্গী হিসাবে মুস্তাফিজ পাবেন ভারতের আশিষ নেহরা, ভুবনেশ্বর কুমার ও নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্টকে। এছাড়া উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড় হিসাবে মুস্তাফিজের দলে রয়েছেন ইংল্যান্ডের ক্যাপ্টেন এউইন মরগ্যান, নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার যাকে ভারতের মুস্তাফিজুর বলা হয়, সেই বারিন্দর স্রানও রয়েছেন এই দলে।

টি২০বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল সুপার টেন পর্বে একটি ম্যাচে জিততে না পারলেও লড়াই করেছে বেশীরভাগ ম্যাচে। বিশেষ করে ভারতের বিরুদ্ধে ১ রানের হারের ম্যাচে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও ভালো খেলেছে। বাজে খেলেছে শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাত্র ৭০ রানে অল আউট হয়ে। তবে এই ম্যাচেই মুস্তাফিজ দেখিয়েছেন তার ক্যারিশমা। ৪ ওভারে মাত্র ২২ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। যা গেল টি২০ বিশ্বকাপের সেরা বোলিং ফিগার হিসাবে বেশ আলোচিত। যার বদৌলতে আইসিসির বিশ্বকাপ েেস্কায়াডেও জায়গা পেয়েছেন তিনি।এবার মুস্তাফিজের সামনে অপেক্ষা করছে আইপিএল। গতি, স্লোয়ার কাটার, আর বিষ মাখানো ভয়াল সুইংয়ে প্রতিপক্ষকে বিধ্বস্ত করতে মুখিয়ে আছেন সাতক্ষীরার এই তরুণ পেসার। আর তার বোলিং উপভোগ করতে অধীর অপেক্ষায় রয়েছে গোটা বাংলাদেশ।

আলাদা ফ্লাইটে ভারতে যাওয়ার কথা ছিল বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও কাটার স্পেশালিস্ট মুস্তাফিজুর রহমানের। তবে সিদ্ধান্ত বদলে এক সাথেই কলকাতার বিমানে চাপলেন বাংলাদেশের এ দুই ক্রিকেটার।হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জেড এয়ারওয়াজের একটি ফ্লাইটে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে ঢাকা ছাড়েন সাকিব ও মুস্তাফিজ। বিসিবির একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে।কলকাতায় পৌঁছে মুস্তাফিজ চলে যাবেন হায়দ্রাবাদে। তরুণ এ পেসার আইপিএলের নবম আসরে খেলবেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে। এটিই মুস্তাফিজের প্রথম আইপিএল। দেশ ছাড়ার আগে মুস্তাফিজ জানান, ‘ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো আইপিএল খেলতে যাচ্ছি। খুবই ভালো লাগছে। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন ভালো করতে পারি। শুধু আমার জন্য না, সাকিব ভাইয়ের জন্যও সবাই দোয়া করবেন।মুস্তাফিজের আইপিএল-অভিজ্ঞতা প্রথমবারের মতো হতে চললেও সাকিবের কাছে এটি ডালভাত! কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে নিয়মিতই খেলে যাচ্ছেন এ অলরাউন্ডার। দেশ ছাড়ার আগে রাজধানীর অভিজাত হোটেলে একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি-স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাকিব জানান, আইপিএলে ভালো খেলাই আমার লক্ষ্য। দলের জন্য ভালো পারফরম্যান্স করতে পারলে ভালো লাগবে। আমাকে ঘিরে দলের যে প্রত্যাশা সেটি পূরণ করতে চাই।