15-08-16-President_PM_Bangabanhu Bhaban-4আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। দিবসটিতে বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের নিহত সদস্যদের স্মরণ করছে জাতি। সকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডিতে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটা চৌকস দল গার্ড অব অনার দেয়। বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। সেখানে বিশেষ মোনাজাত ও পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করা হয়। পরে মন্ত্রিসভার সদস্য ও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর স্থানটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বঙ্গবন্ধুর সমাধি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যসহ অন্যদের কবর দেওয়া হয়েছে বনানী কবরস্থানে।

সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বনানী কবরস্থানে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য ও নিহত অন্যদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন তিনি। সকাল ১০টার দিকে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা। এ সময় সুরা ফাতেহা পাঠ করা হয়। সশস্ত্র বাহিনী গার্ড অব অনার প্রদান করে। বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া মাহফিল হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরের আলো ফোটার আগেই বাঙালি জাতিকে মুক্তির আলো দেখানো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল চক্রান্তকারী কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য। ঘাতকেরা ওই দিন নারী ও শিশুদেরও রেহাই দেয়নি, যা ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে পালনের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন ১ আগস্ট থেকেই শ্রদ্ধা, আলোচনা, মিলাদ, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, ছবি প্রদর্শনীসহ শোকের মাসের কর্মসূচি পালন করছে। আজ ও কাল মঙ্গলবার থাকছে বিস্তারিত কর্মসূচি। আজ সরকারি ছুটি। সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডাসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। তাঁরা জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে আত্মনিয়োগে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন শোক দিবসের অনুষ্ঠানমালা সরাসরি সম্প্রচারসহ বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে।