এটিএম কার্ড জালিয়াতির অভিযোগে ১১ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ১১ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১০-এর একটি দল। এঁরা হলেন জালাল হোসেন (২৭), শাহ আজিজ (৩৬), নুরে আলম (৪৫), মো. রানা (২৪), জহিরুল ইসলাম (৩৭), লুৎফর রহমান (৪২), মো. পারভেজ (২৩), ওয়াহেদ (২০), আবদুল আলী (৪০), জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫) ও কামরুজ্জামান (৩০)। এঁদের কাছ থেকে বিশেষ ধরনের প্রিন্টার, বিভিন্ন ব্যাংকের ২০০টি এটিএম কার্ড ও এক হাজার ব্ল্যাঙ্ক এটিএম কার্ড, কার্ড পাঞ্চ করার ছয়টি মেশিনসহ এটিএম কার্ড তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

বুধবার দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এটিএম কার্ড জালিয়াতির এই চক্রের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ শাহ আজিজ দীর্ঘদিন দুবাইয়ে ছিলেন। দুবাই থাকার সময় এরিন লিমো নামে যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। লিমোর কাছ থেকে আজিজ আন্তর্জাতিক কার্ড জালিয়াতির কৌশল শেখেন। এরপর ১০ বছর ধরে তিনি কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।

এ পর্যন্ত এই চক্রটি ছয় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন জানিয়ে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আজিজকে এ দেশে সোহেল, জালাল, জহির, লুৎফর, নুরে আলম, কামরুজ্জামান ও রানা কার্ড জালিয়াতিতে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে থাকেন। ২০১৬ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে বেশ কয়েকজন সহযোগীসহ সুমন গ্রেপ্তার হন। তাঁরা এ পর্যন্ত প্রায় ছয় কোটি টাকা কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী তাদের সদস্যরা বিদেশিদের আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড হ্যাক করতেন। হ্যাকিং করা কার্ড নম্বর বাংলাদেশে অবস্থানকারী চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে পাঠাতেন। এখানে তারা কম্পিউটারে প্রোগ্রামিং মাধ্যমে হ্যাকিং করা কার্ড নম্বর ব্ল্যাঙ্ক কার্ডগুলোতে যুক্ত করে ব্যবহার করতেন। তবে তাঁরা টাকা বুথ থেকে তুলতেন না। বড় বড় শপিং মলের কিছু ব্যবসায়ীর দোকান-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যাংকের রাখা কার্ড পাঞ্চ করার মেশিনে ব্যবহার ও লেনদেন করে থাকেন।

এদিকে,অবৈধ ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল) প্রযুক্তি ব্যবহারের অভিযোগে চট্টগ্রাম থেকে ৬ হাজার ৬৪টি সিম জব্দ করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার তাহেরাবাদ আবাসিক এলাকায় র‌্যাব-৭ ও বিটিআরসির এক যৌথ অভিযানে এসব সিম জব্দ করা হয়। এ সময় আটক করা হয় তিনজনকে।বিটিআরসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বুধবার এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, জব্দ করা সিমের মধ্যে টেলিটকের ২ হাজার ৯৯৮টি, গ্রামীণফোনের ১ হাজার ৪১৪টি, রবির ৭৮২টি, এয়ারটেলের ৫৭০টি ও বাংলালিংকের ৩২০টি সিম রয়েছে।অভিযানের সময় অবৈধ ভিওআইপি কাজে ব্যবহার করা ৪০ লাখ টাকা সমমূল্যের যন্ত্রপাতিও জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে সিম পোর্ট, ল্যাপটপসহ বেশ কিছু বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি।এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানায় টেলিযোগাযোগ আইনে একটি মামলা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি বিটিআরসি।