পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলার রায় মঙ্গলবার

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলার রায় মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে বিচারিক প্যানেল সোমবার এ আদেশ দেয়। গত ১১এপ্রিল এ মামলার শুনানি শেষে যে কোন দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রাখা হয়েছিল।

একই মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন এডভোকেট শামসুদ্দিন আহমেদ। পলাতক চারজন হচ্ছেন- শামসুদ্দিনের সহোদর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মো. নাসিরউদ্দিন আহমেদ এবং রাজাকার কমান্ডার গাজী আব্দুল মান্নান, হাফিজ উদ্দিন ও আজহারুল ইসলাম।আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ করা হয়। শুনানিতে যুক্তি উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আটক আসামি শামসুদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম মাসুদ রানা। পলাতক অপর চারজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান শুনানিতে অংশ নেন।

এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) ২৫ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিপক্ষে কোনো সাক্ষী ছিল না। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে গতবছর ১২ অক্টোবর পাঁচ আসামির বিচার শুরুর আদেশ দেয়া হয়। গত বছরের ৪ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।আসামিদের বিরুদ্ধে সাত অভিযোগ হলো : (১) ১৯৭১ সালের ১২ নভেম্বর দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার বিদ্যানগর ও আয়লা গ্রামের মোট আট জনকে হত্যা ও একজনকে আহত করা। (২) ১৩ নভেম্বর আয়লা গ্রামের মিয়া হোসেনকে হত্যা। (৩) একই উপজেলার মো. আব্দুল গফুরকে অপহরণ করে ২৬ সেপ্টেম্বর খুদির জঙ্গল ব্রিজে নিয়ে হত্যা। (৪) ২৩ অগাস্ট করিমগঞ্জ উপজেলা ডাকবাংলোতে শান্তি কমিটির কার্যালয়ে আতকাপাড়া গ্রামে মো. ফজলুর রহমান মাস্টারকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যা। (৫) ৭ সেপ্টেম্বর রামনগর গ্রামের পরেশ চন্দ্র সরকারকে হত্যা। (৬) ২৫ অগাস্ট পূর্ব নবাইদ কালিপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক ও রূপালীকে অপহরণ করে নির্যাতন ও হত্যা এবং (৭) ১৫ সেপ্টেম্বর আতকাপাড়া গ্রামে আক্রমণ করে ২০-২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ।

ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন সোমবার বলেন, “রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা এই মামলাটি সোমবার কার্যতালিকায় এলে বিচারক রায় ঘোষণার দিন ঠিক করে দেন।এর আগে প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে গত ১১ এপ্রিল আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখে।তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে আদালতে।শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন।আসামি শামসুদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম মাসুদ রানা। পলাতক অপর চারজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান শুনানিতে অংশ নেন।

প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন জানান, তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষে ২৫ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিপক্ষে কোনো সাক্ষী ছিল না।ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন গতবছর ১০ মে এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করলে তিন দিন পর আদালত তা আমলে নেয়।অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে গতবছর ১২ অক্টোবর পাঁচ আসামির যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করে আদালত।