রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির নেতা মাসুদ রানা গুলি করেছেন বলে শনাক্ত করে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন রিকশাচালক আবদুল মোন্নাফ ও ঘটনাস্থলের চায়ের দোকানদার আবদুল্লাহ আল মামুন। আজ মঙ্গলবার রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকারের আদালতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তৃতীয় দিনে আবদুল মোন্নাফ ও আবদুল্লাহ আল মামুন সাক্ষ্য দেন। এ সময় তাঁরা মাসুদ রানাকে শনাক্ত করেছেন।
এদিকে এ হত্যা মামলায় কুনিও হোশিকে বহনকারী রিকশাচালক মোন্নাফসহ পাঁচ গ্রামবাসীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হলো।মামলা পরিচালনাকারী সরকারি কৌঁসুলি রথীশ চন্দ্র ভৌমিক জানান, কুনিও হোশিকে জেএমবি নেতা মাসুদ রানা গুলি করেছেন বলে আদালতে শনাক্ত করে সাক্ষী দিয়েছেন আবদুল মোন্নাফ ও আবদুল্লাহ আল মামুন।রথীশ চন্দ্র ভৌমিক জানান, আজ পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন কুনিও হোশিকে বহনকারী রিকশাচালক আবদুল মোন্নাফ, ঘটনাস্থল এলাকা মোড়ের চায়ের দোকানদার আবদুল্লাহ আল মামুন, খুনের ঘটনাস্থল কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের কাচু আলুটারি গ্রামের গ্রামবাসী মাইদুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম ও আরশাদ হোসেন। তিনি জানান, এর আগে ১৮ ও ২৩ জানুয়ারি মামলার বাদী রেজাউল করিম ও সারাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফুল হকসহ সাতজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। বুধবার পাঁচজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। এ মামলার ৫৭ জন সাক্ষী রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আদালত সূত্র জানায়, আজ সকালে পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে অভিযুক্ত আট আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা পাঁচজনকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁরা হলেন জেএমবির পীরগাছার আঞ্চলিক কমান্ডার উপজেলার পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়ার মাসুদ রানা ওরফে মামুন ওরফে মন্ত্রী (২১), একই এলাকার জেএমবির সদস্য ইছাহাক আলী (২৫), বগুড়ার গাবতলী এলাকার জেএমবির সদস্য লিটন মিয়া ওরফে রফিক (২৩), পীরগাছার কালীগঞ্জ বাজারের জেএমবির সদস্য আবু সাঈদ (২৮) এবং গাইবান্ধার সাঘাটার হলদিয়ার চর এলাকার সাখাওয়াত হোসেন (৩২)।পলাতক এক আসামি হলেন কুড়িগ্রামের রাজারহাটের মকর রাজমাল্লী এলাকার আহসান উল্লাহ আনসারি ওরফে বিপ্লব (২৪)।এ মামলার অভিযুক্ত আসামি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের গজপুরি এলাকার নজরুল ইসলাম ওরফে হাসান ওরফে বাইক হাসান (২৮) রাজশাহীতে এবং কুড়িগ্রামের রাজারহাটের চর বিদ্যানন্দ এলাকার সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল ওরফে চঞ্চল ওরফে সবুজ ওরফে রবি (২১) ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কাচু আলুটারি গ্রামে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই দিনই কাউনিয়া থানার তৎকালীন ওসি রেজাউল করিম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার বর্তমান ওসি আবদুল কাদের জিলানী গত বছরের ৩ জুলাই নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) আট সদস্যের বিরুদ্ধে রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।