যশোরে ঘোপ নওয়াপাড়া রোডে মসজিদপাড়ায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সোয়াটের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার রাত ১০টা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জানা গেছে, ওই বাড়িটির মালিক যশোর জিলা স্কুলের শিক্ষক হায়দার আলীর শ্বশুর। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার স্ত্রী ইসমত আরা বাবলী। তারা তিন বোন। পৈত্রিক সূত্রে ওই ভবনের একটি করে ফ্লোর পেয়েছেন তারা। আমার স্ত্রী ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় দুটি ফ্ল্যাট পেয়েছেন। আর ভবনের নিচ তলা ফাঁকা আছে। আমাদের ফ্ল্যাটগুলোতে দুটি পরিবার ভাড়া থাকে। আমি পাশে আরেকটি বাড়িতে ভাড়া থাকি। রবিবার ভোর চারটার দিকে আমি এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারি রবিবার রাত ১০টা থেকে বাড়িটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। খবর পেয়ে চলে আসি। কিন্তু আমাকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।’ যশোরে জঙ্গি আস্তানার পাশে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, ‘ধারণা করছি বাসার পশ্চিম পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া মশিয়ার রহমান ও তার পরিবারকে সন্দেহ করা হচ্ছে। মশিয়ার রহমানের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তিনি একটি হারবাল কোম্পানিতে চাকরি করেন। তিন সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে বাসা ভাড়া করে গত একবছর ধরে এ বাসায় থাকেন মশিয়ার রহমান।’

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাইমুর রহমান (ক সার্কেল) সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সোয়াটের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়েছে। তাদের ধারণা এই বাড়িতে কয়েকজন জঙ্গি অবস্থান করেছে। যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি কেএম আজমল হুদা জানান, সোমবার ভোর পাঁচটার দিকে এএসপি মাহবুবের নেতৃত্বে সোয়াটের একটি টিম যশোরে এসে পৌঁছেছে। টিমটি ইতোমধ্যে ওই এলাকা পরিদর্শনও করেছে। যে কোনো সময় অভিযান শুরু হতে পারে। যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, জঙ্গিদের প্রথমে আত্মসমর্পনের আহবান জানানো হবে। তারা যদি আত্মসমর্পন না করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। রোববার রাত থেকে ওই বাড়ি ও আশপাশের এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। নিরাপত্তার স্বার্থে ওই এলাকায় জনসাধারণ বা সাংবাদিক কাউকেই ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। ‘তিনতলা বাড়িটির নীচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে। তবে কতজন আছে তা এখনও জানা যায়নি। বাড়িটির অন্যান্য ফ্লাটের বাসিন্দাদের অন্যত্র নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একটি সূত্র বলছে, নব্য জেএমবি নেতা মারজানের সহযোগী মশিউর রহমান ওই বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে অবস্থান করছেন-এমন তথ্য রয়েছে তাদের কাছে। তবে এ বিষয়ে পুলিশ এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করেনি।
জানতে চাইলে এসপি আনিসুর রহমান বলেন, কে বা কয়জন আছে তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে এটি একটি জঙ্গি আস্তানা। সোমবার ১০টা ১৪ মিনিটে সোয়াত টিমের একটি গাড়ি গলির ভেতর প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এছাড়া একটি অ্যাম্বুলেন্স পুলিশ হাসপাতালের সামনের রাস্তায় রাখা আছে।

১১টা ৩৪ মিনিট

যশোরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডে জামে মসজিদের পেছনের একটি চারতলা বাড়ির আস্তানায় জঙ্গি মারজানের বোন খাদিজা থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহমেদ। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।দিদার আহমেদ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ওই ভবনের পশ্চিম পাশের ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন মশিয়ার রহমান। তার স্ত্রীর নাম খাদিজা। তিনি মারজানের বোন বলে শোনা যাচ্ছে।’