কুলভূষণ যাদবকে ফাঁসি দেওয়া হলে ফল কী হতে পারে, সে কথা ভেবে নিয়েই যেন এগোয় পাকিস্তান। এই ভাষাতেই হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন কর্মীর বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগ তুলে সে দেশের সেনা আদালত যে ভাবে ওই ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে, তার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই সরগরম সংসদ। বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সংসদের দুই কক্ষেই বিবৃতি দিয়েছেন। কুলভূষণ যাদবের প্রাণদণ্ডের রায় কোনও ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

শুধু সরকার নয়, পাকিস্তানের নিন্দায় এ দিন সকাল থেকেই সরব কংগ্রেস-সহ সবক’টি বিরোধী দল। যে কোনও মূল্যে প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর ফাঁসি আটকানোর দাবি তুলেছেন বিরোধীরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানিয়েছেন, ফাঁসি রুখতে যত দূর যাওয়ার সম্ভব, তত দূরই যাবে ভারত সরকার। রাজনাথ বলেছেন, ‘‘ভারত এই প্রাণদণ্ডের রায়ের কঠোর নিন্দা করছে। আইন ও বিচারের বুনিয়াদি রীতিনীতিগুলিও মানা হয়নি। আমি সংসদকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, কুলভূষণ যাদব যাতে বিচার পান, তা নিশ্চিত করতে যা কিছু করা দরকার, সরকার তাই করবে।’’

রাজনাথের বিবৃতির আগেই কংগ্রেস লোকসভায় বিষয়টি উত্থাপন করেছিল। কংগ্রেসের লোকসভার নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘‘যদি পাকিস্তান কুলভূষণ যাদবকে ফাঁসি দিয়ে দেয়, তা হলে সেটা একটা খুন হবে। সরকার যদি তাঁকে মুক্ত করতে না পারে, তা হলে প্রমাণিত হবে সরকার দুর্বল।’’ হায়দরাবাদের সাংসদ তথা এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসিও কুলভূষণ যাদবের ফাঁসির আদেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘সরকারের প্রভাব রয়েছে, প্রভাব খাটানো হোক। …কুলভূষণ যাদবকে রক্ষা করা আমাদের যৌথ দায়বদ্ধতা।’’
২০১৬-র মার্চে কুলভূষণ যাদবকে বালুচিস্তান থেকে গ্রেফতার করেছিল পাকিস্তান। ভারতীয় নৌসেনার এই প্রাক্তন কর্মী চরবৃত্তি করতে পাকিস্তানে ঢুকেছিলেন এবং তিনি বালুচিস্তানে নাশকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে পাক সেনার দাবি। ভারত বার বার জানিয়েছে, কুলভূষণ যাদব গুপ্তচর নন। পাকিস্তানের সেনা আদালতে যখন তাঁর বিচার চলছিল, তখন ভারতীয় হাইকমিশন বার বার তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু সেই কূটনৈতিক অনুমতিও দেওয়া হয়নি। কুলভূষণ যাদব গুপ্তচরবৃত্তির কথা স্বীকার করেছেন বলে যে দাবি পাকিস্তান করেছে, তাও ভুয়ো বলে ভারতের দাবি। কিন্তু গতকাল পাকিস্তানের সেনা আদালত কুলভূষণ যাদবের ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছে।