জঙ্গিবাদ একটি আন্তর্জাতিক সমস্যাÑ জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করছে, তথ্য আদানপ্রদানের মাধ্যমে যেকোনো অপরাধ দমনে অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা বাড়াতে বিশ্বের ১৪টি দেশের পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে শুরু হওয়া চিফস অব পুলিশ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

ইন্টারপোলের সদস্য ১৯০টি দেশেই জঙ্গি রয়েছে তাই জঙ্গিবাদ দমনে তথ্য আদান-প্রদানসহ একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিবের। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, সব দেশের সহযোগিতায় বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা হবে।জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে ১৪টি দেশের পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে শুরু হওয়া চিফস অব পুলিশ সম্মেলন এসব কথা বলেন তারা।এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। তিন দিন ব্যাপী এ সম্মেলনে ১৪টি কর্ম অধিবেশনে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মানব পাচার, মাদক, অস্ত্র চোরাচালান ইত্যাদি বিষয়ে আলোচন হবে। সম্মেলনে মোট ৫৮ জন বিদেশি উপস্থিত রয়েছেন।সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

এ সময় তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করছে।তথ্য আদানপ্রদানের মাধ্যমে যেকোনো অপরাধ দমনে অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ জানান তিনি।এরপর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক ও ইন্টারপোলের মহাসচিব জুরগান স্টোক।আইজিপি বলেন, জঙ্গি দমনে পুলিশের দক্ষতা বাড়াতে বিভিন্ন দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার বিকল্প নেই।ইন্টারপোলের মহাসচিব জুরগান স্টোক বলেন, জঙ্গিবাদ বিশ্বের দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস ঠেকাতে সব দেশেরই উচিত হবে এক সঙ্গে কাজ করা।এই সম্মেলন চলবে ১৪ তারিখ পর্যন্ত। জানা গেছে, সম্মেলনের বাইরেও কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবে বাংলাদেশ। স্বাক্ষর হতে পারে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক।

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসসহ আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনে ঢাকায় বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের তিন দিনের সম্মেলন শুরু হয়।ইন্টারপোল মহাসচিব ইউরগেন স্টক এবং আফগানিস্তান, শ্রীলংকা, মিয়ানমার ও মালোয়েশিয়ার পুলিশ প্রধানসহ মোট ৫৮ জন বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন এ সম্মেলনে।প্রথম দিনের প্রথম অধিবেশন শেষে বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান একেএম শহীদুল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আন্তঃদেশীয় অপরাধ ও সন্ত্রাস দমনে অভিজ্ঞতা ও তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে এ সম্মেলনে একটি সমন্বিত কৌশল প্রণয়ন করা হবে। এছাড়া পুলিশ প্রধানদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হবে।

দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে পেশাগত ও কৌশলগত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা এবং দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতা নিশ্চিতকরাও এ সম্মেলনের লক্ষ্য।আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনেই, চীন,ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, মালোয়েশিয়া, মিয়ানমার,নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়া,শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনাম এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে।এছাড়া ইন্টারপোল, ফেইসবুক, যুক্তরাষ্ট্রের আইজিসিআই, এফবিআই, আসিয়ানপোল ও আইসিআইটিএপিসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারাও যোগ দিয়েছেন সম্মেলনে।এ আয়োজনে মোট ১৪টি কর্ম অধিবেশনে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক আলোচনা হবে। জঙ্গিবাদ দমন, মানবপাচার, অর্থনৈতিক অপরাধ, সন্ত্রাসী অর্থায়ন, মাদকদ্রব্য পাচার রোধ, অবৈধ অস্ত্র চোরাচালান প্রতিরোধ, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় এবং সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের মত বিষয়ও রয়েছে এর মধ্যে।সম্মেলনের শেষ দিন জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনসহ আন্তঃদেশীয় অপরাধ প্রতিরোধের কর্মপন্থা নির্ধারণ করে যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করবেন অংশ নেওয়া দেশের প্রতিনিধিরা।