চলে গেলেন ছয় প্রজš§কে দেখা বিশ্বের প্রবীণতম ব্যক্তি দাবিদার নাজিম উদ্দিন খান। গাজীপুরের শ্রীপুরের চিনাশুখানিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি মারা যান। এমন এক সময় এ প্রবীণের মৃত্যু হয়েছে যখন পৃথিবীর সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রায় ১২৯ বছর বয়সে (জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী) বার্ধক্যজনিত কারণে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

নাজিম উদ্দিন খাঁনের ভাতিজা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক (অবসরপ্রাপ্ত) মো: রশিদ খাঁন জানান, বিকেল ৫টায় চিনাশুখানিয়ার দিঘিরচালা স্কুল মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করার কথা রয়েছে।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের চিনাশুখানিয়া গ্রামে ১৮৮৮ সালের ৮ মার্চ (জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী) এই প্রবীণের জš§ হয়েছিল। বাবা আজমাইল খান এবং মাতা ফুলজান বিবির বড় ছেলে ছিলেন মো. নাজিম উদ্দিন খান।

যদিও এই প্রবীণ মৃত্যুর আগে দাবি করেছিলেন ২০১৬ সালে ১৫০ বছরে পা রেখেছেন তিনি। সেই হিসাবে তার জš§ হওয়ার কথা ১৮৬৫ সালের দিকে। তাঁর জš§নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে ৮ মার্চ ১৮৮৮ জš§সাল হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।

নাজিম উদ্দিন খানের ছয় সন্তানের মধ্যে মাত্র তিনজন জীবিত রয়েছেন। বাকিরা বয়সের ভারে অনেক আগেই পৃথিবী ছেড়েছেন। সৌভাগ্যবান এ প্রবীণ ২২ জন নাতি-নাতনি, নাতি-নাতনির ঘরে ১০৬ জন পুতি, পুতির ঘরে ১০৭ জন থুতি এবং এর পরের প্রজš§ ৭ জনসহ মোট ২৪৮ জন বংশধরকে দেখে গেছেন।

এ প্রবীণের বয়স নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ ছিল না। বয়স নিয়ে মিডিয়ার বদৌলতে বিভিন্ন সময় তিনি দেশবাসীর কাছে আলোচিত হয়েছেন।

সরকারের কাছে নাজিম উদ্দিন খানের স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি ছিল, তাঁর বয়স সত্যিকারে কত, সরকারি তত্ত্বাবধানে তা যাচাই করা। তিনি ও তাঁর স্বজনরা মনে করতেন, জীবিত মানুষের মধ্যে তিনিই বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ।

জানাগেছে, বর্তমানে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণতম ব্যক্তির স্থানটি দখল করে আছেন পোল্যান্ডের ইসরায়েল ক্রিস্টাল। তাঁর বয়স বর্তমানে প্রায় ১১৪ বছর।

এর আগে খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, নাজিম উদ্দিন খানের বয়স সত্যিই অনেক। প্রথমে যদিও অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল। পরে সবকিছু দেখে-শুনে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলা হয়। কিছুদিন পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে তখন নির্দিষ্ট মেশিন নষ্ট থাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে আবারও পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে গাজীপুরের এডিসি জেনারেল সর্বাত্ত্বক সহযোগিতা করেন।

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।