গমের ব্লাস্ট রোগের উপর এক সেমিনার সোমবার গাজীপুরস্থিত বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটে (বারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ উদ্ভিদ রোগবিজ্ঞান সমিতি আয়োজিত সেমিনারে বারি’র মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ড. আবুল কালাম আযাদ বলেন, গত বছর থেকে গমের ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে এবং দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। এ বছরও এ রোগটির আক্রমণ দেখা গেছে। গমের ব্লাস্ট রোগের কারন Magnaporthe oryzay pathotype triticum প্যাথোজেন এর ইতিহাস খুব বেশি পুরাতন নয়। ১৯৮৫ সালে সর্বপ্রথম ব্রাজিলে দেখা যায় পরবর্তিতে তা দক্ষিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগের ছত্রাক আমাদের দেশে কিভাবে এসেছে তার সুনির্দিষ্ট কারন জানা নেই। বাস্তবতা হলো এশিয়ার মধ্যে আমাদের দেশেই প্রথম গত বছর গমের এ রোগটি দেখা দেয়। এ রোগের প্যাথোজেন চুপ করে বসে থাকে না, সে সুযোগ খুঁজে ফসলকে আক্রমণ করার জন্য। আমরা উদ্ভিদ রোগতত্ত্ববিদগণও বসে থাকতে পারি না। আমাদের নতুন নতুন রোগ দমন ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণা ও সম্প্রসারণ করার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

বাংলাদেশ উদ্ভিদ রোগবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি ও ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. ইসমাইল হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বারি’র দিনাজপুরের গম গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. পরিতোষ কুমার মালাকার। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোঃ তোফাজ্জল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল মনসুর। সেমিনারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠাণের বিজ্ঞানী ও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে বিজ্ঞানীরা জানান, বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল ও ভোলা জেলায় এ রোগের আক্রমণ পরিলক্ষিত হয় যা মোট গম আবাদী জমির প্রায় ৩%। আক্রান্ত গম ক্ষেতের ফলন শতকরা ২৫-৩০ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে এ রোগের কারণে ক্ষেতের সম্পূর্ণ ফসল বিনষ্ট হতে পারে। এ বছরও এ রোগটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা গেছে। এ রোগ দমনের জন্য প্রতি ৫ শতাংশ জমিতে ৬ (ছয়) গ্রাম নাটিভো ৭৫ ডব্লিউ জি অথবা নভিটা ৭৫ ডব্লিউ জি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ভালভাবে ¯েপ্র করতে হবে। ¯েপ্র করলে গমের পাতা ঝলসানো রোগ, বীজের কালো দাগ রোগ এবং মরিচা রোগ ইত্যাদিও দমন হবে।
###
মোস্তাফিজুর রহমান টিটু
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।