Pakistan

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেলুচিস্তান প্রদেশের কোয়েটা শহরে সোমবার রাতে একটি পুলিশ একাডেমিতে জঙ্গি হামলা হয়েছে। এতে কমপক্ষে ৬০ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যরা পরে সেখানে পাল্টা অভিযান চালিয়ে জঙ্গি হামলার অবসান ঘটায়।বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১০ মিনিটে প্রাদেশিক রাজধানীর কোয়েটার ২০ কিলোমিটার পূর্বে বেলুচিস্তান পুলিশ কলেজে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এরপর কয়েক ঘন্টা ঘটনাস্থল থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।বেলুচিস্তান প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, তিন জঙ্গি আত্মঘাতি সরঞ্জামাদি নিয়ে পুলিশ একাডেমিতে হামলা চালায়। এর আগে হামলাকারীর সংখ্যা পাঁচ-ছয় বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, হামলাকারীরা প্রথমে পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে অবস্থানরত পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা গুলি করে তাকে হত্যার পর একাডেমির ভেতরে ঢোকে।বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র আনোয়ারুল্লাহ কাকার বলেন, জঙ্গি হামলার সময় ৬০ জন নিহত ও ১১৮ জন আহত হয়েছে। তবে আহতদের বেশিরভাগের আঘাত সামান্য।স্থানীয় একটি হাসপাতালের প্রধান ফারিদ সুমালানি বলেন, মর্গে ৬০ জনের লাশ আনা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে একাডেমির নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। গণমাধ্যম কর্মীদের ভবনের বাইরে অবস্থান করতে বলা হয় এবং গোটা এলাকায় বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়।বেলুচিস্তানের আধা-সামরিক বাহিনী ফ্রন্টিয়ার কোরের প্রধান মেজর জেনারেল শের আফগান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর তিন ঘন্টার মধ্যে জঙ্গি হামলার অবসান ঘটাতে সক্ষম হই।’ তিনি পাল্টা অভিযানের নেতৃত্ব দেন।

শের আফগান বলেন, জঙ্গিদের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আড়ি পেতে জানা গেছে, জঙ্গিরা পাকিস্তানি তালেবানের সহযোগী লস্কর-ই-জানভি জঙ্গি গোষ্ঠীর আল আলিমি উপদলের সদস্য।তিনি বলেন, জঙ্গিরা আফগানিস্তানের সক্রিয়গোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ করছিল। তবে জঙ্গি গোষ্ঠীটি হামলার দায়িত্ব এখনও স্বীকার করেনি।বুগতি বলেন, হামলার সময় একাডেমিতে প্রায় ৭শ’ শিক্ষানবীশ পুলিশ ছিল। তাদের মধ্যে কয়েকশ’কে উদ্ধার করা হয়েছে।

একাডেমিতে যখন আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যরা পাল্টা অভিযান চালায় তখন সেখানে বিদ্যুৎ চলে যায়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গোটা এলাকা ঘিরে রাখে এবং আহতদের হাসপাতালে নিতে অ্যাম্বুলেন্স যাওয়া-আসা করতে দেখা যায়। সামরিক হেলিকপ্টারগুলো আকাশে চক্কর দিতে থাকে।পুলিশ ও বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, সংঘর্ষ শুরু হলে ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।পুলিশ ক্যাডেট হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেয়া এক ব্যক্তি জানান, তিনি কালাশনিকভ রাইফেল হাতে মুখোশ পরা তিন ব্যক্তিকে দেখেন। তারা গুলিবর্ষণ করতে করতে মেসের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। তবে ওই পুলিশ ক্যাডেট দেয়াল টপকিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, নিহত ব্যক্তিদের অধিকাংশই পুলিশ ক্যাডেট। এ ছাড়া নিরাপত্তারক্ষীরাও নিহত হয়েছেন।