%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b7-%e0%a6%b8%e0%a6%b9%e0%a6%95প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুল হক শাকিল মারা গেছেন।রাজধানীর গুলশানের জাপানি রেস্তোরাঁ সামদাদোতে তার মৃত্যু হয় বলে মঙ্গলবার দুপুরে পর নিশ্চিত করেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব আসিফ কবির।তার বয়স হয়েছিল ৪৭ বছর। মাহবুবুল হক শাকিলের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। শোক জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ সহকারীর মৃত্যুসংবাদ শুনে সামদাদোতে উপস্থিত হন জ¦ালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, ইহসানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান,৭১ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী মুন্নী সাহা ও সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিকসহ পরিবারের সদস্যরা। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের মৃত্যুর খবরের পর গুলশানের সামদাদো রেস্তোরাঁর সামনে বাড়ছে তার ভক্ত-অনুরাগীদের ভিড়। সেখানে একটি কক্ষে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাখা রয়েছে শাকিলের মরদেহ। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে মধ্যাহ্ন ভোজের সময় তার মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে মাহবুবুল হক শাকিলের।

বিকেল ৪টার দিকে মরদেহ দেখতে গুলশান-২ নম্বরের ৩৫ নম্বর রোডের ২৭ নম্বর বাড়ির এই রেস্তোরাঁয় যান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এছাড়াও অনেক ভক্ত অনুরাগী রেস্তঁরার সামনে ভিড় জমাতে থাকেন। বেলা চারটার দিকে রেস্তোরাঁর ৫ কর্মীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গাড়িতে তুলে গুলশান থানার দিকে নিয়ে যান। মাহবুব-উল আলম হানিফ এসময় সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি হার্ট অ্যাটাক। তবে চিকিৎসকের রিপোর্ট পেলেই নিশ্চিত করে বলা যাবে। সবচেয়ে বড় বিষয় তিনি আর আমাদের মাঝে নেই, বলেন হানিফ।

বিশিষ্ট কবি ও লেখক, এক সময়ের তুখোর – মেধাবী ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুল হক শাকিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়্ত্বি পালন করছিলেন।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৪৭ বছর। মাহবুবুল হক শাকিল তার স্ত্রী, এক মেয়ে ও অসংখ্য ভক্ত গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সামদাদোর বাইরে নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, শাকিলের মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার জানাজা হবে।এরপর তার লাশ নেওয়া হবে তার নিজ শহর ময়মনসিংহ। সেখানে বাঘমারা এলাকায় নিজ বাড়িতে সন্ধ্যায় তার লাশ দাফন করা হবে।

এর আগে ঘটনাস্থল থেকে প্রতক্ষদর্শীরা জানান, গুলশান থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বিকাল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে সামদাদোর পাঁচ কর্মীকে পুলিশের ভ্যানে তুলে নিয়ে যান।তবে এবিষয়ে ওসি সিরাজুল মন্তব্য করতে রাজি হননি।

২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে নবগঠিত আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সেল সিআরই পরিচালনার দায়িত্ব পান ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিনিয়র সহ-সভাপতি শাকিল।২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিবের দায়িত্ব পান তিনি। চার বছর পর তাকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) করা হয়।এর পর ২০১৪ সাল থেকে অতিরিক্ত সচিব মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি।শাকিলের জন্ম ১৯৬৮ সালের ২০ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলে। তার বাবা অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।আইনজীবী-শিক্ষক দম্পতির সন্তান শাকিল ময়মনসিংহ জেলা স্কুল ও আনন্দমোহন কলেজে পড়েছেন; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।সাবেক এই ছাত্রনেতার কবিতা লেখার শখ ছিল। তার প্রকাশিত বই- খেরোখাতার পাতা থেকে ও মন খারাপের গাড়ী।তিনি আইনজীবী স্ত্রী ও এক মেয়ে রেখে গেছেন ।