Gazipur-(3)- 21 July 2016-Garments Worker Unrest-3

গাজীপুরে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে ও শ্রমিক ছাটাইয়ের গুজবে বৃহস্পতিবার এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি করেছে। এসময় তারা কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও দু’টি মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন মালামালে অগ্নিসংযোগ করেছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের ছোড়া ইটপাটকেলে দুই পুলিশ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সর্টগানের গুলি ও টিয়ার সেল ছুঁড়েছে। শ্রমিক অসন্তোষের কারনে কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে।

শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ (গাজীপুর)-এর সহকারি পুলিশ সুপার মো. তাহমিদুল ইসলাম ও শ্রমিকরা জানায়, গাজীপুর সদর উপজেলার হোতাপাড়া এলাকাস্থিত জাহিন টেক্স নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকদের জুনের আংশিক বকেয়া বেতন বৃহস্পতিবার দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার সকালে কারখানায় কাজে যোগ দিতে গিয়ে শুনতে পায় কর্তৃপক্ষ পূর্ব প্রতিশ্রুতি মোতাবেক বৃহস্পতিবার বেতন দিচ্ছে না। উপরন্তু কিছু শ্রমিক ছাঁটাই হবে। এ গুজব কারখানায় ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ৮টার থেকেই শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি শুরু করে। একপর্যায়ে তারা কারখানার গেইটে জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করতে থাকে। এসময় তারা কারখানার মালিককে দেখতে চায় বলে মিছিল শুরু করে। এ নিয়ে এক পর্যায়ে কারখানায় কর্মরত মালিক পক্ষের লোকজনদের সঙ্গে শ্রমিকদের বাকবিতন্ডা এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। উত্তেজিত শ্রমিকরা হামলা চালিয়ে কারখানার ভেতরে ব্যাপক ভাংচুর শুরু করে। এসময় তারা কারখানার সামনে থাকা দুইটি মোটর সাইকেলেও অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল ও জয়দেবপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা লাঠি-সোটা-রড-শাবল হাতে নিয়ে পুলিশের দিকে তেড়ে আসে এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাকেল ছুঁড়তে থাকে। এসময় ইট-পাটকেলে শিল্পাঞ্চল পুলিশের দুই কনস্টেবল আহত হন। পরে পুলিশ তাদের লাঠিচার্জ ও ধাওয়া করলে দু’পক্ষের মাঝে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা পাশে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবারের জন্য কারখানা ছুটি ঘোষণা করে।

কারখানার ব্যবস্থাপক একেএম শফিউল আলম মো. রানা জানান, ঈদের আগে আমরা শ্রমিকদের জুনের ২৫দিনের বেতন পরিশোধ করি। বৃহস্পতিবার বাকি পাঁচ দিনের বেতন পরিশোধের জন্য আমরা প্রস্তত ছিলাম। কিন্ত নানা গুজব তুলে কারখানায় পরিবেশ অস্থিতিশীল করতেই একটি চক্র শ্রমিকদের খেপিয়ে তুলে কারখানায় ভাংচুর ও স্টাফদের মারধোর করেছে। শ্রমিকরা প্রায় ২শ’র মতো জ্যার্ক্ডা মেশিন,কারখানার জানালা-টেবিলের কাঁচ ভেঙ্গে বিপুল পরিমান ক্ষতি করেছে।

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ মোস্তাফিজুর রহমান টিটু