চট্টগ্রামে বিলবোর্ড মুক্ত করায় প্রশংসা

চট্টগ্রাম সিটি করপোরশেনকে এগিয়ে নিতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, আপনাদের সকল ধরণের পরামর্শ-সহযোগিতা ও আলোচনা-সমালোচনা নির্দ্বিধায় শোনার মানসিকতা আমি পোষণ করি। আমার মোবাইল নম্বর অনেকের কাছেই আছে, না থাকলে আমি দিয়ে দেব। আমাকে ফোন করে, এসএমএস পাঠিয়ে আপনাদের পরামর্শ জানিয়ে দেবেন।দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। সোমবার নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ইউএসটিসির উপাচার্য ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, চসিকের স্বাস্থ্যখাতে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এক বছর স্থান-কাল-পাত্র চিনতে সময় লাগে। মেয়রের সীমাবদ্ধতা আছে, চ্যালেঞ্জ আছে। তাকে সমর্থন করার অর্থ শেখ হাসিনাকে সমর্থন করা।

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির বলেন, কেউ যদি সরাসরি দেখা করে আলোচনা করতে চান, কিংবা পরামর্শ দিতে চান তাহলে আমি আপনাদের ঘরে যাবো, আপনাদের নিজস্ব কার্যালয়ে যাবো।এক্ষেত্রে ব্যক্তির রাজনৈতিক, সামাজিক ও আর্থিক পরিচয় তার কাছে বিবেচ্য বিষয় হবে না বলে তিনি স্পষ্ট করেছেন। মেয়র বলেন, আমি আপনাদের পরামর্শ সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবো, ধৈয্যধারণ করে শুনবো। দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরের মধ্যে নগরীকে বিলবোর্ড মুক্ত করায় প্রশংসার পাশাপাশি জলাবদ্ধতা নিরসন, নাগরিক প্রত্যাশা পূরণের তাগিদ দিয়েছেন আমন্ত্রিত সুধীজনরা।ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সভাপতি সাদেক মো. চৌধুরী বলেন, জলাবদ্ধতা নগরীর বড় সমস্যা। এটি পুরোপুরি দূর করতে হলে মেয়রের উদ্যোগে সবার সহযোগিতা দরকার। আমার বিশ্বাস মেয়র এ সংকট থেকে মুক্তি দিতে পারবেন। প্রকৌশলীরা তার পথপরিক্রমায় সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি মুজিবুল হক খান বলেন, প্রদর্শিত তথ্যচিত্র দেখে আশান্বিত হয়েছি। মেয়র দক্ষতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন। উনার কমিটমেন্ট গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি বাস্তবায়ন। চট্টগ্রামের পাঁচ হাজার ডাক্তার সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল বলেন, টেঁয়া (টাকা) দিলি কাম। টেঁয়া নঅ দিবা উন্নয়ন চাইবা তা হবে না। বন্দর-কাস্টম থেকে আয়ের ৫ শতাংশ লেভি হিসেবে চসিকের তহবিলে দিতে হবে। টেঁয়া দিবু চাটগাঁয়া, ভোগ গরিবু ঢাকাইয়া তা মানতে রাজি নই। টাকা দিবেন কাজ নিবেন। দেশের কোনো এমপি রাউজানের মতো উন্নয়নকাজ এলাকায় করতে পারেননি। মহিউদ্দিন কাজের, তার কর্মী নাছের। কোনো দিন বৃথা যেতে পারে না।চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন বলেন, একটি আধুনিক চট্টগ্রাম গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি এক বছর পরীক্ষা দিয়েছেন। চসিক পরিবারের কাউন্সিলররা, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, নগরবাসী একযোগে কাজ করলে চট্টগ্রাম আধুনিক শহর হবে।

ওম্যান চেম্বারের পক্ষে সাবেক কাউন্সিলর রেখা আলম চৌধুরী বলেন, কোনো মানুষের পক্ষে রাতারাতি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। মেয়র বিলবোর্ড মুক্ত করে দেখিয়েছেন তিনি পারেন। ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যে বর্তমান মেয়রকে বেছে নিয়েছেন।মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ বলেন, বর্তমান মেয়রই পারবেন গ্রিন ও ক্লিন সিটি হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তুলতে।বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি মাইনুদ্দিন আহমেদ মিন্টু বলেন, আ জ ম নাছিরের বিকল্প কেবল আ জ ম নাছির তিনি তা প্রমাণ করেছেন। মেয়র পোশাকশিল্পে চট্টগ্রামের হারানো গৌরব ফেরাতে কালুরঘাটে ১০ একরের বেশি জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। ১৫ লাখ বর্গফুটে হবে সবুজ কারখানা। যেখানে ৩০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বছরে টার্নওভার হবে ১ বিলিয়ন ডলার।তিনি সিডিএ, ওয়াসা, পিডিবিকে চসিকের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার আহ্বান জানান।

প্রেসক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ার বলেন, চট্টগ্রাম এক বছরে সিঙ্গাপুর হয়নি তবে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। নগরবাসীর আস্থা তৈরি হয়েছে। তাই মেয়রের কাছে প্রত্যাশা বেড়ে গেছে।প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী বলেন, প্রদর্শিত ডকুমেন্টারিতে প্রমাণ হয়েছে পাত্রেই ঘি ঢালা হয়েছে। অতীতে চসিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট স্থাপন করেছিল সেগুলো আজ জীবিত নেই। যত্রতত্র ময়লা ফেলা বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। একসময় স্লোগান দেওয়া হয়েছিল পানির নিচে মুরাদপুর, কেমনে হবে সিঙ্গাপুর। এখন মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় করানোর কষ্টটা আমরা শুনছি। যানজট নিরসন করতে না পারলে অনেক শ্রমঘণ্টা নষ্ট হবে। ভাঙা রাস্তাগুলো মেরামত করতে হবে। বন্দর-কাস্টম থেকে নির্দিষ্ট লেভি আদায় করতে হবে।অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মেয়রের একান্ত সচিব মনজুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে কাউন্সিলরদের নিয়ে বর্ষপূর্তির কেক কাটেন মেয়র।