জঙ্গি শফিউল আলম

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় প্রথম টার্গেট মিস হওয়ায় পুলিশকে কুপানোর মতো বর্বরতা দেখান জঙ্গি শফিউল ওরফে শরীফুল ওরফে ডন। এজন্য তিনি বিশেষ কোনো ওষুধ সেবন করেছিলেন কি-না- বিষয়টি নিশ্চিতে তার রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছে।

আগামী দু’একদিনের মধ্যে গোয়েন্দারা এ পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাবেন বলে জানিয়েছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বশীল একটি সূত্র। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া পাহাড়ায় এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শফিউল।ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ এর দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, শোলাকিয়ায় জঙ্গিদের প্রথম টার্গেট ছিলেন শোলাকিয়ার ইমাম আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ। কিন্তু এ টার্গেট ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হাতবোমা নিক্ষেপের পাশাপাশি চাপাতি দিয়ে আক্রমণ করেন। এর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশ কনস্টেবল আনসারুলের মাথায় কোপানোর আঘাত ছিল। তার হাত ও পা ভাঙা ছিল। অর্থাৎ, হাতবোমা বিস্ফোরণ করার পরও তার ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিতের চেষ্টা চালান জঙ্গিরা।

এ অবস্থায় শোলাকিয়া কিলিং মিশন শুরুর আগে জঙ্গিরা ড্রাগ জাতীয় বিশেষ কোনো ওষুধ সেবন করেছিলেন কি-না- সেটি নির্ধারণ করতেই কয়েকদিন আগে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক জঙ্গি শফিউল ওরফে শরীফুলের রক্ত পরীক্ষা করানো হয়।ঠান্ডা মাথায় এবং কোনো ধরনের সহমর্মিতাবোধ ছাড়াই কিলিং মিশনে মেতে ওঠায় এ পরীক্ষা করানো হয়- দাবি সূত্রের।

এ কারণেই শোলাকিয়ায় হামলার আগ মুহূর্তে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জঙ্গি শফিউলের বিশেষ কোনো ওষুধ সেবনের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা, পুরোপুরি মগজ ধোলাই করে জঙ্গিদের কিলিং টার্গেট দিয়ে মাঠে নামানো ছাড়াও তারা যেন একই চিন্তায় মগ্ন থাকতে পারেন, সেজন্য তাদেরকে বিশেষ ধরনের ওষুধ সেবন করানো হয়।

নির্দিষ্ট চিন্তার বাইরে ভিন্ন কোনো চিন্তা যেন তাদের পেয়ে না বসে, সে উদ্দেশ্যেও এ কৌশল প্রয়োগ করেন নেপথ্যের কৌশীলবরা।কিশোরগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুর্শেদ জামান জানান, পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত জঙ্গি আবির গুলিবিদ্ধ হওয়া পরও চাপাতি হাতে পুলিশের দিকে তেড়ে এসেছিলেন। মগজ ধোলাইয়ের কারণেই ওদের মৃত্যুর ভয় ছিল না।

ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪’র কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. কর্নেল মো. শরীফুল ইসলাম জানান, র‌্যাবের হাতে আটক জঙ্গি শফিউলের চিকিৎসার পাশাপাশি রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছে।তবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন জানান, বিশেষ কোনো ওষুধ সেবনের পর ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ততার কার্যকারিতা থাকে।

শোলাকিয়ায় কিলিং মিশন শুরু ৫ দিন আগেই কিশোরগঞ্জের একটি বাসা ভাড়া করেন জঙ্গিরা। ঈদের দিন (০৭ জুলাই) সকালে শফিউল ও আবির শক্তিশালী হাতবোমা, চাপাতি, পিস্তল ও চায়নিজ কুড়াল নিয়ে ওই বাসা থেকে বের হন। ওই হামলার সময় আবির নিহত হলেও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক হন আরেক জঙ্গি শফিউল ওরফে শরিফুল ওরফে ডন।