রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব এবং নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি আশা করি আপনারা (জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অংশগ্রহণারী সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্য) আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জাতীয় পতাকা সমুন্নত রাখার মাধ্যমে শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করে যাবেন।রাষ্ট্রপতি সোমবার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের আন্তর্জাতিক দিবসের অনুষ্ঠানে ভাষণ প্রদান করেন।

শুরুতে রাষ্ট্রপতি শান্তিরক্ষা বাহিনীতে দায়িত্ব পালনকালে শহীদ বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং আহতদের প্রতি যথাযথ সম্মান জানান। ১৯৭৪ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রত্যয়ে ধ্বনিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, তখন থেকে বাংলাদেশ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।রাষ্ট্রপতি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন যে, বাংলাদেশ বিশ্বে শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে এবং শান্তিরক্ষীরা শুরু থেকে তাদের সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, সাহসিকতা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে আস্থা অর্জন করেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, শান্তিরক্ষীরা দেশের অর্থনীতি এবং দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় কূটনীতি সম্প্রসারণে অনেক অবদান রাখছে।বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে বেশি সেনা প্রেরণকারী দেশ এবং এতে নারী শান্তিরক্ষাকারীদের অংশগ্রহণও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।রাষ্ট্রপতি শান্তিরক্ষা মিশনে নারী সদস্যের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, তারা সংশ্লিষ্ট দেশে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা, নারী পুলিশকে সহায়তা এবং নারীর ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখতে পারে।

বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের শক্তিশালী অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার বিভিন্ন দেশের পরিবেশের উপযোগী এবং আধুনিক সমরাস্ত্র ও তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞানসমৃদ্ধ শান্তিরক্ষী প্রেরণ করছে।রাষ্ট্রপতি মিশনে দায়িত্বপালনকালে শহীদ দুই জন ও ৮ জন আহত শান্তিরক্ষীকে পদক প্রদান করেন। পরে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৪ দেশের শান্তিরক্ষীর সঙ্গে কথা বলেন।মন্ত্রীবর্গ, ডেপুটি স্পিকার, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক, কূটনীতিক, তিন বাহিনী প্রধানগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ ও মহা পুলিশ পরিদর্শক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।