Van,Riksha Crime-Jhenaidah(3)অবৈধ যানবাহন থেকে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলায় বেপরোয়া ভাবে চাঁদাবাজী চলছে। হরিণাকুন্ডু থানার ওসি মাহাতাব হোসেন ও পৌর মেয়র শাহিনুর রহমান রিন্টুর নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন ধরণের যানবাহন থেকে আদায় করা হচ্ছে এই টাকা। তবে তারা কেও এ সম্পর্কে জানেন না। অথচ তাদের নামের উপর ভর করে এই অপকর্ম চালানো হচ্ছে।

তথ্যানুসন্ধান করে জানা গেছে, হরিণাকুন্ডু পৌরসভার রশিদ ছাপিয়ে এই চাঁদাবাজীর সাথে যুক্ত হরিনাকুন্ডুর ঝড়–, মারুফ, চাঁন, জহুরুল ও নাজের আলী। এরা সবাই আবার স্থানীয় মেয়রের আস্থা ভাজন হিসেবেও পরিচিত। তাদের অত্যাচারে হরিণাকুন্ডুর নছিমন, করিমন, ভটভটি, আলমসাধু, ইজিবাইক ও অটো রিক্সা ভ্যান চালকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। চাঁদা না দিলে মারধর করাসহ পুলিশ দিয়ে হয়রানী করা হয়। এই চক্রটি তিন বছরে পৌরসভার রশিদ ছাপিয়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকার চাঁদা আদায় করেছে বলেও অভিযোগ। মাসের পর মাস এই সিন্ডকেটের সদস্যরা হরিনাকুন্ডু পৌরসভা ও ওসির দোহায় দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসলেও দেখার কেউ নেই। কেও প্রতিবাদও করে না।

সরেজমিনে অনুসন্ধ্যান করে জানা গেছে, হরিণাকুন্ডু এলাকায় ৭০০ মটরভ্যান, নসিমন, করিমন, আলসসাধুসহ একাধিক ব্যাটারি ও স্যালো ইঞ্জিন চালিত গাড়ি রয়েছে।

প্রতিটি গাড়ি থেকে হরিনাকুন্ডুর ঝড়–, মারুফ, চাঁন, জহুরুল ও নাজের সিন্ডেকেট দিন ১০ টাকা ও মাসে ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে। সাথে দেওয়া হচ্ছে হরিনাকুন্ডু পৌরসভার ১০ টাকার চাঁদা আদায়ের রশিদ। পৌর মেয়রের সম্মতি ছাড়া এধরণের রশিদ কি ভাবে ছাপালো চক্রটি ? এমন প্রশ্ন উঠেছে হরিণাকুন্ডুর মানুষের মাঝে।

চালকরা অভিযোগ করেছে, হরিনাকুন্ডু থানার ওসি মাহাতাব উদ্দীন ও পৌরসভার মেয়র রিন্টুর নাম করে চাঁদা আদায় করা হয়। চাঁদা না দিলে মারধরসহ পুলিশে দেওয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রশিদ ছাপিয়ে অবৈধ যান থেকে টাকা তোলা সম্পূর্ন অন্যায়। পৌর এলাকায় চলাচলকৃত যান থেকে টাকা উত্তোলন সরকারের এ ধরণের কোন নির্দেশনা নেই। তারপরও বে আইনী ভাবে দুই বছর ৬০ লাখ টাকার চাঁদা আদায় করেছে ওই সিন্ডিকেট।

জাতীয় রিক্সা ভ্যান প্রমিক ফেডারশনের ঝিনাইদহের সেক্রেটারি জামাল উদ্দীন, হরিনাকুন্ডুর উপজেলার সভাপতি সাহাবুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, প্রায় ৭০০ রিক্সাভ্যান ও অন্যন্ন ছোট বাহন থেকে প্রায় ৩ বছর যাবৎ অবৈধ ভাবে জোর করে টাকা আদায় করা হলেও জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের পক্ষে এই চাঁদাবাজী বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে হরিনাকুন্ডুর ওসি ও হরিনাকুন্ডু পৌরসভার মেয়রকে বলেও কোন কাজ হয় না।

এদিকে অভিযোগ অস্বিকার করেছেন হরিনাকুন্ডু থানার ওসি মাহাতাব উদ্দীন। তিনি জানিয়েছেন তার নামে কোন টাকা ওঠানো হয়না। তবে এই চাঁদাবাজী কেন বন্ধ করা হয় না ? এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান। হরিনাকুন্ডু পৌরসভার মেয়র শাহিনর রহমান রিন্টুও বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

তিনি জানান, পৌরসভার রশিদ ছাপিয়ে চাঁদাবাজী করা অন্যায়। তবে চাঁদাবাজীর সাথে যুক্ত ঝড়– মুঠোফোনে জানান, তারা এই চাঁদার ভাগ দেন ওসি ও পৌরসভার মেয়রকে। তাদের নির্দেশেই রশিদ ছাপিয়ে রাস্তায় চলাচলকৃত গাড়ি থেকে তারা চাঁদা আদায় করা হয়। এলাকায় চালাচলকৃত যানবাহনের মালিকরা এই চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও র‌্যাব-৬ এর কামান্ডিং অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।