জাপানে আতঙ্কে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন

২০১১ সালের পর এই প্রথম এতোটা প্রবলভাবে এবং বারেবারে কেঁপে উঠলো জাপানের কোনো এলাকা। এসব ভূমিকম্পে অন্তত নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন সাড়ে আট শতাধিক মানুষ। এছাড়া ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে ১৯টি বাড়ি। ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকাও পড়েছেন অনেকে। আতঙ্কে অনেকেই খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করেছেন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ২৬ মিনিট থেকে ৬টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত পরপর পাঁচটি ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে জাপানের তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ হোনশু। প্রথম ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬.১। সর্বশেষটি আঘাত হানে বাংলাদেশ সময় ৯টা ৩ মিনিটে।

এসব ভূকম্পনে প্রায় ১৬ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ ও ৩৮ হাজার বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ভূমিকম্পের পরপরই ৪০ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। এদের বেশিরভাগই রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে পুরো রাত পার করেছেন।শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকাল পর্যন্ত ১৩০টি পরাঘাতে (আফটার শক) কেঁপে উঠেছে হোনশু ও কিউশু দ্বীপ। এসব এলাকায় কয়েকটি সক্রিয় পারমাণবিক চুল্লী থাকায় ভূমিকম্পে আরো আতঙ্ক ছড়ায়। এর মধ্যে সেন্দাইয়ে দু’টি চুল্লীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। আর গেনকাই কেন্দ্রে নিয়মিত নিরীক্ষার জন্য তিনটি চুল্লী বন্ধ রয়েছে। তবে প্রবল ঝাঁকি সত্ত্বেও চুল্লীগুলো অক্ষত থাকায় কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে কর্তৃপক্ষ।

জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, উদ্ধার ও পুনর্বাসনে ভূকম্পনে বিধ্বস্ত এলাকায় সহস্রাধিক পুলিশ, অগ্নি নির্বাপক কর্মী বাহিনী ও সেনা সদস্য পাঠানো হয়েছে। দক্ষিণ জাপানে পর পর কয়েকবার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৮ মাসের একটি শিশু।তার উদ্ধার দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণও করা হয়েছে। উদ্ধারকারীরা জাপানের মাশিকি অঞ্চলের একটি ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে উদ্ধার করেন শিশুটিকে। দক্ষিণ জাপানে পর পর কয়েকবার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬.৪, ৬ ও ৫.৭। জাপান সরকারের তথ্য মতে, ভুমিকম্পে এখনো পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৯ জন, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭৬১ জন। এর মধ্যে আরো ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে শুক্রবার সকালে ভুমিকম্পে হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। দেশটির প্রধান মন্ত্রীপরিষদ সচিব ইয়োশিহিদা সুগা বলেছেন, উদ্ধার কাজে প্রায় ১৬শ’ সেনা সদস্য কাজে লাগানো হয়েছে। ভুমিকম্পে প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়, তবে সকালে অনেকেই ঘরে ফিরে গেছে।