22-10-16-al-conference_pm_sohrawardi-uddan-18

দেশের সব মানুষকে দারিদ্র্যসীমা থেকে বের করে নিয়ে আসার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।নেতা-কর্মীদের প্রতি আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আপনাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। সরকারের উন্নয়নকাজগুলোর কথা জনগণকে জানাতে হবে। জনগণের জন্য কাজ করতে হবে।

সোমবার বিকেলে গণভবনে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কমিটি ও জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে, জনগণের জন্য কাজ করা জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের কোনো মানুষ নিঃস্ব, ভূমিহীন থাকবে না, দরিদ্র থাকবে না। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা যাঁর যাঁর এলাকার নিঃস্ব, ভূমিহীন মানুষের তালিকা তৈরি করেন। আমরা তাঁদের ঘরবাড়ির ব্যবস্থা করব, জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করব।জঙ্গিবাদের বিষয়ে নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জঙ্গিবাদ কখনো আশ্রয় দিই না, দেব না। ছাত্রদের ওপর শিক্ষকদের খেয়াল রাখতে হবে। মা-বাবাকে সন্তানের খোঁজ রাখতে হবে। কারও ছেলেমেয়ে যেন বিপথে না যায়, এ ব্যাপারগুলো আপনাদের দেখতে হবে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জঙ্গিবাদের বিষয়ে যথেষ্ট সজাগ রয়েছে। তারপরও এ বিষয়টি শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ছেড়ে দিলে চলবে না। আপনাদেরও খেয়াল রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,আজ থেকে আমাদের একটাই প্রতিজ্ঞা। সেটা হলো, দেশের একটি মানুষও দরিদ্র থাকবে না। মানুষকে দারিদ্র্যসীমা থেকে বের করে নিয়ে আসার জন্য যা করার দরকার তাই করা হবে।এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হতদরিদ্র মানুষের জন্য আমরা আশ্রয়ণ, গৃহায়ন বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা জনগণকে দরিদ্রসীমা থেকে বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা করবো।সরকারের পাশাপাশি দরিদ্র অসহায় মানুষের সাহায্যার্থে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং দেশের ধনবানদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, সরকারি কোনো অনুদান ছাড়াই এলাকার স্কুল-কলেজগুলোর সংস্কার করা যায়। আমরা নিজেদের উদ্যোগেই স্কুল-কলেজগুলোর সংস্কার করতে পারি। সরকারের তরফে আমরা তো শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিচ্ছি, বৃত্তি দিচ্ছি।

পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনতে নেতা-কর্মীদের কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষকে বোঝাতে হবে সরকারের উন্নয়নের ধারা ধরে রাখতে হলে অবশ্যই আওয়ামী লীগকে আরও একবার ক্ষমতায় আসতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জনগণ তার সুফল পাবে।তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের অর্জনগুলো জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। জনগণকে বারবার বলতে হবে। আমরা এই কাজ আপনাদের জন্য করেছি। আওয়ামী লীগ করেছে। আমরা তো কাজ করে দিয়েছি, মানুষ তো জানেই। এ কথা ভাবলে হবে না। মানুষ জানলেও ভুলে যাবে। এটাই মানুষের নিয়ম।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কাজই হবে প্রচার করা। ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া। তাদের কাছে যাওয়া। তাদের এই কথাটা বোঝানো যে আওয়ামী লীগ থাকলে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হবে। তারা কিছু পাবে। ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখতে পারবে। অবকাঠামো উন্নয়ন হবে, রাস্তাঘাট উন্নত হবে, পুল-ব্রিজ হবে। খেতে ফসল উৎপাদন হবে। এই কথাগুলো মানুষের কাছে ভালোভাবে পৌঁছে দেওয়া। আওয়ামী লীগের এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কাজ। তিনি আরও বলেন, ’৯৬-এ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে আওয়ামী লীগকে আবার দায়িত্ব নিতে হবে। আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আসতে হবে।বিএনপির নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতিবাজ, মানি লন্ডারিং করে যারা সাজাপ্রাপ্ত, যারা পুড়িয়ে মানুষ মারে, খুনি। যারা খুনিদের মদদ দেয়, যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেয়, যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানায়, তারা যেন এই বাংলাদেশে আর কোনো দিনই ক্ষমতায় আসতে না পারে। মানুষকে বোঝাতে হবে, এরা যদি আবার ক্ষমতায় আসে, তার মানে যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় আসবে। খুনিরা ক্ষমতায় এলে খুনিদের রাজত্ব, দুর্নীতিবাজদের রাজত্ব হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এ দেশকে নিয়ে খেলবে। যা খুশি তা করবে। অন্তত সেটা তারা করতে পারবে না। এই কথা আজ সবাই বুঝতে পেরেছে।