কক্সবাজারের টেকনাফে এক ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে ১৭ লাখ টাকা আদায়ের ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শকসহ সাত জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার (২৫ অক্টোবর) ভোরে মুক্তিপণের ১৭ লাখ টাকা নিয়ে একটি মাইক্রোবাসে কক্সবাজারে যাওয়ার পথে সেনাবাহিনী সাত পুলিশকে আটক করে। এ সময় ডিবি পুলিশের এক এসআই পালিয়ে যায়। উদ্ধার করা টাকা ওই ব্যবসায়ীকে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটকরা এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

আটকদের মধ্যে রয়েছেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াসিন আরফাত, এসআই আবুল কালাম আজাদ, গোলাম মোস্তফা, ফিরোজ আহমদ, এএসআই নুরুজামান, সিপাহী মোস্তফা আলমসহ সাত জন।

ওসি মনিরুল জানান, টেকনাফের মধ্যম জালিয়া পাড়ার ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে কক্সবাজার শহর থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আগে টাকা দিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। টাকা নিয়ে একটি মাইক্রোবাসে সাত জন পুলিশ বুধবার ভোরে কক্সবাজারের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় মেরিন ড্রাইভ সড়কের শাপলাপুর এলাকায় সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে মাইক্রোবাসটি আটকে রেখে মুক্তিপণের ওই ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। ডিবি পুলিশের এসআই মনিরুজ্জামান দৌড়ে পালিয়ে গেলেও অপর সাত জনকে আটক করা হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে র‌্যাব, পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের কক্সবাজারে নিয়ে আসা হয়।

ব্যবসায়ী আবদুল গফুর জানান, মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের থানা রোডে আল গনি রেস্তোরাঁ থেকে খাবার খেয়ে বের হওয়ার সময় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। তাকে একটি বাড়িতে আটকে রেখে রাত পর্যন্ত নির্যাতন চালানো হয়। এরপর রাত আড়াইটার দিকে তাকে মাইক্রোবাসে করে মেরিন ড্রাইভে নিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এ সময় ডিবি পুলিশ তার কাছে এক কোটি টাকা দাবি করে। প্রাণ বাঁচাতে তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মোবাইলে আলাপ করে ১৭ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। বুধবার ভোরে টাকা দেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

আবদুল গফুরের ভাই টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান জানান, তার ভাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে টাকা দাবির বিষয়টি শুরু থেকে সেনাবাহিনীকে জানানো হয়। টাকা দিয়ে ভাইকে মুক্ত করার পর সেনাবাহিনী ওই টাকা উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।