গাজীপুরের শ্রীপুরে ঘুষ না দিয়ে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ঘর মেরামতকে কেন্দ্র করে সোমবার বিকেলে বনকর্মীদের সঙ্গে গ্রামবাসীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বনকর্মী এবং মহিলা ও শিশুসহ অন্ততঃ ১৫ জন আহত হয়েছে। এসময় বনকর্মীদের দু’টি মোটর সাইকেল ভাংচুর হয়েছে।

এলাকাবাসি জানায়, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের গাড়ারন (খলারটেক) গ্রামের বনের জমিতে দীর্ঘদিন ধরে ঘর নির্মাণ করে স্বপরিবারে বসবাস করছে হকার আব্দুস সালাম। সে বিভিন্নস্থানে ঘুরে ঘুরে দাঁতের মাজন ও ঔষধ বিক্রি করে সংসারের খরচ যোগায়। সম্প্রতি কালবৈশাখীর ঝড়ে তার ঘরটি বিধ্বস্ত হয়। সোমবার ক্ষতিগ্রস্থ ঘরের মেরামত কাজ শুরু করে সালাম। খবর পেয়ে বন প্রহরীরা সেখানে গিয়ে মেরামত কাজে বাধা দেয় এবং সালামের কাছে ঘুষ দাবী করে। সালাম তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বন কর্মীরা তার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যায়। এঘটনার পর বিকেলে শ্রীপুর সদর বিট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে বনকর্মীরা আব্দুস সালামের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে ভাংচুর করে। এসময় বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে বনকর্মীর হামলায় হকার সালামের স্ত্রী পারুল আহত হয়। এতে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে বনকর্মীদের উপর চড়াও হলে দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে আব্দুস সালামের স্ত্রী পারুল আক্তার, তার পুত্র আলামিন, শমসেরের কন্যা নিপা আক্তার, নুরুল ইসলামের স্ত্রী রাজিয়া, সুমনের স্ত্রী লিজা আক্তার, মাফুজের স্ত্রী স্মৃতি আক্তার, মহর আলীর মেয়ে জুলেখা এবং বন বিভাগের সদর বিট অফিসার রফিকুল ইসলাম, বন প্রহরী আনোয়ার হোসেন, আজাহারুল হক, সাজেদুর রহমান ও শংকর বীরসহ উভয়পক্ষের অন্ততঃ ১৫ জন আহত হয়। এ সময় উত্তেজিত এলাকাবাসী বন কর্মীদের দুটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। খবর পেয়ে শ্রীপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

সালাম ও তার স্ত্রী পারুল জানায়, বনকর্মীরা ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করে। ওই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বনকর্মীরা বাড়িতে এসে হামলা চালিয়ে লোকজনকে মারধর ও বাড়ি ভাংচুর করে। এতে স্থানীয় অন্ততঃ ৯ জন আহত হয়।

অপরদিকে বনবিভাগের সদর বিট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ঘুষ দাবীর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সরকারী বনভূমি রক্ষা করতে গিয়েই তারা হামলার স্বীকার হন।

শ্রীপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হোসেন জানান, সরকারি বনভূমি দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করছে এমন খবর পেয়ে বনকর্মীরা সেখানে উচ্ছেদের জন্য যায়। এসময় স্থানীয় আইন উদ্দিন ও আহসান উল্লার নেতেৃত্বে একদল উচ্ছংৃখল গ্রামবাসী দা-লাঠি নিয়ে অতর্কিতে বনকর্মীদের উপর হামলা চালায়। হামলায় শ্রীপুর সদর উপজেলা বিট কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, বনপ্রহরী আনোয়ার হোসেন, সাজেদুর রহমান ও আজহারুল ইসলাম ও শংকর বীর আহত হন। এসময় তারা বনবিভাগের দুটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করেছে। আহতদের মধ্যে বন প্রহরী আনোয়ার হোসেন, সাজেদুর রহমান ও আজহারুল ইসলামকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।