17-07-16-Briefing_PM-3

যারা যার অবস্থানে থেকে সবাইকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেছেন, আতঙ্ক সৃষ্টি করাই ছিল গুলশানে হামলার উদ্দেশ্য। তবে মানুষের জীবন চলমান, জীবন থেমে থাকে না। রোববার বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এশিয়া-ইউরোপ মিটিং (আসেম) সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর তিন দিনের মঙ্গোলিয়া সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গুলশানে হামলার পর কিছু রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলা হচ্ছে, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনও কি ঐক্যের বাকি আছে? সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য তো হয়ে গেছে। গ্রামে গ্রামে কমিটি হচ্ছে। সর্বস্তরের মানুষ সচেতন হয়ে উঠেছে। এখন ঈদের নামাজে সনাতন ধর্মের যুবকেরা পাহারা দিয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য অভূতপূর্ব অর্জন।সন্ত্রাস প্রতিরোধে সবাইকে আরও সচেতন হওয়ারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা জানান, মঙ্গোলিয়ার উলানবাটরে অনুষ্ঠিত এশিয়া-ইউরোপ মিটিংয়ে (আসেম) অংশ নিয়ে তিনি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সবসময় অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে।তিনি বলেন, আমাদের আসেম সম্মেলন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ফ্রান্সের নিচে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে নিরীহ অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়। বিশ্ব সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বাংলাদেশও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

এরপর সম্মেলন চলাকালে শুক্রবার রাতে তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা করা হয়। আমরা সেটারও নিন্দা জানাই। কারণ বাংলাদেশ সবসময়ই অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে।তিনি জঙ্গিবাদ বিষয়ে সরকারের অবস্থানের কথাও আসেমে বলেছেন বলে জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসেমে অংশ নিয়ে আমি জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা বিশ্বনেতাদের জানিয়েছি। কেবল তাই নয়, বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসে মদতদাতা, অর্থদাতা ও প্রশিক্ষণদাতাদের খুঁজে বের করতে হবে।

গত বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী উলানবাটরে যান। তারপর দিন আসেমে অংশগ্রহণসহ রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনঝো আবের সঙ্গে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। বৈঠক করেন আরও বেশ ক’জন বিশ্বনেতার সঙ্গে। তিন দিনের সফর শেষে শেখ হাসিনা শনিবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যায় দেশে ফেরেন।যারা ধর্মের নামে তরুণদের জঙ্গিবাদে জড়াতে উসকানি দিচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন সরকারপ্রধান।গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সব সময় সন্ত্রাবিরোধী, জঙ্গিবাদবিরোধী। বাংলাদেশের মানুষকে সব সময় এর বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে। যারা যার অবস্থানে থেকে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।

ঢাকার গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় সাম্প্রতিক দুটি জঙ্গি হামলার ঘটনার প্রেক্ষাপটে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, যাদের কোনো অভাবে নেই, ভালো খায়, ভালো পরে, তারাই এখন জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছে। যেখানে তাদের জন্য কোনো কিছুই অপূরণীয় থাকে না, সেখানে কেন তারা এটা করছে, এর যৌক্তিকতা কী?তারা এখন বেহেস্তের হুর পরী পাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, এর কী যৌকিক্ততা? কারা তাদের পেছন থেকে উসকাচ্ছে?এই তরুণদের কারা অস্ত্র দিচ্ছে, কারা অর্থ যোগাচ্ছে, তাদের তথ্য সম্মিলিতভাবে খুঁজে বের করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে জঙ্গি কর্মকান্ড চালাচ্ছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষ খুন করলে বেহেস্তের দরজা খোলে না।

আরও হামলা হতে পারে- সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক সাংবাদিক জানতে চান, এ বিষয়ে সরকারের কাছে কোনো তথ্য আছে কি না। উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদকে একটি বৈশ্বিক হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, একবার যখন ঘটেছে, এরা তো বসে থাকবে না, ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে।জঙ্গিবাদের বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোকে দেশের প্রতিটি এলাকায় কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মত প্রতিবেশী ও উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গেও এ বিষয়ে সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময়ের সমঝোতা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোরে সাম্প্রতিক এশিয়া-ইউরোপ (আসেম) শীর্ষ সম্মেলনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে তা সরাসরি প্রচার করা হয়।সাম্প্রতিক সময়ে গুলশানে দেশের নজিরবিহীন জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জন নিহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেও এই প্রথম সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করার সুযোগ পেলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মঙ্গোলিয়ার উলানবাটরে অনুষ্ঠিত এশিয়া-ইউরোপ মিটিংয়ে (আসেম) অংশ নিয়ে তিনি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সবসময় অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আসেম সম্মেলন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ফ্রান্সের নিচে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে নিরীহ অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়। বিশ্ব সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বাংলাদেশও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।এরপর সম্মেলন চলাকালে শুক্রবার রাতে তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা করা হয়। আমরা সেটারও নিন্দা জানাই। কারণ বাংলাদেশ সবসময়ই অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে।তিনি জঙ্গিবাদ বিষয়ে সরকারের অবস্থানের কথাও আসেমে বলেছেন বলে জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসেমে অংশ নিয়ে আমি জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা বিশ্বনেতাদের জানিয়েছি। কেবল তাই নয়, বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসে মদতদাতা, অর্থদাতা ও প্রশিক্ষণদাতাদের খুঁজে বের করতে হবে।