স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশই জিতেছে। ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে ফেভারিট নিউজিল্যান্ডকে পাঁচ উইকেটে সহজেই হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জিতে দারুণ একটি ইতিহাস গড়েছে লাল-সবুজের দল। আইসিসির ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ে প্রথমবারের মতো ছয়ে উঠে গেছে বাংলাদেশ। এই সাফল্যে ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের। এই ম্যাচটি খেলতে নামার আগে ৯১ রেটিং পয়েন্ট র‍্যাংকিংয়ে সাতে ছিল বাংলাদেশের অবস্থান। এই জয়ের সুবাদে রেটিং পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৯৩। তাই র‍্যাংকিংয়েও উন্নতি হয়েছে। শ্রীলঙ্কারও পয়েন্টও সমান। কিন্তু রেটিং পয়েন্টের ভগ্নাংশের ব্যবধানে পিছিয়ে সাত নম্বরে চলে গেছে ১৯৯৬ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইসিসির ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ে সেরা আটের মধ্যে থাকলেই ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলা নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের। অবশ্য আাইসিসির ওয়েবসাইটে র‍্যাংকিংয়ের এখনো হালনাগাদ হয়নি। খুব শিগগিরই এর পরিবর্তন হবে। এদিনের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের ছুড়ে দেওয়া ২৭০ রানের জবাবে বাংলাদেশকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। পাঁচ উইকেট হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে তারা।

ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ ৭২ রানের দারুণ জুটি গড়ে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। মুশফিক ৪৫ ও মাহমুদউল্লাহ ৪৬ রানের দারুণ দুটি ইনিংস খেলে দলের জয়টাকে একরকম সহজ করে দেন। এর আগে তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান দুজনে দারুণ দুটি হাফ সেঞ্চুরি করে দলের জয়ের ভীত গড়ে দেন। দুজনেই ৬৫ রান করে নেন ঝুলিতে।

আজ কিউইদের হারাতে পারলে ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ের রেটিং পয়েন্ট বাড়িয়ে নিতে পারবে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে আছে বিদেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে জয়ের হাতছানি ছিল। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বাংলাদেশের। ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে কিউইদের পাঁচ উইকেটে হারিয়েছে মাশরাফি-সাকিবরা।

অবশ্য ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। শুরুতেই ওপেনার সৌম্য সরকারের উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় লাল-সবুজের দল। বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল তখন মাত্র ৭ রান। জিতেন প্যাটেলের বলে কোরে অ্যান্ডারসনের হাতে ধরা পড়েন সৌম্য সরকার। রানের খাতাই খুলতে পারেননি টাইগার ওপেনার।

এরপরই অবশ্য দারুণ প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান জুটি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৩৬ রান যোগ করেন এই দুজন। একটা সময় মনে হচ্ছিল ম্যাচটা বেশ সহজেই জিতে যাবে বাংলাদেশ। তবে দলীয় ১৪৩ রানে স্যান্টনারের বলে আউট হন তামিম ইকবাল। ৮০ বলে ৬৫ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৫ রানের ব্যবধানে ভুল বোঝাবুঝিরে শিকার হয়ে রান আউট হন সাব্বির রহমান। এরপর দলীয় ১৬০ রানে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও ফিরে যান সাজঘরে। জিতেন প্যাটেলের বলে লেগ বিফোর হওয়ার আগে মাত্র ১০ রান করেন এই অলরাউন্ডার।

এরপর বড় শট খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে আসেন সাকিব আল হাসানও। ৩২ বলে ১৯ রান করেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। এর আগে ডাবলিনে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে অধিনায়ক টম ল্যাথাম, নেইল ব্রুম ও রস টেলরের হাফ সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ২৭০ রান করে কিউইরা। আজ শুরুতেই লুক রনকিকে হারালেও অধিনায়ক টম ল্যাথাম ও নেইল ব্রুমের ব্যাটে বড় সংগ্রহের পথেই এগোচ্ছিল নিউজিল্যান্ড। একটা সময় মনে হচ্ছিল কিউইদের রানটা ৩০০ পেরিয়ে যাবে। তবে রানের চাকাটা টেনে ধরেন বাংলাদেশের বোলাররা। টম ল্যাথাম ও নেইল ব্রুমকে ফেরান নাসির হোসেন। এরপর মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসান মিলে নিউজিল্যান্ডের মিডল অর্ডারটা গুঁড়িয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৭০ রানেই কিউইদের বেঁধে ফেলে বাংলাদেশ।