আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীডা.শাহাদাত হোসেনকে সভাপতি ও আবুল হাশেম বক্করকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হলেও মূলত নগর বিএনপির নিয়ন্ত্রণ বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর হাতেই থাকছে। নগর বিএনপির সাবেক এই সভাপতির নির্দেশনা মেনেই সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। কমিটি গঠনের আগে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এমন পরামর্শ দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে দল গোছানোর কথা জানালেও এ ধরনের কোন পরামর্শ দলের চেয়ারপারসন দেননি বলে দাবি করেছেন নগর বিএনপির সভাপতি ডা.শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, এ ধরনের কোন কথা আমাদের বলা হয়নি। যদি কেউ বলে থাকে তা মিথ্যা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, অনেক চিন্তা ভাবনা করেই চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণা করেছেন। তরুণদের দায়িত্ব দিয়ে দলকে সক্রিয় করার লক্ষ্যে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী এবং যারা ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের দায়িত্ব দিচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে নগর বিএনপির দায়িত্ব ডা.শাহাদাত হোসেন ও আবুল হাশেম বক্করের হাতে দেওয়া হয়েছে।

দলের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে নেত্রীর গুডবুকে রয়েছেন নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ফলে চট্টগ্রামের বিষয়ে যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেছেন। একই সঙ্গে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, এম মোর্শেদ খান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের সঙ্গেও কথা বলেছেন।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহি কমিটি ঘোষণার অনেক আগেই আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে স্থায়ী কমিটিতে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যান্য নেতাদের পদ-পদবীও স্থির করেছিলেন। এরই অংশ হিসেবে উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীকে যুগ্ম আহ্বায়ক, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা.শাহাদাত হোসেনকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও আবুল হাশেম বক্করকে সহসাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছিল।

তবে শাহাদাত হোসেন ও আবুল হাশেম বক্কর তাদের পদ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। নগর বিএনপিতে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন তারা। শেষ পর্যন্ত গত ৬ আগস্ট তাদের হাতেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নির্দেশনা মেনে কাজ করার নির্দেশ দেন দলের চেয়ারপারসন। তবে দল থেকে দেওয়া পদ গ্রহণ না করে অন্য পদে আগ্রহের বিষয়টি নিয়ে দলে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্নের সম্মুখিন হয়েছেন দলের চেয়ারপারসনও। কারণ কেউ কেউ নিজের পছন্দে পদ নিতে পারলেও অনেকেই বঞ্চিত।

এদিকে দলের স্থায়ী কমিটিতে স্থান পাওয়ার পর মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আসছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেও কোন ধরনের সংবর্ধনা নেবেন না। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর একান্ত সহকারী মো.সেলিম জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ঢাকা থেকে বিমান যোগে চট্টগ্রাম আসবেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন থেকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে সকাল ১০টায় রাঙ্গুনিয়ায় দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন।

সংবর্ধনা না নেওয়ার বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, যেখানে দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী জেল-জুলুম, মামলা-হামলার সম্মুখিন সেই সময়ে সংবর্ধনা নেওয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই। তিনি বলেন, দলে পদ দেওয়া হয়েছে কাজ করার জন্য, সংবর্ধনা নেওয়ার জন্য নয়। এখন আমাদের মূল লক্ষ্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।