কমনওয়েলথভুক্ত দেশসমূহের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের সম্পর্ক বৃদ্ধিতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মতো সিপিএভুক্ত দেশগুলোর ভিসা পদ্ধতি সহজতর করার সুপারিশ করা হয়েছে সিপিসি সম্মেলনে।সোমবার (০৬ নভেম্বর)বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে সিপিসি সম্মেলন-২০১৭ এর ৬ষ্ঠ দিনে ৪টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে গ্র“প ‘বি’ তে কমনওয়েলথ দেশসমূহের মধ্যে সম্পর্ক শক্তিশালী করার জন্য সংসদ সদস্যদের ভূমিকা; বিষয়: বাণিজ্য, ভিসা সমস্যা, ভ্রমণ ও ট্যারিফ বিধিনিষেধ’ শীর্ষক কর্মশালায় ওই সুপারিশ করা হয়।

কানাডার প্রতিনিধি আলেকজান্দ্রা মেন্ডেজের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মূল আলোচক ছিলেন, নাইজেরিয়ান সিনেটর ইকে ই বেরেমাদু। এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন যুক্তরাজ্যের লর্ড ডেভিস ও গায়ানার জোসেফ এফ হারমান। আলোচনায় তারা সিপিএ’র নির্বাহী কমিটির কাছে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন। এসবের মধ্যে আছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মতো কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো ভিসা পদ্ধতি, ট্যারিফ বিধিনিষেধ সহজীকরণ, বাণিজ্য উন্নয়ন এবং আগ্রহী সবাই যাতে এক হয়ে কাজ করে সেজন্য প্রস্তাব পেশ করেন তারা। তারা মনে করেন প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে এক হয়ে কাজ করার বিকল্প নেই। এজন্যই সিপিএভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভাব এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করতে হবে। ‘কমনওয়েলথ দেশসমূহের মধ্যে সম্পর্ক শক্তিশালী করার জন্য আইন প্রণেতাদের ভূমিকা; বাণিজ্য, ভিসা সমস্যা ও ট্যারিফ বিধিনিষেধ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় সোমবার এই সুপারিশ করা হয়।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় মূল আলোচক ছিলেন নাইজেরিয়ার সিনেটর ইকে ই বেরেমাদু, যুক্তরাজ্যের লর্ড ডেভিস এবং গায়ানার জোসেফ এফ হারমান। সঞ্চালক ছিলেন কানাডার এমপি আলেকজান্দ্রা মেন্ডেজ।পরে সিপিসির মিডিয়া উইং থেকে জানানো হয়, কর্মশালায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে অভিন্ন ভিসা পদ্ধতি, বাণিজ্য উন্নয়ন, ট্যারিফ বিধি নিষেধ সহজীকরণ এবং অভিন্ন স্বার্থে এক হয়ে কাজ করার সুপারিশ করা হয়।কর্মশালায় আরও বলা হয়, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর টিকে থাকতে হলে দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।সিপিসি মিডিয়া তত্ত্বাবধান কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশের সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম বলেন, কর্মশালায় যেসব সুপারিশ এসেছে সেগুলো সিপিএ’র জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে যাবে। অ্যাসেম্বলি মনে করলে সেটি রেজ্যুলেশন হিসেবে গ্রহণ করা হবে।সিপিসিতে প্রস্তাব পাস হওয়ার পর সদস্যভুক্ত দেশগুলো তাদের নিজ নিজ দেশে বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে।রোববার ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ৫৩তম সিপিএ কনফারেন্স। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সংসদীয় ফোরাম সিপিএ’র ৫২টি দেশের মধ্যে ৪৪টি দেশ, ১৮০টি শাখার মধ্যে ১১৪টি শাখা এবারের সম্মেলনে অংশ নিয়েছে।

এসব দেশের জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদের ৫৬ জন স্পিকার, ২৩ জন ডেপুটি স্পিকার এবং সংসদ সদস্যসহ সাড়ে পাঁচশর মতো প্রতিনিধি এ সম্মেলন উপলক্ষে অবস্থান করছেন ঢাকায়। সিপিএ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়েরে ওপর কর্মশালায় যেসব সুপারিশ আসবে, সেগুলো সাধারণ অধিবেশনে উঠবে।বাংলাদেশের প্রস্তাবকৃত ‘ডেমোক্রেসি মাস্ট ডেলিভার: রোল অব পার্লামেন্ট ইন অ্যাড্রেসিং দ্যা চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক কর্মশালায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে আইন প্রণয়ন, বাজেট তৈরি, পর্যবেক্ষণ এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করতে আইন প্রণেতাদের সক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।

এই কর্মশালার সঞ্চালক ছিলেন তানভীর ইমাম। এখানে আলোচনা করেন ভারতের ছত্তিশগড়ের বিধায়ক দেবেন্দ্র বর্মা,বাংলাদেশের দীপু মনি, আলী আশরাফ, শহীদুজ্জামান সরকার ও মইন উদ্দীন খান বাদল।সুপারিশে বলা হয়, এসডিজির সঙ্গে মিলিয়ে দেশীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আইন ও বিধি প্রণয়নে আইন প্রণেতাদের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।এই কর্মশালার সঞ্চালক তানভীর ইমাম জানান, সুশাসন এবং গণতন্ত্র বিকাশে পার্লামেন্টের ভূমিকায় আরও জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণের সুপারিশও এসেছে কর্মশালায়।এছাড়া আইনসভায় লিঙ্গ, ভাষা, সংস্কৃতি, ভূমি, ধর্ম, জাতিসত্তায় বিভক্ত বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের সুপারিশ করা হয়।কমনওয়েলথ উইমেন পার্লামেন্টারিয়ানের (সিডব্লিইউপি) চেয়ারপার্সন বাংলাদেশের আইনপ্রণেতা সাগুফতা ইয়াসমিন সাবাদিকদের জানান, একটি কর্মশালায় অর্থপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে জনসংখ্যার ভিত্তিতে নারীদের বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা এমপিদের নিশ্চিতের সুপারিশ আসে। তিনি বলেন, “সিডব্লিইউপির কর্মশালায় নারী সংসদীয় দলকে ক্ষমতায়িত করার মাধ্যমে জেন্ডার সংবেদনশীল বিল প্রণয়ন এবয় জেন্ডার টেকসই বার্ষিক প্রতিবেদন সিপিএভুক্ত পার্লামেন্টগুলোতে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।এদিকে সেন্ট হেলেনা দ্বীপপুঞ্জের আইন প্রণেতা ডেরেক থমাস সাংবাদিকদের জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়েও একটি কর্মশালা সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে।তিনি বলেন, ওই কর্মশালায় ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনকে মোকাবেলা করতে সিপিএভুক্ত পার্লামেন্টগুলোতে সুনির্দিষ্ট কাঠামো নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া কার্বন নিঃসরণ কমাতে আইনগত সংস্কার ও বিধি বাস্তবায়নে পার্লামেন্টের শক্তিশালী ভূমিকা রাখার সুপারিশ করা হয়।