ট্যানারির মালিকদের জরিমানার আদেশ ১৭ জুলাই পর্যন্ত স্থগিতরাজধানীর হাজারীবাগে থাকা ১৫৪ ট্যানারি সাভারে না সরানো পর্যন্ত পরিবেশ দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রত্যেক ট্যানারি মালিককে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে জমা দেয়ার হাইকোর্টের আদেশ আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।  ট্যানারি মালিকদের পক্ষে আনা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট আদলতের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকি আজ এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে স্থগিত আবেদনটি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
গত ১৬ জুন হাইকোর্ট ১৫৪ ট্যানারির প্রত্যেক মালিককে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়। হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে গতকাল আপিল বিভাগে আবেদন করে ট্যানারি মালিকরা। আজ আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এবং রিটকারী সংগঠনের পক্ষে এডভোকেট মনজিল মোরশেদ আদালতে শুনানি করেন।
এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০১ সালে ট্যানারি শিল্প হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলো হাইকোর্ট। দীর্ঘদিন ধরে ওই আদেশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় অন্য এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প অন্যত্র সরিয়ে নিতে ২০০৯ সালের ২৩ জুন হাইকোর্ট ফের নির্দেশ দেয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরে ওই সময়সীমা কয়েক দফা বাড়িয়ে ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও স্থানান্তর না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা করেন পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষ থেকে মনজিল মোরসেদ। এ মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল আদালত অবমাননার রুল জারি করে হাইকোর্ট। গত বছরের ২১ এপ্রিল আদালতের তলবে হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয় শিল্প সচিব। পরে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তরের পদক্ষেপ না নেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ফের আদালত অবমাননার অভিযোগে আরও একটি আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১১ আগস্ট হাইকোর্ট দশ কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে রুল জারি করে। এ রুলের পর দশ মালিককে তলব করে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২১ মার্চ আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ। ২৩ মার্চ এ আবেদনের শুনানি শেষে ব্যাখ্যা দিতে আদালত ১০ মালিককে তলব করে আদেশ দেয়।
এরপরও আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় রিটকারী আদালতে সম্পুরক আবেদন করে। পরে গত ১৬ জুন আদালত ১৫৪ ট্যানারি সাভারে না সরানো পর্যন্ত পরিবেশ দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রত্যেক ট্যানারি মালিককে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার আদেশ দেয়।